চতুর্থ ইনিংসে ২২০ রানের বেশি তাড়া করে জয়ে টেস্ট ইতিহাসের সর্বোচ্চ রান রেট :
- ইংল্যান্ড – ৫০ ওভারে ২৯৯/৫ – রান রেট ৫.৯৮ – ট্রেন্ট ব্রিজ- প্রতিপক্ষ নিউ জিল্যান্ড – গত মাসে
- ইংল্যান্ড- ৫৪.২ ওভারে ২৯৬/৬ – রান রেট ৫.৫৪ – হেডিংলি- প্রতিপক্ষ নিউ জিল্যান্ড – গত মাসে
চতুর্থ ইনিংসে ৩৫০ রানের বেশি তাড়া করে জয়ে টেস্ট ইতিহাসের সর্বোচ্চ রান রেট :
- ইংল্যান্ড- ৭৬.৪ ওভারে ৩৭৮/৩ – রান রেট ৪.৯৩ – এজবাস্টন – প্রতিপক্ষ ভারত – আজকে
টেস্ট ইতিহাসের প্রথম দল হিসেবে টানা চার ম্যাচে চতুর্থ ইনিংসে আড়াইশর বেশি রান তাড়া করে জয়।
ক্রিকেটে এখন এত বেশি পরিসংখ্যান আর তত্ত্ব কপচানো হয়, খেলার সত্যিকারের রস ও স্বাদ অনেক সময় হারিয়ে যায়। তবে কখনও কখনও পরিসংখ্যানই তুলে ধরে সত্যিকারের বাস্তবতা। ওপরের সংখ্যাগুলো যেমন ফুটিয়ে তুলছে ব্রেন্ডন ম্যাককালাম ও বেন স্টোকসের ইংল্যান্ড দলের মানসিকতা।
এই দলে অ্যালেক্স লিস ও জ্যাক ক্রাওলির মতো দুই ওপেনার, যাদের রেকর্ড সমৃদ্ধ নয়, আত্মবিশ্বাস পোক্ত নয়। সেই দুজন বিশাল রান তাড়ায় শুরু থেকেই পেসারদের ওপর ছড়ি ঘোরাতে থাকেন, স্পিনে রবীন্দ্র জাদেজাকে প্রথম বলেই বাউন্ডারিতে স্বাগত জানান, স্পিনের প্রথম ওভারেই বাউন্ডারি মারেন রিভার্স সুইপে। দুজনে শতরানের উদ্বোধনী জুটি গড়ে ফেলেন বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে, ইংল্যান্ডের টেস্ট ইতিহাসের দ্বিতীয় দ্রুততম শতরানের উদ্বোধনী জুটি গড়ে ফেলেন।
রাতারাতি তাদের ব্যাটিংয়ের সবকিছু বদলে গেছে? নিশ্চয়ই নয়! বদলে গেছে মাথা.. বদলেছে মানসিকতা, ভাবনার জগত। ওই ড্রেসিং রুমে এমন কিছু একটা হয়েছে যে, দুজন মাঠে নেমেছেন বিশাল কলিজা নিয়ে।
অল্প সময়ের মধ্যে তিন উইকেট হারানোর পরও এই দল পথ হারায় না, জগতের সবটুকু আত্মবিশ্বাস নিয়ে জীবনের সেরা ফর্মে থাকা দুই ব্যাটসম্যান ছোটাতে থাকেন রান রথ, দুর্দান্ত সব প্রথাগত শটের সঙ্গে রিভার্স সুইপ, রিভার্স স্কুপ… প্রতিটি শটে অবিশ্বাস্য নিয়ন্ত্রণ, প্রতিটি পদক্ষেপে দাপটের বার্তা।
ড্রেসিং রুমের হাওয়া কীভাবে ২২ গজে বয়ে যায়, সেটিরই উদাহরণ যেন।
ব্রেন্ডন ম্যাককালামের ডাক নাম ‘বাজ’-এর সঙ্গে মিলিয়ে এই মানসিকতা, এই অ্যাটিটিউডকে বলা হচ্ছে ‘বাজ-বল’।
ম্যাককালাম নিজের ক্যারিয়ারে চ্যালেঞ্জ নিতে ভয় পাননি। আক্রমণ ছাড়া অন্য কোনো ভাষা তার জানা ছিল না। ২০১০ সালে হুট করেই কিপিং ছেড়ে দিয়ে শুধু ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্ট খেলার ঘোষণা দিলেন। প্রথম সিরিজেই ভারতের মতো জায়গায় গিয়ে করলেন ডাবল সেঞ্চুরি। আরও পরে, তার ব্যাট থেকেই নিউ জিল্যান্ড পেল ইতিহাসের প্রথম ট্রিপল সেঞ্চুরি।
এরপর ১৮৮ বলে ২০২, ১৩৪ বলে ১৯৫ রানের মতো বিধ্বংসী সব ইনিংস। ক্যারিয়ারের শেষ টেস্টে ৫৪ বলে সেঞ্চুরির বিশ্বরেকর্ড….অধিনায়ক হওয়ার পর আগ্রাসী নেতৃত্বকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া…. কোচিংয়েও তার দর্শন একই থাকবে, এতে আর বিস্ময়ের কী।
যদিও মাত্রই শুরু। ‘বাজবল’-এর সামনে আরও অনেক কঠিন পরীক্ষা আসবে, অনেক সময় প্রবল চাপে পড়তে হবে, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, ভারতের মতো জায়গায় সফরে নানা চ্যালেঞ্জের মোকাবেলা করতে হবে।
তবে শুরুটা অবিশ্বাস্য। শুরুটা অসাধারণ। শুরুটা চমকপ্রদ। শুরুটা রোমাঞ্চকর। শুরুটা চোখধাঁধানো। ধাধিয়ে যাওয়া সেই চোখগুলো এখন তৃষ্ণার্ত হয়ে অপেক্ষা করবে, সামনের চ্যালেঞ্জগুলোয় ‘বাজবল’ কীভাবে বাজি জেতে!
– ফেসবুক থেকে