শ্রীলঙ্কা, ইনজুরি আর ধাক্কা এই বিশ্বকাপের মঞ্চে যেন একসূত্রে বাঁধা পড়ে গিয়েছে দলটি। সুপার টুয়েলভের টিকিট কাটতে হয়েছে বেশ সংগ্রাম করে। নিজেদের প্রথম ম্যাচেই নামিবিয়ার কাছে হেরে আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরলেও পরের দুই ম্যাচ জিতে সুপার টুয়েলভ খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছিল লঙ্কানরা।
সুপার টুয়েলভের শুরুটাও করেছিল আয়ারল্যান্ডকে হারিয়ে বিজয়ের হাসি হেসে। কিন্তু, হায় ফের পরাজয়। ২৫ অক্টোবর পার্থে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মোকাবেলায় নেমে পরাজয় বরণ করতে হয় দাসুন শানাকার দলটিকে।
কিন্তু লঙ্কান শিবিরে পরাজয়ের গ্লানি ছাপিয়ে ফের ইনজুরির থাবা শঙ্কায় ফেলে দিয়েছে। এই মুহুর্তে লঙ্কানদের দুশ্চিন্তার মূলে রয়েছে খেলোয়াড়দের ইনজুরি। নতুন খবর হল অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বোলিংয়ের সময় পেসার বিনুরা ফার্নান্দো চোট পেয়েছেন। বিনুরার মাঠের বাইরে চলে যাওয়াটা এই ম্যাচে শ্রীলঙ্কা দলটিকে বেশ ভুগিয়েছে। শেষ মেশ সাত উইকেটের পরাজয় মেনে নিতে হয়েছে তাঁদের। হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটের কারণে বিনুরা ফার্নান্দোর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ যাত্রা এখানেই শেষ।
শ্রীলঙ্কান টিম ম্যানেজমেন্ট তাই বিনুরার বিকল্প হিসেবে দলে সুযোগ দিচ্ছেন আসিথা ফার্নান্দোকে। শীঘ্রই অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে দলের সঙ্গে যোগ দেবেন আসিথা। এখন অবধি তিনটি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি। পাশাপাশি স্ট্যান্ডবাই হিসবে থাকা মাথিশা পাথিরানা ও উইকেট কিপার-ব্যাটসম্যান নিরোশান ডিকওয়েলের অস্ট্রেলিয়া দলের সঙ্গে যোগ দেওয়ার ডাক পড়েছে।
গ্রুপ-১ এর দল শ্রীলঙ্কা সুপার টুয়েলভের একটি ম্যাচ জিতেছে এবং একটি হেরেছে। এবং গ্রুপে নিউজিল্যান্ড এবং ইংল্যান্ডের পরে তৃতীয় স্থানে অবস্থান করছে। প্রতি গ্রুপ থেকে সেরা দুই দল সেমিফাইনালের টিকিট কাটবে। আগামী ২৯ অক্টোবর সিডনিতে নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হবে শ্রীলঙ্কা।
শ্রীলঙ্কা দলের অবস্থান নিয়ে কোচ ক্রিস সিলভারউড বলেন, ‘আমি মনে করি আমরা দেখিয়েছি যে আমাদের সামর্থ্য রয়েছে এবং প্রমাণ করেছি যে আমাদের দক্ষতা রয়েছে। তাই আমি মনে করি আমরা যদি আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলি, আমরা যে কাউকে মোকাবেলা করতে পারি’।
৪৭ বছর বয়সী এই কোচ আরও বলেন, ‘দলের মধ্যে আত্মবিশ্বাস বাড়ছে। আমাদের জন্য এই মুহূর্তে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল এটা নিশ্চিত করা যে আমরা দলবদ্ধ হয়ে চেষ্টা করব এবং শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসব।’ দলের ইনজুরির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই এই মুহূর্তে ইনজুরির কারণে আমাদের কিছুটা দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে, বিশেষ করে পেস ইউনিটে এই দুর্ভোগ প্রকট।’
দলটির সামনে আবারও সংকট, এবার একের পর ক্রিকেটারকে ইনজুরির কারণে হারিয়ে ফেলার সংকট। অবশ্য লঙ্কানরা সংকটকে শক্তিতে পরিণত করার দারুণ এক মনোবল রাখে। ঠিকই দল গুছিয়ে মাঠের লড়াইয়ে হাড্ডাহাড্ডি মোকাবেলায় নেমে পড়ে। এবার নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে নিজেদের সংকট পেরিয়ে কিভাবে সমাধানে গিয়ে বিশ্বকাপের আসরে আরেকটু এগিয়ে যাবে, সেটাই এখন দেখার পালা।