সময় গড়িয়েছে, বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) তাঁর আগের রূপে নেই। এ বছর তো আর সেই আসর অনুষ্ঠিতই হচ্ছে না। করোনা ভাইরাসের যুগে ক্রিকেটও পাল্টে গেছে।
আরিফুল হকও ঠিক আগের মত নেই। বিপিএলে ‘ফিনিশার’ কিংবা ‘বিগ হিটার’ হিসেবে খ্যাতি পেয়েছিলেন, সেই সুবাদে জাতীয় দলেও জায়গা পেয়েছিলেন। সব ফরম্যাটই খেলেছেন। তবে, দুই টেস্ট – এক ওয়ানডে আর নয় টি-টোয়েন্টির বেশে লম্বা হয়নি আরিফুলের ক্যারিয়ার।
নির্বাচকরা যে আশা নিয়ে তাকে জাতীয় দলের টিকেট দিয়েছিল, সেই আশা তিনি পূরণ করতে পারেননি। লোয়ার মিডল অর্ডারে বাংলাদেশ দল আজো একজন ফিনিশার, একজন বিগ হিটারের অভাববোধ করে।
এই সময়ে আরিফুলের চেহারাতেও এসেছে অনেক পরিবর্তন। তবে, ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি যখনই ফিরলো – তখন তিনি আবারো ফিরলেন স্বরূপে।
ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রান তাড়া করতে নামার পর থেকেই ব্যাকফুটে ছিল জেমকন খুলন। তারকাবহুল খুলনা দল ১৫৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারেই জোড়া উইকেট হারায়।
সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ মাঝে হাল ধরলেও সেটা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। এরপরই দৃশ্যপটে আবির্ভাব আরিফুলের। তিনি জহিরুল ইসলাম অমির সাথে মিলে ইনিংসের প্রাথমিক মেরামতের কাজটা করেন।
অমির বিদায়ের পর ক্রিজে আসেন যুব বিশ্বকাপজয়ী শামিম হোসেন। শামিম ও আরিফুল মিলে ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে যোগ করেন ৪৪ রান। এই জুটি যখন ব্যাট করছিল, তখন একটু হলেও মনে হচ্ছিল যে, জেমকন খুলনার জয়ের সম্ভাবনা আছে।
তবে, গোল বাঁধে শামিমের বিদায়ের পর। তখন, মোটামুটি পরিস্কার ছিল যে – জয় আসতে চলেছে বরিশালেরই। খুলনার পক্ষে তখন বাজি ধরার লোক ছিল না। থাকবে কি করে, আগের দুটি জুটিতেই আরিফুল যে ছিলেন পার্শ্বচরিত্র। প্রায়ই শতভাগ স্ট্রাইক রেটও ধরে রাখতে পারছিলেন না।
তবে, সকল সমীকরণ তিনি মিথ্যা প্রমাণ করলেন ইনিংসের শেষ ওভারে। তখনও জয়ের জন্য অসম্ভব এক লক্ষ্য খুলনার সামনে। এক ওভারে করতে হবে ২২ রান। তবে, সুবিধা হল পেসারদের কোটা পূরণ হয়ে যাওয়ায় তামিম স্পিনার আনতে বাধ্য হলেন।
ফলাফল, মেহেদী হাসান মিরাজের করা শেষ ওভারের প্রথম পাঁচ বলের মধ্যে চারটা ছক্কা হাঁকালেন আরিফুল। ৩৪ বলে ৪৮ রান করে অপরাজিত থেকে তিনি নিশ্চিত করলেন দলের জয়। রত্নবহুল জেমকন খুলনার রত্নাগারের সবচেয়ে অনালোচিত রত্নটিই প্রয়োজনের সময় জ্বলে উঠতে পারলেন। আবারো ‘ফিনিশার’ হয়ে ফিরলেন আরিফুল!