এই ম্যাচের আগে টুর্নামেন্টে একটিও গোল করতে না পারা উরুগুয়ের জয় ছাড়া বিকল্প ছিলো না শেষ ম্যাচে। তবে নিজেদের কাজ ঠিকঠাক করলেও দক্ষিণ কোরিয়ার চমকে গ্রুপপর্ব থেকেই বাদ পড়লো দুই বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা।
শুরু থেকে আক্রমণাত্মক ছিল ঘানা। আর গুছিয়ে নিতে একটু সময় নেয় উরুগুয়ে। ম্যাচের প্রথম দিকে ঘানার সুযোগ এসেছিল চালকের আসনে বসার। ম্যাচের ১৮ তম মিনিটে কুদ্দুসকে ফাউল করেন রোচেত। ভিএআর এর সিদ্ধান্তে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। কিন্তু পেনাল্টি থেকে গোল করতে পারেননি আন্দ্রে আইয়ু। গোলরক্ষক রোচেত এর অসাধারণ সেভে সে যাত্রায় বেঁচে যায় উরুগুয়ে।
তবে ম্যাচের ২৬ তম মিনিটে ডি-বক্স থেকে লুইস সুয়ারেসের শট ঝাঁপিয়ে ব্যর্থ করে দেন গোলরক্ষক লরেন্স আটি-জিগি। তবে বিপদমুক্ত করতে পারেননি, ছুটে গিয়ে হেড করে আলগা বল জালে পাঠান জর্জিয়ান আররাসকায়েতা। আসরে এটাই উরুগুয়ের প্রথম গোল।
ছয় মিনিট পর ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ফ্লামেঙ্গোর এই মিডফিল্ডার। এই গোলেও অবদান সুয়ারেসের। তিনিই ডি-বক্স থেকে উঁচু করে বাড়ান বল। দারুণ ভলিতে দূরের পোস্ট দিয়ে জাল খুঁজে পান আররাসকায়েতা। দ্বিতীয়ার্ধে আরো আক্রমণাত্মক উরুগুয়ে। একের পর এক গোলের সুযোগ তৈরি করে তাঁরা। কিন্তু গোল ব্যবধান বাড়াতে পারেনি তারা।
৩ ম্যাচে মাত্র ২ গোল করে উরুগুয়ে। অন্যদিকে একই গ্রুপের আরেক ম্যাচে ড্র করলেই গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়া নিশ্চিত ছিলো পর্তুগালের। ম্যাচের শুরুতে দাপট দেখাতে থাকে পর্তুগাল। গোল পেতেও বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি তাদের। ম্যাচের ৫ মিনিটের মাথায় ডান পাশ থেকে ডিয়েগো দালোতের বাড়ানো ক্রসে দারুণ এক গোল করে পর্তুগালকে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে দেন রিকার্ডো হোর্তা।
এক গোল খেয়েই গোল শোধে মরিয়া হয়ে খেলতে থাকে দক্ষিণ কোরিয়া। যার ফল হিসেবে গোলের দেখা পায় তাঁরাও। ২৫ মিনিটে কর্ণার থেকে বল রোনালদোর কাঁধে লেগে কিম ইয়ং গিয়োনের পায়ে আসলে দারুণ এক শটে গোল করে দলকে সমতায় ফেরান তিনি। ৩৩ মিনিটে গোলের সুযোগ পায় পর্তুগালও। কিন্তু দালোতের শট রুখে দেন কোরিয়ার গোলরক্ষক। ১-১ গোলে ড্র নিয়ে বিরতিতে যায় দুই দল। দ্বিতীয়ার্ধেও আক্রমণ পাল্টা আক্রমণে জমে ওঠে খেলা।
দ্বিতীয় রাউন্ডে যাবার লড়াইয়ে টিকে থাকতে আক্রমণাত্মক খেলতে থাকে কোরিয়ানরা। দ্বিতীয়ার্ধে বেশি গোলের সুযোগ করে এশিয়ার প্রতিনিধিরাই। ম্যাচের যোগ করা সময়ে কোরিয়াকে লাইফ লাইন দেন হোয়াং। ২-১ গোলের অবিস্মরণীয় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে কোরিয়া। আর কোরিয়ানদের তুলনায় কম গোল করায় বিদায় নিতে হয় উরুগুয়েকে। যদিও গোল ব্যবধান একই ছিল দুই দলের।
জাপানের পর আবারো এশিয়ান ফুটবলের জয়জয়কার। কোরিয়ান রূপকথায় এবার হারলো পর্তুগীজরা। যদিও হেরেও গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে রোনালদোরা। অন্যদিকে হিসেবের মারপ্যাঁচে উরুগুয়েকে পেছনে ফেলে দ্বিতীয় পর্ব নিশ্চিত করে কোরিয়া। রাউন্ড অব সিক্সটিনের তাদের সম্ভাব্য প্রতিপক্ষ ব্রাজিল।