জায়গায় দাঁড়িয়ে, মাথা সোজা রেখে শট। কী অবিশ্বাস্য, অকল্পনীয়। ক্রিকেটে এমন শট কম দেখা গেলেও তা খুব অপ্রচলিত নয়। শটটা খেলার পর বলের দিকে তাকানোরও প্রয়োজন মনে করতে হয় না। নিশ্চিত ভাবেই বলে দেয়া যায় এটা ছয়। তবে আসল কথা হচ্ছে বলের দিকে তাকানো যাবেনা এটাই এই শটের প্রধান শর্ত। আর এর জন্য দিনের পর দিন অনুশীলন করেন ক্রিকেটারা। আর এই শটটাই আয়ত্বে আনতে চান তামিম ইকবালও।
নো লুক শট। আধুনিক ক্রিকেটের নতুন সংযোজন। বিশেষ করে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এই শটের চর্চা সবচেয়ে বেশি। আন্দ্রে ফ্লেচার রীতিমত নিজের ট্রেডমার্ক শটে পরিণত করেছেন এই নো লুক শটকে। ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ গুলোতে তাঁর এই শট খেলা মানাই বল গিয়ে পড়বে সীমানার ওপারে।
ক্যারিবীয়দের কাছে কিংবা ভারতেও এই শট বেশ পরিচিত এবং কার্যকর হয়ে উঠলেও বাংলাদেশে এখনো নতুন। অন্তত আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের কোন ব্যাটারকে এই শট খেলতে দেখা যায়নি। তবে তামিম ইকবালের চেষ্টা দেখে মনে হচ্ছে খুব শীঘ্রই সেটা দেখা যাবে। বিশেষ এই ক্রিকেট শট নিজের আয়ত্বে নিয়ে আসতে বদ্ধ পরিকর ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল।
নো লুক শটের মূলত ফ্লিক ও সুইপ করার জন্য ব্যাটাররা খেলে থাকেন। ব্যাটের সাথে বলের সংযোগ হবার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত বলের দিকে সর্বোচ্চ মনোযোগ দেয়ার জন্যই এই পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকেন ব্যাটাররা। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত বলে দিকে চোখ থাকে তবে শট খেলার পরও মাথাটা একই পজিশনে থাকবে। বল কোথায় যাচ্ছে সেদিকে তাকানো যাবেনা।
আর এই অনুশীলনটাই মিরপুরের করছেন তামিম ইকবাল। তাঁকে তালিম দেয়ার জন্য আছেন তাঁরই এক সময়ের ওপেনিং পার্টনার শাহরিয়ার নাফিস। নাফিস দেখিয়ে দিচ্ছেন আর সেভাবেই খেলার চেষ্টা করছেন তামিম।
তামিম ইকবাল অবশ্য একেবারে গোঁড়া থেকেই শুরু করেছেন। নাফিসের আন্ডার আর্মে ছুঁড়ে দেয়া বল গুলো দিয়েই প্রথমে নোক লুক শট খেলতে শুরু করলেন তামিম। এরপর হয়তো সাধারণ ডেলিভারি গুলোতেও এই শট অনুশীলন করবেন। এরপরই কী ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজেও এই শট খেলবেন তামিম? সেটা তো সময়ই বলে দিবে।
তবে আপাতত হোম অব ক্রিকেটে নিয়মিত অনুশীলন করে যাচ্ছেন বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক। ডিসেম্বরেই বাংলাদেশে টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজ খেলতে আসছে ভারত দল। ওয়ানডে ফরম্যাটে বাংলাদেশ নিশ্চিয়ই নিজেদের চেনা ফর্মটা ধরে রাখতে চাইবে। এছাড়া ঘরের মাঠে ভারতের বিপক্ষে খেলা বলে চাপটাও হয়তো বেশি।
ঘরের মাঠে ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জিততে না পারলে বেশ চাপের মুখেই পড়তে হবেও ওয়ানডে অধিনায়ককে। এছাড়া তাঁর ব্যাটে রান থাকাটাও জরুরি। ভারতের বিপক্ষে নিশ্চয়ই সামনে থেকেই নেতৃত্ব দিতে চাইবেন তামিম। এছাড়া ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের প্রস্তুতিটাও ভারতকে হারিয়েই শুরু করতে চাইবে বাংলাদেশ।
যদিও সর্বশেষ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ হেরেছে বাংলাদেশ। সেটাকে স্রেফ একটা আপসেট হিসেবে দেখায় সমালোচনার হাত থেকে অনেকটাই রেহাই পেয়েছেন তামিম। তবে ভারতের বিপক্ষেও সিরিজ হারলে তামিম নিশ্চয়ই খুব একটা সুখকর অবস্থানে থাকবেন না।