দ্য কিং কেভিন ডি ব্রুইনা

কেভিন ডি ব্রুইনা হলেন ম্যানচেস্টার সিটির ফুটবল ভক্তদের জন্য অপার আনন্দের অন্য নাম। ব্যতিক্রমী পাসিং, শ্যুটিংয়ের ক্ষমতা এবং ড্রিবলিংয়ের জন্য তিনি বিশ্বের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়দের একজন হিসাবে বিবেচিত। তাকে প্রায়শই একজন “কমপ্লিট” ফুটবলার হিসাবে বর্ণনা করা হয়।

চার বছর বয়স থেকেই ডি ব্রুইনা ফুটবল খেলা শুরু করেছিলেন। তিনি শীঘ্রই তার শহরতলীর ক্লাব কেভিভি ড্রঙ্গেনের হয়ে খেলতে শুরু করেছিলেন এবং সেখানে তার ফুটবল দক্ষতা সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল। বেলজিয়ান ক্লাব জেঙ্কের হয়ে সিনিয়র ক্যারিয়ার শুরু করে ৯৭ ম্যাচে ১৬ গোল করেছিলেন। এই ক্লাবের হয়ে বেলজিয়ান লিগ জিতেছিলেন।

এরপরে ইংলিশ ক্লাব চেলসি এবং জার্মান ক্লাব ওয়ার্ডার ব্রেমেন ও উলসবার্গের জার্সি গায়ে জড়িয়েছিলেন। সিটিতে যোগ দেওয়ার আগে উলসবার্গের হয়ে ২০১৪-১৫ মৌসুমে ডিএফবি পোকাল জিতেছিলেন। হয়েছিলেন বুন্দেসলিগার সেরা খেলোয়াড়ও। সেই ছোট্ট ফুটবল পাগল ছেলেটি এখন খেলেন নিজ দেশ বেলজিয়ামের সহ-অধিনায়ক হিসেবে। পাশাপাশি দারুণ ফুটবল নৈপুণ্যে হয়ে উঠেছেন ক্লাব ফুটবলের বাঘা দল ম্যানচেস্টার সিটির অনবদ্য অংশ। 

ফুটবল মাঠে এই মিডফিল্ডার অনন্য। তিনি যে ম্যানচেষ্টার সিটির তুরুপের তাস তা আরেকবার প্রমাণ করলেন বোর্নমাউথের বিপক্ষে ম্যাচটিতে। ডান পায়ের বাইরে দিয়ে ডি ব্রুইনার গোলটি ছিল সহজাত কিন্তু বেশ চমকপ্রদ। এএফসি বোর্নমাউথকে গতকাল ৪-০ ব্যবধানে বিধ্বস্ত করেছে ম্যানচেষ্টার সিটি। ব্রুইনা হারিয়ে গেছেন এই খবরটি যে অতিরঞ্জিত ছিল তা তিনি প্রমাণ করলেন।

এলকাই গুন্দোগান ১৯ মিনিটে একটি গোল করে ম্যানসিটিকে এগিয়ে দেয়। তারপর ঠিক ৩১ মিনিটে আসে সেই কাঙ্ক্ষিত মুহুর্তটি। গোল থেকে ত্রিশ গজ দূরে বলকে নিজের আয়ত্তে এনে, ডিফেন্ডারদের পাশ কাটিয়ে সরে গিয়ে তিনি প্রায় বাধাহীনভাবে বক্সের প্রান্তে পৌঁছে যান। ফ্ল্যাঙ্কের অপর প্রান্তে আর্লিং হাল্যান্ড অপেক্ষা করছিলেন ব্রুইনা এর কাছ থেকে ঘাতক পাসের জন্য।

কিন্তু ডি ব্রুইনা এর মাথায় অন্য উদ্দেশ্য ছিল। তিনি দুয়েকজন ডিফেন্ডারের পাশ কাটিয়ে গেলেন, থামলেন, দ্রুত চোখ দিয়ে মাঠের জরিপ করলেন। কেভিন ডি ব্রুইনা বুঝতে পারলেন যে হাল্যান্ড সম্ভবত অফসাইড পজিশনে আছেন। যেটা তিনি ছিলেন এবং তাঁর ডান পায়ের বাইরের দিক দিয়ে নিচের কোণে একটি নির্ভুল শট ঠেলে দেন। আর এতেই হয়ে যায় কাঙ্ক্ষিত আরেকটি গোল! ডি ব্রুইনা এর গোল!

এই গোলের ক্লিপটি আপনি যত বেশি দেখবেন ততই আপনার কাছে রহস্যময় মনে হবে। যদি বলটিকে ডান পায়ের বাইরে দিয়ে না পাঠিয়ে সোজা পাঠাতেন তবে গোলরক্ষক বলটিকে আটকে দিতে পারতেন কিংবা বলটি গোলপোস্টে আঘাত করে সরে যেতো। বলটিকে ডি ব্রুইনা নিখুঁত গতি দিতে সক্ষম হয়েছিলেন। তিনি বলকে ওভার হিট করেননি, কিন্তু গোলরক্ষককে এড়ানোর জন্য সঠিক পরিমাণে গতি দিয়েছেন।

পায়ের বাইরে থেকে গোল করার ঘটনা বিরল কারণ বেশিরভাগ ফুটবলার এটি ব্যবহার করার সাহস করে না। সবমিলিয়ে ডি ব্রুনাই এর গোলটি অবিশ্বাস্য ছিলো। এরপর ফিল ফোডেন ৩৭ মিনিটে একটি গোল এবং জেফারসন লের্মা ৭৯ মিনিটে আরেকটি গোল করলে ৪ গোলে দারুণ জয় পায় ম্যানচেষ্টার সিটি। আর ডি ব্রুনাই প্রমাণ করলেন তিনিই অনন্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link