জিততেই হবে ম্যাচ। এমন সমীকরণে আফগানিস্তানের বিপক্ষে এবারের বিশ্বকাপে নিজেদের শেষ ম্যাচ খেলতে নামে অস্ট্রেলিয়া। ম্যাচ জিতলেও সেমিফাইনালের যাবার আশা ঝুলে থাকবে পরবর্তী ম্যাচের ফলাফলের উপর। তবুও নিজেরদের প্রচেষ্টাটুকু তো চালিয়ে যেতে হবে অজিদের। ইনজুরি আক্রান্ত নিয়মিত অধিনায়ককে ছাড়াই খেলতে নামে অস্ট্রেলিয়া। টসে জিতে অ্যাডিলেডে আফগানিস্তান অধিনায়ক মোহাম্মদ নবী অস্ট্রেলিয়াকে ব্যাটিংয়ে পাঠান।
এদিন চোট আক্রান্ত ফিঞ্চের সাথে একাদশের বাইরে ছিলেন টিম ডেভিড এবং মিচেল স্টার্ক। তাদের পরিবর্তে দলে আসেন স্টিভ স্মিথ এবং কেন রিচার্ডসন। আফগানিস্তানও তাদের শুরুর একাদশে দুটো পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নামে। আজমতউল্লাহ ওমরজাই এবং ফরিদ আহমেদ এর পরিবর্তে দলে আসেন দারউশ রাসুলি এবং পেসার নাভিন উল হক। আফগানিস্তানের হারাবার কিছুই নেই। স্রেফ গেলবারের চ্যাম্পিয়নদে চমকে দেবে সেই একটা প্রত্যাশা নিশ্চয়ই করেছিল। খানিকটা করতে পেরেছিলও বটে আফগানরা।
শুরুটা ভাল হলেও ষষ্ঠ ওভারে ২ উইকেট সহ পাওয়ার প্লেতে মোট ৩ উইকেট হারিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ দাঁড়ায় ৫২। সেখান থেকে মিচেল মার্শ এবং স্টোয়িনিস দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন। একাদশতম ওভারে মুজিবুর রহমান কে উড়িয়ে মারতে গিয়ে কিপারের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ব্যক্তিগত ৪৫ রানে আউট হন মার্শ।
ইনিংসের শেষ দিকে গ্লেন ম্যাক্সওয়েল হাত খুলে খেলে টুর্নামেন্টে নিজের প্রথম অর্ধ শতক পেলেও আফগানিস্তানের দুই পেসার ফারুকী এবং নাভিন উল হকের অসাধারণ ডেথ বোলিংয়ে শেষ ৫ ওভারে অস্ট্রেলিয়া মাত্র ২৫ রানই তুলতে সক্ষম হয়। নিজেদের ইনিংসের ২০ ওভার শেষে অস্ট্রেলিয়া তাদের ৮ উইকেট হারিয়ে ১৬৮ রান সংগ্রহ করে।
অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে সর্বোচ্চ ৩২ বলে ৫৪ রান করেন ম্যাক্সওয়েল। এছাড়া মিচেল মার্শ ৪৫ এবং স্টোয়িনিস ও ওয়ার্নার ২৫ করে রান করেন।আফগানিস্তানের পক্ষে নাভিন উল হক ৩ টি এবং ফজল হক ফারুকি ২ টি করে উইকেট লাভ করেন। অস্ট্রেলিয়ার দেয়া ১৬৯ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে আফগানিস্তানও দূর্দান্ত শুরু করে। হ্যাজলউডের প্রথম ওভারেই আফগানিস্তান ব্যাটসম্যান গুরবাজ চার এবং ছয় মেরে ইনিংস শুরু করেন। কিন্তু এর পরই অল্প সময়ের ব্যবধানে দুই ওপেনার আউট হয়ে গেলে পাওয়ার প্লে শেষে আফগানিস্তান ২ উইকেট হারিয়ে ৪৭ রান সংগ্রহ করে।
এরপর উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান ইব্রাহিম জাদরান এবং অলরাউন্ডার গুলবাদিন নায়েব ভালভাবে দলের হাল ধরেন। দু’জনে মিলে ৫৯ রানের পার্টনারশিপ গড়ে তোলেন। দলীয় ৯৯ এবং ব্যক্তিগত ৩৯ রানে দারুণ খেলতে থাকা গুলবাদিন আউট হয়ে গেলে যেন তাসের ঘরের মত ভেঙে পরে আফগানিস্তানের ইনিংস। ৯৯/২ থেকে মাত্র ৪ রানের ব্যবধানে ৪ উইকেট হারিয়ে ১০৩/৬ এ পরিনত হয় দলের স্কোর।
শেষ দিকে রাশিদ খান ২৩ বলে ৪৮ রানের দারুণ একটি ইনিংসের মাধ্যমে অজিদের ভয় ধরিয়ে দিলেও শেষ পর্যন্ত স্টোয়িনিস শেষ ওভার বল করতে এসে তাঁর নার্ভ ধরে রেখে অজিদের জন্য ৪ রানের কষ্টার্জিত জয় তুলে নেয়। সেই সাথে এই টুর্নামেন্টে একমাত্র দল হিসেবে সুপার টুয়েলভ এ একটি ম্যাচও না জিতে টুর্নামেন্ট শেষ করে আফগানিস্তান।
আফগান দের পক্ষে রাশিদ খান সবোচ্চ ৪৮ এবং গুলবাদিন ৩৯ রান করেন। অজিদের পক্ষে জাম্পা এবং হ্যাজলউড প্রত্যেকেই ২ টি করে উইকেট নেন। ম্যাচসেরা হন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল।
এই জয় সত্ত্বেও অজিদের সেমিফাইনাল ভাগ্য এখনো ঝুলে রইলো। তাদেরকে এখনো সেমিফাইনালে যেতে আগামীকাল চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইংল্যান্ডের সাথে শ্রীলঙ্কার ম্যাচের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে। শ্রীলঙ্কা যদি ইংলিশ দের হারাতে পারে তবে অস্ট্রেলিয়া সেমিফাইনালে যেতে পারবে নতুবা নেট রান রেটে পিছিয়ে থেকে বাদ পড়বে অস্ট্রেলিয়া।