একটা ছবি, তবুও যেন কত কিছু বলে দেয়। অধিনায়ক সাকিব আল হাসান কিছু একটা বলছেন। পুরো দল তাঁকে ঘেরাও করে মনোযোগী শ্রোতা। যেন সাকিবের প্রতিটি কথা মগজে গেঁথে ফেলা চাই। সাকিবের শরীরি ভাষাও যেন ভীষণ আগ্রাসী। দলের সবার থেকে বোধহয় সেরাটা চাইছেন, হারের বৃত্তে ঘুরপাক খাওয়া দলটাকে নিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে চাইছেন।
এইতো নিউজিল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ শুরু হবার আগেও সাকিবকে নিয়ে কত সমালোচনা। কেননা সিরিজ শুরুর আগে একটা প্রেকটিস সেশনেও তিনি দলের সাথে থাকতে পারেননি। টিকিট পাননি বলে দলের সাথে যোগ দিয়েছিলেন ম্যাচের ঠিক আগেরদিন। ভ্রমণক্লান্তি কাটিয়ে উঠে প্রথম ম্যাচেও মাঠে নামতে পারেননি। সেই ম্যাচে অধিনায়কত্ব করেছিলেন নুরুল হাসান সোহান।
এরপর আবার সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে নিউজিল্যান্ড ও পাকিস্তানের সাথে হেরেছে বাংলাদেশ। সবমিলিয়ে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে বাংলাদেশ দলে একটা গুমোট আবহাওয়া। অন্তত বাইরে থেকে দেখতে তাই মনে হওয়ার কথা। তবে এরই মাঝে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ট্রল হলো সাকিবসহ পাঁচ ক্রিকেটারের ঘুরে বেড়ানোর একটি ছবি নিয়ে।
ছবিটিতে দেখা যাচ্ছিল সাকিব আল হাসান, ইয়াসির আলী রাব্বি, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, সৌম্য সরকার ও তাসকিন আহমেদ হেঁটে বেড়াচ্ছেন নিউজিল্যান্ডের মনোরম পরিবেশে। তবে ক্রিকেটারদের এমন ছবি ভালো ভাবে নেননি অনেক ক্রিকেট ভক্ত। তাঁদের মতে দল হারতে থাকায় এমন ঘোরার ছবি মানায় না।
সবমিলিয়ে সাকিব আল হাসানের দলকে মোটামুটি একটা কাঠগড়ায়ই তোলা হলো। তবে এরইমধ্যে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড থেকে আবার প্রকাশ করা হলো অনুশীলনের একটি ছবি। যেখানে দেখা যাচ্ছে অনুশীলনের ফাঁকে দলে সবার সাথে কথা বলছেন সাকিব। পুরো দলকে যেন একটা সুতোয় বাধার চেষ্টা। এই বৃত্ত থেকে বের হতে হলে পুরো দল হয়েই খেলতে হবে এমন একটা মনোভাবই যেন ছড়িয়ে দিতে চাইছেন সাকিব।
ব্যাস, এবার আবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুরু হলো সাকিব বন্দনা। বাংলাদেশকে এমন অবস্থা থেকে শুধু সাকিবই টেনে তুলতে পারেন এরকমটাই বিশ্বাস ভক্তদের। সবমিলিয়ে ভালো কিংবা খারাপ যাই হোক, দেশের ক্রিকেটে সাকিব আল হাসান আলোচনাতে থাকবেনই। এমনকি সাকিবের কোন ছবি নিয়েও উঠতে পারে আলোচনা-সমালোচনার ঢেউ।
তবে সাকিবদের ঘোরাঘুরি নিয়ে যারা ট্রল করছেন তাঁদের উল্টো সমালোচনা করছেন সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। দলের এমন অবস্থায় কেউ ঘুরতে গেলে বরং তাদেরই পক্ষে তিনি। বরং সাকিব যদি এই উদ্যোগ নিয়ে থাকে তাহলে সাকিবেরও প্রশংসা করতে চান তিনি। এছাড়া ক্রিকেটারদের মানসিক স্বাস্থের কথাও ভাবতে বলেছেন তিনি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি কমেন্টে তিনি লিখেছেন, ‘সবাই একসাথে কোথাও যদি ঘুরতে বা খেতে যায় সেটা এই সব মুহূর্তে আরও ভালো কাজ করে। যদি সাকিব এটা করে থাকে তাহলে ওকে আরও সাধুবাদ দেওয়া উচিত। সমস্যা আমাদের কারণ ঘরের ছেলে রেজাল্ট খারাপ করলে বই নিয়ে টেবিলে বসে থাকতে হবে। আসলে সে পড়ছে কিনা সেটার খেয়াল নাই। খেলাধুলা অনেকটাই মনের সুস্থতার উপর নির্ভর করে তাই সেটা ঠিক করা সবার আগে জরুরী। ওদেরকে ওদের মতো করেই কাজ করতে দিলে ভালো, কারণ ওদের বিকল্পও শুধু ওরা।’