লিটনের চার শটেই মুগ্ধ শ্রীরাম

এক, দুই, তিন এবং চার। এবাদতের এক ওভারেই লিটনের চারটি শট। কে বলবে এই লিটন অনেকদিন পর ব্যাট হাতে নামলেন। হোক সেটা প্রস্তুতি ম্যাচ। তবুও মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে আজ লিটনের এই শটগুলো বাংলাদেশকে একটা স্বস্তি এনে দিয়েছে। ইনজুরি থেকে ফিরেও যেন সেই একইরকম ছন্দ।

বিশ্বকাপকে সামনে রেখে আজ থেকে হোম অব ক্রিকেটে শুরু হয়ে বিশেষ অনুশীলন। নতুন টি-টোয়েন্টি পরামর্শক শ্রীধরন শ্রীরামে তত্ববধানে তিন ধরে চলবে এই ক্যাম্প। জাতীয় দলের ক্রিকেটার ছাড়াও এইচপি ও বাংলাদেশ টাইগার্সের বেশ কিছু ক্রিকেটারকে নিয়ে আজ শুরু হলো এই ক্যাম্প।

তবে এই অনুশীলন অন্য সাধারণ দিনগুলোর মত নয়। ক্রিকেটাররা আজ অনুশীলন করেছেন ম্যাচ সিনারিও তৈরি করে। ম্যাচের নানা পরিস্থিতি পরিকল্পনা করে ক্রিকেটারদের সেভাবে খেলতে দেখেছেন শ্রীরাম ও খালেদ মাহমুদ সুজন। মূলত বিশ্বকাপের জন্য স্কোয়াড দেয়ার আগে লাইন আপে থাকা ক্রিকেটারদের একবার দেখে নিচ্ছেন নতুন এই কোচ। হয়তো এই অনুশীলন থেকেও মিলতে পারে বিশ্বকাপের টিকিট।

আজকের এই বিশেষ অনুশীলনে অবশ্য বৃষ্টি বাঁধা দিয়েছে একাধিকবার। প্রায় ঘন্টাখানেকের বিরতি পর আবার খেলা শুরু হলে ব্যাট করতে নামেন লিটন দাস। আর বোলিং প্রান্তে ছিলেন এবাদত হোসেন। এবাদতের সেই ওভারে মোট চারটি বাউন্ডারি আদায় করে নেন লিটন। মেরেছেন দুটি চার ও দুটি ছয়।

অনেকদিন পর ম্যাচে ব্যাট করতে নামা লিটন যেন নিজের রেখে যাওয়া জায়গাটা থেকেই শুরু করলেন। এই ব্যাটারের সামনে রীতিমত বল ফেলারই জায়গা খুঁজে পাচ্ছিলেন না এবাদত হোসেন। তবেভ লিটনের এই মুগ্ধতা ছড়ানো ব্যাটিং খুব বেশিক্ষণ দেখার সুযোগ হয়নি। সবমিলিয়ে লিটন ব্যাট করেছেন মোট সাত বল। লিটন আউট হননি, তবে এই সাত বল দেখেই লিটনকে দেখা হয়ে গিয়েছে শ্রীরামের। তিনি তাই ডেকে পাঠিয়েছেন পরের ব্যাটারকে। তাহলে কী এই চার শটেই শ্রীধরন শ্রীরামের মন জয় করে নিলেন লিটন? অবশ্য ব্যাটসম্যান লিটনকে চিনতে কারোই খুব বেশি সময় লাগার কথা না।

ফলে বোঝাই যাচ্ছে এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইন আপের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব নিতে হচ্ছে লিটনকে। যদিও সাদা বলের ক্রিকেটে এতদিন ওপেনার হিসেবেই ব্যাটিং করে যাচ্ছিলেন তিনি। তবে এবারের বিশ্বকাপে নাকি তাঁকে মিডল অর্ডারে ভাবছে বাংলাদেশ দল। যদিও এই ভাবনা এখনো খুবই প্রাথমিক পর্যায়ে।

কারণ এমনিতেই টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ওপেনার সংকটে বাংলাদেশ। আর লিটনকেও যদি সেখান থেকে সরিয়ে দেয়া হয় তাহলে ইনিংসের শুরুতেই বড় ধাক্কা খাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সেজন্যই লিটনকে মিডল অর্ডারে খেলানোর সিদ্ধান্ত নেয়াটা সহজ হবেনা বাংলাদেশের জন্য।

লিটন নিজেকে তো মাত্র সাত বলে প্রমাণ করলেনই। পাশাপাশি সাদা বলের ক্রিকেটে এখনো এবাদতের অপরিপক্কতাটাও ফুটিয়ে তুললেন লিটন। কেননা এই পেসার বারবার লিটনকে শর্ট বলই দিয়ে যাচ্ছিলেন। যেগুলো লিটন খেলছিলেন খুব স্বাচ্ছন্দেই। এবাদতও ভিন্ন কিছু চেষ্টা করেননি কিংবা পারেননি। টেস্ট স্পেশালিস্ট এবাদতের যে সাদা বলের ক্রিকেটে বৈচিত্রের ঘাটতি কতটা সেটা খুব সহজেই দেখিয়ে দিলেন লিটন দাস।

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link