হাসারাঙ্গা- উইকেটের রঙে রাঙা

একটা ম্যাচের ফলাফলে বিশ্বভ্রমাণ্ডে তেমন কোনই পরিবর্তন আসবে না। তবুও নিয়ম রক্ষার ম্যাচে ফাইনালের আগে মুখোমুখি দুই ফাইনালিস্ট। শ্রীলঙ্কা-পাকিস্তানের মধ্যকার এই ম্যাচটা তবুও একটা ভিন্ন মাহাত্ম্য রাখে। ঠিক কোন দল হবে চ্যাম্পিয়ন তাঁর একটা আভাস তো মিলবে এই ম্যাচে। তবে আভাস মিলুক বা না মিলুক, নিজেকে যেন ফিরে পেলেন ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা।

শ্রীলঙ্কার বোলিং লাইনআপের অন্যতম সেরা অস্ত্র ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে আইসিসির সেরা দশ বোলারদের একজন তিনি। তবে এবারের এশিয়া কাপে কোথায় একটা যেন হারিয়ে গিয়েছিলেন। নিজের বোলিংয়ের সেই ধারটা যেন কোন ভাবেই খুঁজে পাচ্ছিলেন না হাসারাঙ্গা। ‘সুপার ফোর’ পর্বের শেষ ম্যাচ খেলার আগে তাঁর উইকেটের ট্যালিতে কেবলমাত্র তিনটি দাগই কাটতে পেরেছিলেন তিনি।

তাঁর মত প্রতিভাবান একজন বোলারের উপর বেশ ভরসাই করে শ্রীলঙ্কা। দলের অন্যতম অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের একজনও তিনি। তবে হাসারাঙ্গার নিষ্প্রভতা নিয়ে দুশ্চিন্তায় নিশ্চয়ই ছিল লংকান শিবির। ইকোনমি রেটটাও যদিও খানিক নিয়ন্ত্রণেই ছিল। তবুও তা ক্যারিয়ারের গড় থেকে অনেকটাই বেশি। যদিও লেগব্রেক বোলাররা উইকেট শিকারি হয়ে থাকেন। তাঁরা রান আটকে রাখার দিকে খুব বেশি মনোযোগী হন না।

হাসারাঙ্গারও তাঁর থেকে ভিন্ন ছিলেন না। তবে তিনি বেশ বুদ্ধিমান। তবুও ইকনোমিক্যাল বোলিং করে যাওয়ার চেষ্টা করে গেছেন। তাতে অবশ্য লাভ হয়নি। তবে তারকা খেলোয়াড় তিনি, বাজে একটা সময় পার করছিলেন। হাসারাঙ্গারা বেশ ভাল করেই জানেন যে এমন পরিস্থিতি থেকে ঠিক কি করে নিজেকে পুনরুদ্ধার করতে হয়। সেটাই আরও একবার করে দেখালেন হাসারাঙ্গা। তবে তাঁর প্রত্যাবর্তনটা এলো একেবারে মোক্ষম সময়ে।

ফাইনালের আগের ম্যাচ। ফিরে আসার সবচেয়ে ভাল সময়। টপাটপ তিনখানা উইকেট তুলে নিলেন হাসারাঙ্গা। পুরো একটা বোলিং ইউনিট হিসেবেই শ্রীলঙ্কা এদিন দুর্দান্ত পারফরম করছে। তবুও স্বস্তির সবচেয়ে বড় জায়গাটা সম্ভবত হাসারাঙ্গার হাত আবারও উইকেটের রঙে রাঙানো। তিনি পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজমকে বোল্ড আউট করে ফিরিয়েছেন প্যাভিলনে। তাছাড়া ইফতেখার আহমেদ ও রুদ্রমূর্তি ধারণ করবার আগেই আসিফ আলীর উইকেট তুলে নেন। তিনজনকেই তিনি ফেরান বোল্ড আউট করে।

পূর্ণ কোটা শেষে তিনি খরচ করেছেন কেবলমাত্র ২৩ রান। তবে বল হাতে নিজেকে ফিরে পাওয়ার দিনে মাঠের সর্বত্রই যেন ছিল তাঁর বিচরণ। নিজে তিনটি উইকেট নিয়েছেন, অন্যদিকে একজন দুরন্ত ফিল্ডার হিসেবে আরও তিন উইকেটে শিকারে তিনি রেখেছেন অবদান। ফাইনালের আগে একজন কমপ্লিট খেলোয়াড় হিসেবে তাঁর প্রত্যাবর্তনের বাকি শুধু ব্যাট হাতে পারফরম করা।

এবারের এশিয়া কাপে ব্যাট হাতেও খুব বেশি একটা আলো কাড়তে পারেননি হাসারাঙ্গা। তাঁর ব্যাটটা জ্বলে উঠলে আখেরে লাভটা শ্রীলঙ্কার। ফাইনালের দিন ব্যাটে-বলে সমানতালে পারফরম করতেই হয়ত চাইবেন তিনি। আর্থ-সামাজিকভাবে বিদ্ধস্ত একটা দেশের অন্তত খানিকক্ষণের প্রশান্তির পরশ বুলিয়ে দিতে পারে এশিয়া কাপ শিরোপা। আর শিরোপা জয়ের জন্যে ওয়ানিন্দুর হাসারাঙ্গার অলরাউন্ড পারফরমেন্স বড্ড বেশি জরুরি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link