হার্দিক পান্ডিয়ার ব্যাটিং তো বরাবরই এরকম। এখন তিনি আগের চেয়ে আরও ধীরস্থির ও পরিণত। তবে গত ২-৩ মাসে মূল পার্থক্য গড়ে দিচ্ছে তার বোলিং। এবার পাকিস্তানের বিপক্ষেও কী দুর্দান্ত বোলিং করলেন!
পান্ডিয়া যখন চোটের কারণে বোলিং করতে পারছিলেন না, ভারতীয় ক্রিকেটে হাহাকার শোনা যেত প্রায়ই। কারণটা সিম্পল, এরকম একজন পেস বোলিং অলরাউন্ডার যে কোনো দলের সম্পদ। চোটের পর পান্ডিয়া আস্তে আস্তে ১-২ ওভার বোলিং শুরু করলেন, তাতেই একটু একটু করে দলে প্রভাবটা পড়তে শুরু করল। এখন তিনি পুরো বোলিং ফিট এবং বুঝিয়ে দিচ্ছেন, কেন তাঁকে এই চেহারায় পেতে এতটা মরিয়া ছিল দল।
সম্ভবত ক্যারিয়ারের সেরা বোলিং ছন্দে আছেন তিনি এখন। ১৪০ কিলোমিটার গতির আশেপাশে বোলিং করছেন নিয়মিত। তার বোলিং দেখে যতটা গতিময় মনে হয়, ব্যাটসম্যান অনুভব করেন আরেকটু বেশি গতি। কারণ বল স্কিড করে প্রায়ই। বিশেষ করে তার বাউন্সার, দারুণ এক ‘সারপ্রাইজ এলিমেন্ট’ এটি। এই বাউন্সারে ব্যাটসম্যান চমকে যায়, কারণ পিচ করে বল প্রত্যাশার বেশি গতিতে আসে।
এখন তিনি যে পর্যায়ে আছে ব্যাটে-বলে, নিজের খেলাটা তিনি খুব ভালো বোঝেন। ওই যে শেষ ওভারে দীনেশ কার্তিকের দিকে মাথা ঝুঁকিয়ে ভরসা জোগালেন যে, ‘চিন্তার কিছু নেই, আমি আছি’ – এই আত্মবিশ্বাস ও কর্তৃত্ব আসে নিজেকে খুব ভালো করে জানলেই।
ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই তিনি ‘বিগ হার্টেড’ ক্রিকেটার। এখন অভিজ্ঞতা, স্কিল, পরিণত মানসিকতা, লিডারশিপ মিলিয়ে প্রায় কমপ্লিট ক্রিকেটার হয়ে উঠছেন। তিনি ফিট থাকলে সব প্রতিপক্ষের জন্যই বড় যন্ত্রণা হতে থাকবেন, ভারতের জন্য আশীর্বাদ।
ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে মন্থর ওভার রেটের কারণে দুই দলকেই শেষ তিন ওভার ফিল্ডিং করতে হয়েছে বৃত্তের ভেতর একজন ফিল্ডার বেশি নিয়ে। প্রথম ইনিংসে যেমন-তেমন, কিন্তু পরের ইনিংসে রান ডিফেন্ড করা বা তাড়ার ক্ষেত্রে এরকম ক্লোজ ম্যাচে ওই একজন ফিল্ডার বড় প্রভাবক হয়ে ওঠে।
যারা নিয়মটা জানেন না, তাদের জন্য বলছি, গত জানুয়ারি থেকে এই নিয়ম চলছে। ইনিংসের শেষ ওভার শুরুর একটি ‘কাট-অফ টাইম’ থাকে। সেই সময়ের মধ্যে শেষ ওভার শুরু করতে না পারলে যত ওভার বাকি থাকবে, তত ওভার বৃত্তের বাইরে ফিল্ডার রাখা যাবে ৫ জনের জায়গায় সর্বোচ্চ ৪ জন।
ইন-ম্যাচ পেনাল্টির এই নিয়ম সামনেও অনেক ম্যাচের ফলে বড় ভূমিকা রাখবে বলে মনে হচ্ছে। দলগুলিকে টাইম ম্যানেজমেন্টের জন্য একজন লোক তৈরি রাখতে হবে, যিনি সময়ের ব্যাপার বারবার মনে করিয়ে দেবেন।
– ফেসবুক থেকে