লা লিগায় ভাল পারফরম্যান্স, চ্যাম্পিয়ন্স লিগের হতাশা এবং মেসির ম্যাজিক বা তাঁর না জ্বলে ওঠা, ২-৩ বছর আগেও বার্সেলোনাকে নিয়ে খবর বলতে এগুলাই ছিল। এখন আর আগের সেই দিন নাই, এখন বার্সা মানেই মাঠের বাইরের গরম সব খবর।
সর্বশেষ ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ং, ক্লেমেন্ট ল্যাঙলেট, জেরার্ড পিকে এবং মার্ক আন্দ্রে টার স্টেগান সাথে ২০২০ সালে করা কন্ট্রাক্ট এক্সটেনশনকে কেন্দ্র করে তারা খবরের শিরোনামে পরিণত হয়েছে।
নতুন দলে ভেড়ানো কাউকেই বার্সা এখনো নিবন্ধিত করতে পারেনি এটা সকলের জানা, তাই সবাই অপেক্ষায় ছিল ক্লাব প্রেসিডেন্ট হুয়ান লাপোর্তা কখন আবার নতুন লেভার টানেন সেই খবরের জন্য কিন্ত তার বদলে যা জানা গেল তা ফুটবল দুনিয়ায় বোমা ফাটিয়ে দিল।
২০২০ সালে তৎকালীন বার্সেলোনা ক্লাব সভাপতি জোসেফ মারিয়া বার্তেমিউ ডি ইয়ং, পিকে, স্টেগেন এবং ল্যাঙলেটের চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি করেন। নতুন করে চুক্তি নবায়ন করতে গেলে খরচ বেড়ে যাবে তাই তিনি এই পন্থা অবলম্বন করেন।
এদিকে বর্তমান ক্লাব সভাপতি লাপোর্তা বলছেন এই চুক্তিতে তারা ‘ক্রিমিনাল’ কর্মকাণ্ডের আলামত পেয়েছেন এবং যারা এই চুক্তি সই করেছে তাদের বিরুদ্ধে মামালা করা হতে পারে। তার কথা একটাই, ‘মামলার ঝামেলায় যদি পরতে না চাও তো এই ‘এক্সটেনশন’ বাতিল করে আগের চুক্তিতে ফেরত যাও ব্যাস।’
দা অ্যাথলেটিকের সূত্র অনুযায়ী জুলাই মাসের ১৫ তারিখে এই সংক্রান্ত একটি চিঠি তাঁরা ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ংকে ইতোমধ্যে দিয়েছে। এদিকে ২০২২-২৩ মৌসুমের জন্য টটেনহামে ধারে আসা ল্যাঙলেট এবং স্টেগানের ব্যাপারে কি ব্যবস্থা নেওয়া হবে তা নিয়ে বার্সা এখনো কিছু জানায়নি। পিকে ইতোমধ্যে আগের চুক্তিতে ফিরে যেতে রাজি কিন্তু যার বেতন সবচেয়ে বেশি সেই ডি ইয়ং ক্লাবের এই মাফিয়াগিরি মানতে নারাজ।
নতুন এক্সটেনশনে তার বেতন বাড়ানো হয়। বলা হয় যে কোভিডকালীন বেতনের পাওনা টাকা প্রতি বছর কিস্তিতে তাঁকে দেওয়া হবে যার পরিমান প্রায় ১৭ মিলিয়ন ইউরো। এদিকে এই ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডারকে দলে পেতে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড বিড করলে তিনি বলেন ক্লাব ছাড়লে পাওনা পুরোটা একসাথে পরিশোধ করতে হবে, এই নিয়ে ক্লাবের সাথে তাঁর ঝামেলা বেঁধে যায়।
চতুর্থ লেভার না ব্যবহার করে স্যালারি ক্যাপের শর্ত পূরণ করতে মরিয়া বার্সার কাছে ডি ইয়ং এখন গোদের উপর বিষফোড়া। তারা চায় তাকে দল থেকে বিদায় করতে যা তাদের সাহায্য করবে কিন্তু তার সম্পূর্ণ পাওনা তারা একসাথে দিতে নারাজ, উলটো তাকে তার বর্তমান চুক্তি বাদ দিয়ে ২০১৯ য়ে বার্সায় যোগ দেওয়ার সময় তার যে চুক্তি ছিল তাতে ফেরত যেতে চাপ দিচ্ছে। ডি ইয়ং সাফ জানিয়ে দিয়েছেন বর্তমান চুক্তি তিনি বাতিল তো করবেনই না, পাওনা টাকার দাবিও ছাড়বেন না এবং তার আইনজীবীরা এই ব্যাপারে দেখছেন।
বার্সা থেকে ইউরোপা খেলা ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে যেতে যে তিনি আগ্রহি না তা প্রায় বোঝাই যাচ্ছে। আর এই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে দাও মেরে দিতে পারে চেলসি। ক্লাবটির নতুন মালিক টড বয়েলি এই ডাচ ফুটবলারকে লন্ডনের ক্লাবে নিয়ে আসতে চান এবং তার পাওনা বেতনের টাকাও তিনি নিজের পকেট থেকে দিতে চান। রোনালদো ডিলের মত এক্ষেত্রেও চেলসির ম্যানেজার টমাস টুখেল বাগড়া না দিলে স্টামফোর্ড ব্রিজে দেখা যেতে পারে ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ংকে।
শেষমেশ কোথাকার পানি কথায় গড়ায় এবং বার্সেলোনা ডি ইয়ংকে নিয়ে কি করে তা সময়ই বলে দিবে। কাতালান ক্লাবটির বক্তব্য এই মিডফিল্ডারকে তারা বিক্রে করতে চায় না কিন্তু বেতনের টাকাও তারা দেবে না, ফ্রাঙ্কি ডি ইয়ংয়ের এখন ‘ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি’ অবস্থা। সামনে বার্সা আবার কোন বোমা ফাটায় এখন সবাই এখন সেই খবরের অপেক্ষায়।