ভারত পাকিস্তানের জন্ম নেওয়া প্রতিটা ক্রিকেটারের স্বপ্ন থাকে ইন্দো-পাক লড়াইয়ের শেষ বলে রান কিংবা উইকেট নিয়ে নিজ নিজ দলকে ম্যাচ জিতিয়ে নায়ক হওয়ার। দিন কয়েক আগে মেলবোর্নের এই পরম আকাঙ্ক্ষিত অমৃতের স্বাদ পেয়েছিলেন ভারতীয় স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন।
ম্যাচের শেষ বলে এক রানের প্রয়োজন হলে আলতো টোকায় ফিল্ডারের মাথার উপরে বল পাঠিয়ে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছিয়ে দেন তিনি। তবে যার কারণে এই সুযোগ পেয়েছেন অশ্বিন, সেই দীনেশ কার্তিককে নাকি ব্যাটিংয়ে নামার সময় রীতিমত অভিশাপ দিচ্ছিলেন তিনি। মেলবোর্নের মহাকাব্যিক ম্যাচে মাঠে ঘটে যাওয়া বিষয়গুলো নিয়ে নিজের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত এক ভিডিওতে এসব কথা বলেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন।
মেলবোর্নে পাকিস্তানের ১৬০ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৩১ রানে চার উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা ভারতীয় ব্যাটিংকে পথ দেখান বিরাট কোহলি ও হার্দিক পান্ডিয়া। দুইজনের ১১৩ রানের জুটি ম্যাচে ফেরায় ভারতকে। শেষ ওভারের প্রথম বলে হার্দিক পান্ডিয়া আউট হলে উইকেটে আসেন উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান দীনেশ কার্তিক।
তবে ২ বলে ২ রান প্রয়োজন এই মুহূর্তে দীনেশ কার্তিক সুইপ শট খেলতে গিয়ে শরীরের ভারসাম্য হারিয়ে ফেললে স্টাম্পিংয়ের শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরে যান। শেষ বলে প্রয়োজন ২ রান এমন সময়ে রবিচন্দ্রন অশ্বিন ব্যাটিংয়ে নামলে প্রথম বলে ওয়াইড ও দ্বিতীয় বলে এক রান নিয়ে ভারতকে ম্যাচ জিতিয়ে নেন। তবে নব্বই হাজার দর্শকের সামনে ব্যাট করতে নামার মুহূর্তে অশ্বিন যে অনেকটা নার্ভাস ছিলেন তা তার ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিওতে জানান।
৩৬ বছর বয়সী স্পিনার বলেন, ‘আমি যখন ব্যাট করতে নামছিলাম, মনে মনে দীনেশ কার্তিককে অভিশাপ দিচ্ছিলাম। তারপরই ভাবলাম না আমার হাতে যথেষ্ঠ সময় আছে। মনে হচ্ছিলো উইকেটে পৌঁছাতে আমার যুগ যুগ সময় লাগছে।’
রবিচন্দ্রন অশ্বিন এই সময় মাঠে বিরাট কোহলির সাথে তার কথোপকথনের কিছু অংশও তুলে ধরেন, মাঠে বিরাট আমাকে অনেক কিছুই বললো। তবে আমার একটা কথাই মনে আছে। ও বললো, সৃষ্টিকর্তা আজ পর্যন্ত তোমাকে অনেক কিছুই দিয়েছে। তিনি কি তোমাকে হতাশ করতে পারেন? অন্তত পক্ষে তোমার জন্য হলেও তিনি এই রান গুলো তোমাকে করার সুযোগ দিবেন। বলে নজর রাখা, বলকে ফাঁকা জায়গায় পাঠিয়ে দৌড় দেওয়া। এটাই তখন আমার মাথায় ঘুরছিল।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘আমি ভেবেছিলাম নাওয়াজ আমার প্যাড লক্ষ্য করে বল করতে পারে। যখন দেখলাম বল লেগ সাইড দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে আমিও ছেড়ে দিলাম। বাকি এক বলে এক রান নিতে আমার জন্য অনেকটা সুবিধাই হল। জিততে পেরে অসম্ভব খুশি আমি।’
এরপর অনেকটা মজা করেই বললেন, ‘এখন কেউ আমার ঘরে পাথর ছুঁড়ে মারবে না। সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ।’
বিরাট কোহলির ৫৩ বলে ৮২ ও হার্দিক পান্ডিয়ার ব্যাটে বলের পারফরম্যান্স ম্যাচ জয়ের মূল কারণ হলেও ব্যাট হাতে রবিচন্দ্রন অশ্বিনের এক রানও যে মহামূল্যবান তা নিশ্চয়ই ভারতীয় সমর্থকদের অজানা নয়।