বিদেশি ক্রিকেটার সংকট বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) চিরকালেই ছিল। এবারও তাঁর ব্যতিক্রম হওয়া কথা ছিল না। বিশেষ করে বিশ্বজুড়ে এখন এত ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট যে এই সময় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) আয়োজিত এই আসরে আসতে আপত্তি থাকে শীর্ষস্থানীয় বিদেশি ক্রিকেটারদের।
তবে, একটু দেরিতে হলেও আশার আলো জ্বলে উঠল। নিজেদের অভ্যন্তরীণ জটিলতায় পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) আগামী বছরের শুরুতে হতে যাওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ ২০২৩ সালের জানুয়ারির পরিবর্তে ২০২৪ সালে আয়োজনের ঘোষণা দেয়।
ওই সময়ে আয়োজন হওয়ার কথা বিপিএলের। একই সময়ে অনুষ্ঠিত হওয়া অস্ট্রেলিয়ার বিগ ব্যাশ লিগ, আরব আমিরাতের ইন্টারন্যাশনাল টি-টোয়েন্টি ও দক্ষিণ আফ্রিকান টি-টোয়েন্টি লিগের দৌরাত্ম্যে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার সংকটে ভোগা বিপিএলের ফ্রাঞ্চাইজিরা পিসিবির এই সিদ্ধান্তে নিজেদের হালে পানি পেল।
আরব আমিরাতের ইন্টারন্যাশনাল টি-টোয়েন্টি ও দক্ষিণ আফ্রিকান টি-টোয়েন্টি লিগের ফ্রাঞ্চাইজি মালিকরা সিংহ ভাগই ভারতীয় হওয়ায় পাকিস্তানের খেলোয়াড়রা উপেক্ষিত ছিলেন এই দুই দেশের লিগে। এবার সেই সুযোগটাই লুফে নিতে চায় বিপিএলের মালিকানায় থাকা দলগুলো। ক্লাবগুলোর ভিতরের খবর অনুযায়ী ইতোমধ্যে প্রথম সুযোগেই অনেক পাকিস্তানি খেলোয়াড়দের নিজেদের দলে ভিড়িয়েছে ।
রংপুর রাইডার্স পূর্বে যাদের ব্রেন্ডন ম্যাককালাম, এবি ডি ভিলিয়ার্স, ক্রিস গেইলের মতো খেলোয়াড়দের দলে নেওয়ার সুখস্মৃতি আছে তারা ইতোমধ্যেই এশিয়া কাপে ভারত বধের নায়ক মোহাম্মদ নাওয়াজকে দলে নিয়েছে। এছাড়া পাকিস্তানের অভিজ্ঞ শোয়েব মালিক,আফগানিস্তানের আজমতউল্লাহ ওমরজাই ও শ্রীলঙ্কান পাথুম নিশাঙ্কা আর জেফ্রি ভান্ডার্সেইকে দলে নিয়েছে তারা। যদিও বিপিএল চলাকালীন সময়ে ভারতের শ্রীলঙ্কা সফরের জন্য লঙ্কান খেলোয়াড়দের পূর্ন সময় দলে থাকা নিয়ে অনিশ্চয়তা আছে।
বিপিএলের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সও পাখির চোখ করেছে পাকিস্তানের সেরা ক্রিকেটারদের। ইতোমধ্যে টি-টোয়েন্টির এক নাম্বার ব্যাটার মোহাম্মদ রিজওয়ান, অন্যতম সেরা বোলার শাহীন শাহ আফ্রিদি ও হাসান আলীকে দলে টেনেছে তারা।
সিলেট স্টাইকার্স অধিনায়ক হিসেবে ঘোষণা করেছে মাশরাফি বিন মুর্তজার নাম। দলে আছেন পাকিস্তানি তারকা পেসার মোহাম্মদ আমির। আরও থাকছেন তিন লঙ্কান – থিসারা পেরেরা, কামিন্দু মেন্ডিস ও ধনঞ্জয়া ডি সিলভা। ঘটা করে লোগো উন্মোচন অনুষ্ঠানও করে ফেললো তাঁরা।
এবারের বিপিএলে বরিশাল, ঢাকা, খুলনা, সিলেট, রংপুর,কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম এই সাত দল অংশগ্রহণ করবে। আগামী বছরের ছয় জানুয়ারি বিপিএল শুরু হয়ে চলবে ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। অন্যদিকে পাকিস্তানের ১৫ জানুয়ারি নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের পর আর কোনো সূচি নেই। ফলে, বাকিটা সময় বিপিএলে তাঁরা খেলতে পারবেন বলে আশা করছে ফ্রাঞ্চাইজিরা। খেলোয়াড় সংকট আর পাকিস্তানের খেলোয়াড়রা ফ্রি থাকায় ফ্রাঞ্চাইজিদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবেন যে এই পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা, তা চোখ বুজেই বলাই যায়।