এমনিতে বিশ ওভারের খেলাটি মূলত ব্যাটসম্যানদের খেলা। কিন্তু পার্থের মত গতিসম্পন্ন উইকেট থাকলে সেই খেলা আর ব্যাটসম্যানদের থাকে না। তখন সেই ম্যাচে রাজত্ব চলে বোলারদের। গত ২২ অক্টোবর ইংল্যান্ড বনাম আফগানিস্তানের ম্যাচে মাঠজুড়ে বোলারদের রাজত্ব দেখা গিয়েছে। বিশেষ করে ইংরেজ বোলারদের ঝড়ে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল আফগান ব্যাটিং দুর্গ।
আইসিসির সংক্ষিপ্ততম সংস্করণে ইংল্যান্ডের বর্তমান অবস্থান দুই নম্বরে। শক্তিমত্তায় ইংল্যান্ড হতে বেশ পিছিয়ে আফগানরা। তাই হয়তো ম্যাচটিতে ইংল্যান্ড শুধুমাত্র চারজন ফ্রন্টলাইন বোলারকে বেছে নিয়েছিল। অবশ্য ইংল্যান্ডের বোলারদের তোপে আফগান ব্যাটাররা দাড়াতেই পারেননি। টস জিতে ইংল্যান্ড অধিনায়ক জস বাটলার প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন। যদিও ইংল্যান্ড সম্প্রতি আগে ব্যাটিং করেও যথেষ্ট সাফল্য পেয়েছে।
কিন্তু ইংল্যান্ড এটাও ভাল করেই জানত যে আফগানিস্তান প্রথমে ব্যাট করতে পছন্দ করে, কারণ তাঁরা টোটাল ডিফেন্ড করতে পারদর্শী। তাছাড়া আফগানিস্তান এর আগে কখনও অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টি–টোয়েন্টি খেলেনি। তাই জটিল হিসেব-নিকেশ কষে আগে আফগানদের ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে রান তাড়ায় জয়ের ছক কষেন ইংরেজ অধিনায়ক।
ব্যাটিংয়ে নেমে আফগান ওপেনার হযরতুল্লাহ জাজাই এবং রহমানুল্লাহ গুরবাজ প্রথমে বেন স্টোকসের মুখোমুখি হয়। অবশ্য ইংল্যান্ডকে প্রথম সাফল্য এনে দেন মার্ক উড। ওদিকে বেন স্টোকসের বলে আউট হন হজরতুল্লাহ জাজাই। শেষ অব্দি ১৯.৪ ওভারে মাত্র ১১২ রান তোলার পর থেমে যায় আফগানিস্তানের রানের চাকা। ম্যাচ সেরা ইংরেজ বোলার স্যাম কারেন তাঁর টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের প্রথম ফাইফার তুলে নেন। ৩.৪ ওভারে তাঁর স্পেল ছিল ১০ রানের বিনিময়ে পাঁচ উইকেট।
তাছাড়া মার্ক উড দুইটি, ক্রিস ওকস একটি এবং বেন স্টোকস দুইটি উইকেট শিকার করেন। ম্যাচ শেষে ইংল্যান্ডের বোলার মার্ক উড বলেন, ‘এখানে বড় বাউন্ডারি, দ্রুত পিচ। বাটলার রান নিয়ে অতটা চিন্তিত নয়। বরং সে চায় আমরা প্রতিপক্ষ ব্যাটারদের আউট করি। আমরা যেন আক্রমণাত্মক বোলিং করি।’
অবশ্য যে মাঠে আফগান ব্যাটিং লাইন আপকে চুরমার করে দিয়েছিল, সেই একই মাঠে ব্যাটিংয়ে নেমে ইংরেজদেরও যথেষ্ট কষ্ট করতে হয়েছে। দারুণ ছন্দে থাকা ইংল্যান্ডের জন্য ১১৩ রানের লক্ষ্য তেমন একটা কঠিন ছিল না। কিন্তু মাঠটা যে পার্থ! তাই কিছুটা ঘাম ঝরাতে হয়েছে তাঁদেরও।
কারণ ইংরেজদের পক্ষে কেবলমাত্র লিয়াম লিভিংস্টোন ২৯ রান করলেও, দলের অন্যরা কেউই বিশের ঘরও ছুঁতে পারেননি। যশ বাটলার ও ডেভিড মালান ১৮ রান করে যোগ করেছেন এবং এলেক্স হেলস উনিশ রান যোগ করেছেন স্কোরকার্ডে। অর্থাৎ জয়টা যে বেশ সহজ জয় ছিল, এমনটা কিন্তু দাবি করা যাবে না।
পরিসংখ্যান বলে, এই অবধি টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে তিনবার ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হয়ে তিন বারই হেরেছে আফগানরা। যাই হোক এবারের আসরের অন্যতম ফেবারিট হল ইংরেজরা। ইংল্যান্ড দলটিতে দুর্দান্ত ব্যাটিং লাইন আপের পাশাপাশি রয়েছে দারুণ সব অলরাউন্ডারের ছড়াছড়ি। তবে বোলিংয়ে কিছুটা দুর্বলতার শঙ্কা থাকলেও, এই ম্যাচের পর ইংরেজ বোলারদের আত্মবিশ্বাসটাও তুঙ্গে থাকবে। তবে কি, বিশ্বকাপের মঞ্চে বোলিংয়েও দারুণ রূপে ফিরছেন ইংরেজরা!