গত রোববার মেলবোর্নে দারুন এক ম্যাচের স্বাক্ষী হলো ক্রিকেট বিশ্ব। শুরু থেকেই পেন্ডুলামের মতো দুলতে থাকা ম্যাচের শেষ ওভারে জয়ের জন্য ভারতের প্রয়োজন ছিলো ১৬ রান। পেসারদের ওভারের কোটা শেষ হয়ে যাওয়ায় পাকিস্তানি অধিনায়ক বাবর আজমকে অনেকটা বাধ্য হয়েই শেষ ওভারে বোলিংয়ে আনতে হয় বাঁহাতি স্পিনার মোহাম্মদ নওয়াজকে।
প্রথম বলেই হার্দিক পান্ডিয়াকে ফিরিয়ে দিয়ে ভিন্ন কিছুর ইঙ্গিত দিলেও শেষ তিন বলে নিজের স্বাভাবিক বোলিং বাদ দিয়ে ভিন্ন অ্যাকশনে বোলিং করতে গিয়ে হ-য-ব-র-ল অবস্থার সৃষ্টি করেন। এক নো বল আর দুই ওয়াইডে ভারতের জন্য জয়কে আরো সহজ করে তোলেন এই স্পিনার। শেষ বলে এক রানের প্রয়োজন হলে রবিচন্দ্রন অশ্বিনের তা নিতে আর কোনো অসুবিধাই হয়নি। ম্যাচ শেষে মোহাম্মদ নাওয়াজের বোলিং অ্যাকশন পরিবর্তন নিয়ে খোঁচা মারতে ছাড়েননি সাবেক ভারতীয় ক্রিকেটার বীরেন্দ্র শেবাগ।
ক্রিকেট ভিত্তিক ভারতীয় ওয়েবসাইটকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শেবাগ বলেন, ‘আমি যদি পাকিস্তানের দলের হয়ে খেলতাম তবে মোহাম্মদ নওয়াজকে তার স্বাভাবিক বাঁহাতি স্পিন করারই পরামর্শ দিতাম। শেষ সময়ে এসে নতুন কিছু করার জন্য কখনোই তাকে উপদেশ দিতাম না।’
ভারতীয় ক্রিকেটের ব্যাটিং ধারনাকে বদলে দেওয়া এই সাবেক ওপেনার বলেন, ‘আমি বলতাম, ১৬ রান কিন্তু কম রান নয়। বল করার সময় না ঘাবড়ে স্বাভাবিক খেলার চেষ্টা কর। কিন্তু আপনি বোলিং করতে গিয়ে তাই করলেন যা আগে কখনোই করেন নি। বল হাতে নিয়েই উইকেট তুলে নিবেন? মনে রাখবেন, আপনি ওয়াসিম আকরাম না।’
নওয়াজের ভিন্ন কিছুর চেষ্টা পাকিস্তানের জন্য হতাশার কারণ হলেও ভারতের পরম আনন্দের। ম্যাচ শেষে বিরাট কোহলিও এই নিয়ে কথা বলেছেন।তিনি বলেন, ‘হার্দিক সবসময়ই এটা বিশ্বাস করেছিলো যদি শেষ পর্যন্ত আমরা উইকেটে টিকে থাকতে পারি তাহলে ম্যাচ অবশ্যই জিততে পারবো। আর আমরা জানতাম নওয়াজের এক ওভার বাকি আছে। তবে নওয়াজের এক ওভার আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়ালেও হারিস রউফের ওই ওভারেই আমাদের ভিন্ন কিছু করতে হতো। ভাগ্য ভালো শেষ দুই বলে দুই ছয়ে শেষ ওভারে মাত্র ১৬ রানের প্রয়োজন হয়।’
এক মাসের ব্যবধানে মোহাম্মদ নাওয়াজের জন্য এক ভিন্ন অভিজ্ঞতা বলা যায়। সর্বশেষ শেষ হওয়া এশিয়া কাপে ভারতকে হারানো ম্যাচে ব্যাট হাতে নায়ক ছিলেন মোহাম্মদ নওয়াজ। এবার মেলবোর্নে বল হাতে নায়ক হওয়ার সুযোগ থাকলেও ম্যাচ হেরে ভক্তদের কাছে পরিণত হয়েছেন খলনায়কে।