আফ্রিদি ফিরলেন, ফিরল আগ্রাসন

তিন ওভার বল করে মাত্র ১৪ রান খরচ করেছেন। আর উইকেট শিকার করেছেন তিনটি। এক্কেবারে আফ্রিদিসুলভ বোলিং যাকে বলে, তাই করে দেখিয়েছেন তিনি।

টি-টোয়েন্টির প্রথম ওভারের জন্য আপনি কাকে বেছে নেবেন? অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই প্রশ্নের জবাবে একটা নামই আসবে – শাহীন শাহ আফ্রিদি। নিজের দিনে টপ অর্ডারের ব্যাটারদের জন্য একে মূর্তিমান আতঙ্কের নাম তিনি।

যদিও, এই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শুরু থেকেই ছিলেন নিজের ছায়া হয়ে। তবে, শাহীন শাহ আফ্রিদি ফিরেছেন। এই পেসার বাইশ গজে প্রত্যাবর্তন তো ঘটিয়েছেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মঞ্চেই। সেটা নিয়ে বলছি না। স্বরূপে ফেরা যাকে বলে সেই দিকটি নিয়ে বলছিলাম।

অবশেষে পাকিস্তানের এই পেসার নিজের সেই বিধ্বংসী রূপ ফিরে পেয়েছেন। দীর্ঘ তিন মাস ইনজুরির জন্য মাঠের বাইরে ছিলেন। ইনজুরি কাটানোর এই পীড়াদায়ক প্রক্রিয়ার মাঝে যেন তাঁর বোলিং ফর্মে মরিচা ধরে গিয়েছিল।

দলের জন্যও তেমন কিছু করতে পারছিলেন না। বিশ্বকাপের গেল তিন ম্যাচেও নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। এই আসরে পরপর দুই ম্যাচ উইকেটশূন্য থেকে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে একটিমাত্র উইকেট শিকার করে উইকেটের খাতা খুলেছিলেন। বিশ্বকাপে আফ্রিদির থেকে আশানুরূপ ফলাফল না পেয়ে ভক্ত সমর্থক থেকে শুরু করে সাবেক ক্রিকেটাররা সবাই তাঁর দলে থাকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন।

নানাদিক থেকে নানা সমালোচনা হজম করতে হচ্ছিল। এইতো গেল কিছুদিন আগেই অনুশীলনের সময় নিজের ফর্ম ফিরে না পাওয়ার প্রসঙ্গে বলেছিলেন যে, ‘দীর্ঘ তিন মাস পর এমন ইনজুরি থেকে ফিরে আসা সহজ নয়। আমি আমার শতভাগ দেওয়ার চেষ্টা করছি। আমি মনে করি আমার গতি আগেও একই ছিল। গড় গতি ছিল প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ১৩৫-১৪০ কিমি। আমি সম্পূর্ণ ফিটনেস ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করছি।’

পাকিস্তান ভক্তরা আজকের দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচের পর বলতেই পারেন যে, ‘কথা রেখেছেন শাহীন আফ্রিদি।’ বল হাতে যেন সব সমালোচনার জবাবটা দিলেন এই গতিদানব। দক্ষিণ আফ্রিকান বাঘা বাঘা ব্যাটারদের মনে কাঁপন ধরিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। তিন ওভার বল করে মাত্র ১৪ রান খরচ করেছেন। আর উইকেট শিকার করেছেন তিনটি।

এক্কেবারে আফ্রিদিসুলভ বোলিং যাকে বলে, তাই করে দেখিয়েছেন তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে নিজ দলের জয়ে দারুণ অবদান রেখেছেন। আফ্রিদি এবার একটু দম নিতেই পারেন। সব সমালোচনার জবাব হয়েছে। নিজের ফিটনেস নিয়ে দ্বিধার অবসান হয়েছে। সেই সাথে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আত্মবিশ্বাস ফিরে পেতে এই পারফরম্যান্স দারুণ ভূমিকা পালন করবে। সব মিলিয়ে সম্ভবত বিশ্বকাপের আসরে আফ্রিদি ঝড়ের এই বুঝি শুরু। বাকি ম্যাচগুলোতেও নিজের দারুণ পারফরমেন্স ধরে রেখে নিজের পুরোনো রূপে ফিরতে চাইবেন পাকিস্তানী এই পেসার।

 

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...