যেমন হবে আর্জেন্টিনার শুরুর একাদশ

স্মরণকালের সবচেয়ে শক্তিশালী দল নিয়েই এবারের বিশ্বকাপে খেলতে এসেছে আর্জেন্টিনা। সাম্প্রতিক ফর্ম, দলগত বোঝাপড়া আর শক্তিমত্তার দিক দিয়ে কাতার বিশ্বকাপের ফেবারিট দল তাঁরা। লুসাইল স্টেডিয়ামে সৌদি আরবের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ যাত্রা শুরু করবেন লিওনেল মেসিরা।

লিওনেল স্কালোনি কোচের দায়িত্ব পাবার পর থেকেই ধীরে ধীরে ঢেলে সাজিয়েছেন আর্জেন্টিনাকে। ২০১৯ কোপা আমেরিকায় ব্রাজিলের কাছে হারের পর এখনও কোনো ম্যাচ হারেনি আসবিসেলেস্তেরা। টানা ৩৬ ম্যাচ অপরাজিত থাকার পাশাপাশি ২৭ বছরের শিরোপা খরা কাটিয়ে কোপা আমেরিকার শিরোপা জিতেছে আর্জেন্টিনা।

সাম্প্রতিক ফর্মটাও দারুণ তাঁদের, শেষ পাঁচ ম্যাচে ক্লিনশিট রাখার পাশাপাশি প্রতিপক্ষের জালে বল জড়িয়েছে ১৬ বার। বিশ্বকাপের শেষ প্রস্তুতি ম্যাচে আরব আমিরাতকে উড়িয়ে দিয়েছে ৫-০ গোলের বড় ব্যবধানে। সৌদি আরবের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচের আগে তাই ফুরফুরে মেজাজেই আছেন ডি মারিয়া-মেসিরা।

দায়িত্ব পাবার পর থেকেই আর্জেন্টিনাকে ৪-৩-৩ ফর্মেশনে খেলিয়েছেন লিওনেল স্ক্যালোনি। আগের দুই বিশ্বকাপে গোলকিপার এবং রক্ষণভাগ নিয়ে ভুগতে হলেও এবারের বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা রক্ষণভাগ আর্জেন্টিনার।

গোলবারে নিশ্চিতভাবেই শুরু করবেন এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। কোপা আমেরিকার সেমিফাইনালে কলম্বিয়ার বিপক্ষে টাইব্রেকারে জেতানোর পর সমর্থকদের নয়নের মণি তিনি।

ডিফেন্সে শুরু থেকেই খেলার কথা ক্রিশ্চিয়ান রোমেরো এবং নিকোলাস ওটামেন্ডি জুটির। তবে ইনজুরির কারণে রোমেরোর খেলা খানিকটা অনিশ্চিত, ফলে প্রথম ম্যাচের শুরুর একাদশে লিসান্দ্রো মার্টিনেজকে দেখা গেলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

একই কথা প্রযোজ্য লেফটব্যাক মার্কাস আকুনার ক্ষেত্রেও, সেভিয়াতে খেলা এই ফুটবলার ইনজুরিতে ভুগছেন। ফলে তাঁর জায়গায় নিকোলাস টাগলিয়াফিকোর খেলার সম্ভাবনাই বেশি। ডানপ্রান্তে খেলা নাহুয়েল মলিনা অবশ্য ফিট আছেন, ফলে তাঁর জায়গাটা নিয়ে কোনো অনিশ্চয়তা নেই আর্জেন্টিনা দলে। 

এবারের আর্জেন্টিনা দলে মিড ফিল্ডারের ছড়াছড়ি। যদিও ইনজুরির কারণে ছিটকে গেছেন স্কালোনির পছন্দের মিডফিল্ডার জিওভান্নি লো সেলসো। তাঁর জায়গায় দুরন্ত ফর্মে থাকা ব্রাইটনের অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টারের খেলার কথা।

এই মিডফিল্ডারের বাবা কার্লোস অ্যালিস্টার ম্যারাডোনার সাথে খেললেও কখনও বিশ্বকাপ খেলা হয়নি। ফলে ছেলের বিশ্বকাপ অভিষেক দেখে নিশ্চিভাবেই খুশি হবেন তিনি।

বাকি দুই পজিশনে অবশ্য লিয়ান্দ্রো পারেদেস এবং রড্রিগো ডি পলের জায়গাটা পাকা। পারেদেস খানিকটা নিচে থেকে ডিপ লাইয়িং প্লে মেকারের ভূমিকাটা পালন করবেন, প্রতিপক্ষের আক্রমণ নস্যাৎ করাই যার প্রধান কাজ। অন্যদিকে এই দলের ইঞ্জিন রড্রিগো ডি পল, বক্স টু বক্স মিডফিল্ডার হিসেবে খেলা এই ফুটবলার পুরো মাঠজুড়ে খেলতে ভালোবাসে।

মাঝমাঠ থেকে বল নিয়ে আক্রমণে সাহায্য করার পাশাপাশি ফুলব্যাকদের রেখে যাওয়া ফাঁকা জায়গা পূরণের দায়িত্বও বর্তাবে তাঁর কাঁধে। অন্যদিকে আক্রমণাত্নক মিডফিল্ডার হিসেবে থাকবেন ম্যাক অ্যালিস্টার। 

আক্রমণভাগে লিওনেল মেসির সঙ্গী হবেন অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া এবং লাউতারো মার্টিনেজ। মূলত রাইট উইংগার হলেও দলের প্রয়োজনে লেফট উইংগার হিসেবে খেলে থাকেন ডি মারিয়া।

দারুণ গতির পাশাপাশি কাটব্যাক করে বক্সের ভেতরে ঢুকতে তাঁর জুড়ি মেলা ভার। আক্রমণভাগের মাঝখানে স্ট্রাইকার হিসেবে খেলবেন লাউটারো মার্টিনেজ, বক্সের বাইরে আসার চাইতে বরং বক্সের ভেতরে আনাগোনা করতেই বেশি পছন্দ তাঁর।

বরাবরের মত আর্জেন্টিনার আক্রমণের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবেন লিওনেল মেসি। রাইট উইংগার হিসেবে খেলতে নামলেও তাঁর ভুমিকাটা আরও বিস্তৃত। দলের প্রতিটা আক্রমণের সুতিকাগার তিনি, গোল করা কিংবা করানো দুই ভুমিকাতেই তিনি দারুণ সফল।

গত তিন বছরে খেলা বেশিরভাগ ম্যাচেই শেষ হাসি হেসেছে আলবিসেলেস্তেরা। বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেও সৌদি আরবের বিপক্ষে সেই ধারা অব্যাহত রাখতে চাইবেন মেসিরা। 

  • আর্জেন্টিনার শুরু সম্ভাব্য একাদশ: এমিলিয়ানো মার্টিনেজ, নাহুয়েল মলিনা, ক্রিশ্চিয়ান রোমেরো, নিকোলাস ওটামেন্ডি, মার্কাস আকুনা, লিয়ান্দ্রো পারেদেস, রড্রিগো ডি পল, অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার, লিওনেল মেসি,লাউতারো মার্টিনেজ, অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link