একটা শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচ, একটা শ্বাসরুদ্ধকর জয়! পাকিস্তানকে এক রানে হারিয়ে জিম্বাবুয়ে কি দুর্দান্ত এক জয় তুলে নিল! তাই উচ্ছ্বাসটা তাই একটু বেশি হওয়াটাই স্বাভাবিক। পার্থ স্টেডিয়ামে টসে জিতে শুরুতেই ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন জিম্বাবুইয়ান অধিনায়ক ক্রেইগ আরভিন।
বিশ ওভার শেষে জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ দাড়ায় ১৩০ রান। জয়ের জন্য ১৩১ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নামা পাকিস্তানকে ১২৯ রানে থামিয়ে দেয় জিম্বাবুয়ের বোলাররা। স্বাভাবিকভাবে এই জয়ে আনন্দে ভাসছে জিম্বাবুইয়ান শিবির।
ম্যাচ সেরা খেলোয়াড় হলেন সিকান্দার রাজা। ব্যাট হাতে তেমন অবদান রাখতে না পারলেও চার ওভার বল করে তুলে নিয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ তিনটি উইকেট। খরচ করেছেন মাত্র ২৫ টি রান। ম্যাচ সেরার পুরস্কার নিতে আসা উচ্ছ্বসিত সিকান্দার রাজা জানালেন নিজের অনুভূতি।
এই অলরাউন্ডার বললেন, ‘আমি ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। গলা শুকিয়ে আসছে, সম্ভবত এই মুহূর্তে আমি যে আবেগের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি তার জন্য। এই ছেলেদের নিয়ে আমি কতটা গর্বিত তা বলে বোঝাতে পারব না। আমাদের সিমাররা যেভাবে বল করেছে, তা অবিশ্বাস্য ছিল। পাশাপাশি আমরা যেভাবে ফিল্ডিংয়ে তাঁদের ব্যাক আপ দিয়েছি এবং যেভাবে আমরা নিজেদের উপর বিশ্বাস রেখেছিলাম। এই মুহুর্তে সত্যিই আমি শব্দ হারিয়ে ফেলেছি।’
সিকান্দার রাজা আরও বলেন, ‘আমরা যখন অস্ট্রেলিয়ায় আসছিলাম, আমি আমার ক্যাপ্টেনকে (আরভিন) বলেছিলাম আপনি যদি ম্যান অফ দ্য ম্যাচ হন, ক্যাটালগ থেকে যে কোন ঘড়ি বেছে নিন এবং আমি আপনাকে এটি কিনে দেব। কিন্তু আমি যদি ম্যান অফ দ্য ম্যাচের পুরস্কার জিতে যাই, আপনি আমাকে একটি ঘড়ি কিনে দিতে যাচ্ছেন। আমি তাকে মনে করিয়ে দিচ্ছিলাম যে, আমি এখনো তাঁর কাছে তিনটি ঘড়ি পাওনা আছি। আমি আজকের ম্যাচ নিয়ে উত্তেজিত ছিলাম, এবং আমি সকালে রিকি পন্টিংয়ের এই ক্লিপটি দেখেছিলাম। যা আমাকে এই পারফরম্যান্স করতে অনুপ্রাণিত করেছিল। এর জন্য আমি রিকি পন্টিংকেও ধন্যবাদ জানাতে চাই।’
ম্যাচ শেষে জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক ক্রেগ আরভিন বলেন, ‘খুবই অসাধারণ। আমরা সুপার টুয়েলভ এ আসার জন্য যা করেছি তা সত্যিই অসাধারণ। আমরা চাইনি আমাদের টুর্নামেন্ট তার আগেই শেষ হয়ে যাক। আমরা এই অবধি আসতে চেয়েছিলাম। শীর্ষস্থানীয় দলগুলির বিপক্ষে ভালো খেলতে চেয়েছিলাম এবং আমরা আজ তা দারুণভাবে করেছি। আমাদের ব্যাটিং পারফরম্যান্সের পরে, আমি ভেবেছিলাম আমরা হয়তো ২০-২৫ রান পিছিয়ে আছি, কিন্তু আমাদের সিমাররা তাঁদের ব্যাটিং লাইনআপে দারুণভাবে আঘাত হেনেছে।’
সিকান্দার রাজার প্রশংসা করতে গিয়ে দলনেতা বলেন, ‘রাজা আবারও দলে দারুণ ভূমিকা রেখেছেন, যা তিনি সবসময় করেন। সিকান্দার রাজা আজ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট তুলে নিয়েছেন। আমি মনে করি তিনি এই পর্যন্ত তিনটি ম্যান অফ দ্য ম্যাচ পুরষ্কার পেয়েছে। তাই আমরা যখন বাড়ি ফিরব, তখন আমার সব টাকা-কড়ি শেষ হতে চলেছে তাঁকে উপহার দিতে গিয়ে। এছাড়াও আমি জিম্বাবুয়ের সমর্থকদের ধন্যবাদ জানাতে চাই যারা আজ আমাদের সমর্থন করতে এসেছেন। আমরা যেখানেই যাই তাঁদের সমর্থন ও ভালোবাসা সত্যিই আমাদের মনোবল ধরে রাখে, তাই তাঁদের বিশেষ ধন্যবাদ।’
সত্যি, জিম্বাবুয়ের এই দলটার চাওয়া সামান্যই। কিন্তু, স্বপ্নটা বড়!