মাইকেল নাইটন: রেড ডেভিলদের ত্রাণকর্তা

সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স যাই হোক না কেন ফোর্বসের তথ্যমতে এই মুহূর্তে বিশ্বের তৃতীয় দামী ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। তাঁদের মোট সম্পদমূল্য ৪৬০ কোটি ডলার। ক্লাবটির বর্তমান মালিকানা যুক্তরাষ্ট্রের গ্লেজার পরিবারের নিকটে, লম্বা সময় ধরে তাঁরাই দেখভাল করছেন ক্লাবটিকে। ২০০৫ সালে তারা ক্লাবটি কিনে নিয়েছিল। সম্প্রতি ব্রিটিশ পত্রিকা ডেইলি মেইলের খবর হল দলের ব্যর্থতার কারণে গ্লেজার পরিবার চাচ্ছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড বিক্রি করে দিতে।

এই নিয়ে বেশ কানাঘুষা শুরু হয়েছে। এইতো কদিন আগেই হঠাৎ করে ফুটবল দুনিয়ায় খবর চাউর হয়েছিল যে ধনকুবের ইলন মাস্ক ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড কিনে নিচ্ছেন। ইলন মাস্ক টুইট করে এমনটাই জানিয়ে চমকে দিয়েছিলেন নেট দুনিয়াকে। যদিও পরবর্তীতে ইলন মাস্ক ব্যাপারটিকে স্রেফ রসিকতা বলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন।

কয়েক বছর ধরেই ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের অবস্থা ভালো যাচ্ছে না। গত মৌসুমের প্রিমিয়ার লিগে ব্যর্থতার দরুণ এই মৌসুমে তারা চ্যাম্পিয়নস লিগের বাইরে। এই মৌসুমেও তাদের অবস্থা বড্ড করুণ। লিগের প্রথম দুই ম্যাচেই হেরেছে তাঁরা।

শেষ ম্যাচে তো ব্রেন্টফোর্ডের সাথে ম্যাচের প্রথম ৩৫ মিনিটে ৪ গোল খেয়ে রীতিমতো পয়েন্ট তালিকার তলানিতে ঠেকে নিজেদের সবথেকে নড়বড়ে অবস্থার প্রকাশ করেছে। প্রিয় দলের এমন ব্যর্থতায় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সমর্থকেরা এরই মধ্যে ক্লাবের ব্যবস্থাপনা বদলের দাবি তুলেছেন।

এদিকে আবার কিছুদিন আগেই সাবেক ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড পরিচালক এবং ব্রিটিশ ব্যবসায়ী মাইকেল নাইটন ক্লাবটিকে কেনার জন্য বিড করবেন বলে খবর রটে। কে এই মাইকেল নাইটন? কেন এই ক্লাবের প্রতি তাঁর এত আগ্রহ?

নাইটন ১৯৮৯ থেকে ১৯৯২ সালে তিনি ইউনাইটেড বোর্ড অব ডিরেক্টরের একটি পদে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। পরে মাইকেল নাইটন ১৯৯২ সালে ইউনাইটেডের বোর্ড থেকে পদত্যাগ করেছিলেন। পেশায় একজন ব্যবসায়ী, শিল্পী, কবি এবং রাজনৈতিক ভাষ্যকার। এই ব্যবসায়ী ১৯৮০এর দশকে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড একবার কেনার চেষ্টা করেছিলেন এবং ব্যর্থ হয়েছিলেন। তিনি ইউনাইটেডের পরিচালনা পর্ষদ থেকে বের হয়ে যাওয়ার পর কার্লাইস ইউনাইটেড কিনেছিলেন।

মাইকেল নাইটন ক্লাবটির এই প্রতিকূল পরিস্থিতিতে ক্ষমতা দখলের পরিকল্পনা করছেন বলে জানা যাচ্ছে। ৭০ বছর বয়সী ভদ্রলোক এই ক্লাবটিকে তার স্বীয় গৌরবময় দিনগুলিতে ফিরিয়ে দিতে আগ্রহী। নাইটন দাবি করেছিলেন যে রেড ডেভিলদের নতুন মালিক দরকার, কারণ গ্ল্যাজাররা ক্লাবটি ভালভাবে চালায়নি। তিনি যোগ করেছেন যে তিনি অফার নথিতে কাজ করছেন, এবং শীঘ্রই বিড জারি করা হবে।

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মতো ক্লাব, যারা একসময় ইউরোপের সেরা দল হওয়ার কাতারে ছিল তাদের এই হাল মেনেই নিতে পারছে না ভক্ত – সমর্থকরা। ক্লাবের মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে একের পর এক বিক্ষোভ হয়েছে ম্যানচেস্টারের ওল্ড ট্র্যাফোর্ডের সামনে। ম্যানচেষ্টার ইউনাইটেডের সাবেক ফুটবলার গ্যারি নেভিল বলেন, ‘মালিকপক্ষকে এখন যেটা করতে হবে সেটা হলো পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে এবং এই পতন ঠেকাতে হবে।’

এককালের শক্তিশালী এই ক্লাবটি আবার কিভাবে স্বগৌরবে ঘুরে দাঁড়াবে তা দেখার জন্য মুখিয়ে আছে সারাবিশ্বের ফুটবল ভক্তরা। হতাশার তিমিরকে পাশ কাটিয়ে, সব গ্লানি দূর করে ম্যানচেষ্টার ইউনাইটেড স্বীয় রূপে ফিরে আসুক সেই প্রত্যাশা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link