পিএসজি, বিশ্বকাপের আশীর্বাদ

একটা কাকতালীয়  ঘটনা ঘটে গেছে। প্রায় দীর্ঘ একটা অপেক্ষা শেষে লিওনেল মেসি জিতে নিয়েছেন পরম আরাধ্য বিশ্বকাপ ট্রফি। কতকাল ধরে এই দিনটার জন্যেই অপেক্ষমান ছিল গোটা ফুটবল বিশ্ব থেকে শুরু করে সয়ং ফুটবলের ক্ষুদে জাদুকর মেসি।

একটি বিশ্বকাপ শিরোপা যে তাঁর ক্যারিয়ারের পূর্ণতার পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়াচ্ছিল। অবশেষে সেটা জিতে তিনি বনে গেলেন ফুটবল আকাশের উজ্জ্বলতম নক্ষত্র। তবে এই বিশ্বকাপ জেতার মধ্য দিয়ে অদ্ভুত এক কাকতালীয় ঘটনার সাথে নিজেকে জড়িয়ে ফেললেন মেসি।

দীর্ঘকাল ধরে স্প্যানিশ ক্লাব বার্সেলোনার সাথে যুক্ত ছিলেন মেসি। ফুটবলের হাতেখড়ির সবটুকুই তো কাতালানদের ডেরায় বসে রপ্ত করেছিলেন তিনি। একটা প্রজন্মকে তাঁর অসাধারণ নৈপুণ্যের মোহজালে জড়িয়েছেন তিনি। ক্লাব পর্যায়ে যতসব অর্জন, সবই তো মেসি অর্জন করেছেন বার্সেলোনায় থাকাকালীন।

তবে, আন্তর্জাতিক ফুটবলের সবচেয়ে সম্মানীয় অর্জনটাই ছিল অধরা। গেল মৌসুমেই বার্সেলোনার সাথে দীর্ঘদিনের সম্পর্কের অবসান ঘটিয়ে ফ্রেঞ্চ ক্লাব প্যারিস সেইন্ট জার্মেইতে যোগ দেন ভীনগ্রহের ফুটবলার খ্যাত মেসি। ঠিক এখানটায় পূর্ণতা পায় দীর্ঘদিন ধরে চলা একটি কাকতালীয় ঘটনার।

পিএসজিতে যোগ দেওয়ার পরের বছরই মেসি জিতে নিলেন বিশ্বকাপ শিরোপা। এর আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে দুই দফা। ফুটবল ইতিহাসের ড্রিবলিং করাটা বেশ প্রসিদ্ধ এক শৈলী। প্রায় প্রতিটা খেলোয়াড় সেই শৈলী রপ্ত করতে চায়। তবে রোনালদিনহো যেন ছিলেন একেবারেই আলাদা।

তাঁর ফুটবলীয় কারুকার্য যেন ফুটবল মাঠে সৃষ্টি করতেন দৃষ্টিনন্দন এক চিত্রকর্ম। তিনিও বাধ্য করতেন অপলক দৃষ্টিতে চেয়ে থাকতে। ২০০১ সালে রোনালদিনহো প্রথমবারের মত পদার্পণ করেন ইউরোপে। তিনি সেবার গায়ে জড়িয়েছিলেন প্যারিস সেইন্ট জার্মেইয়ের জার্সি।

এক মৌসুম পরেই মাঠে গড়িয়েছিল বিশ্বকাপ। সেবার তরুণ ফুটবলার হিসেবে বিশ্বকাপের মঞ্চে পা রেখেছিলেন রোনালদিনহো। সেবার জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়াতে হওয়া সে বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ব্রাজিল।

নিজেদের পঞ্চম শিরোপাটা ঘরে তুলেছিল সেলেসাওরা। আর সে দলের সদস্য হিসেবে বিশ্বকাপ জেতার অংশীদারও হয়ে যান রোনালদিনহো। এই দুই গল্পেই থেমে নেই। আরও একবার পিএসজিতে যোগ দেওয়ার পরের বছরই শিরোপা জেতার ঘটনা ঘটে।

এবার নামটা কিলিয়ান এমবাপ্পে। ফ্রেঞ্চ ক্লাব এএস মোনাকো থেকে তরুণ তুর্কি হয়ে আরেক ফ্রেঞ্চ ক্লাব প্যারিস সেইন্ট জার্মেইতে যোগ দিয়েছিলেন কিলিয়ান এমবাপ্পে ২০১৭ সালে। ঠিক এর পরের বছরই রাশিয়াতে বসেছিল বিশ্বকাপের আসর।

সেবার ফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার প্রতিপক্ষ ফ্রান্স। ১৯৯৮ সালের পর আবারও বিশ্বকাপ জয়ের সুযোগ ফরাশিদের সামনে। মাত্র আঠারো বছর বয়সেই ফ্রেঞ্চের সেই বিশ্বকাপ দলে জায়গা করে নিয়েছিলেন এমবাপ্পে।

সে বিশ্বকাপে, ক্রোয়েশিয়াকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় ফ্রান্স। চার গোল করেছিলেন সেই বিশ্বকাপে এমবাপ্পে। তিনিই এই অদ্ভুত কাকতালের দ্বিতীয় উদাহরণ। এখন দেখবার পালা ২০২৬ বিশ্বকাপের আগে কোন তারকা বা উদীয়মান তারকা জড়ায় পিএসজির জার্সি। আগামী বিশ্বকাপের আগে প্যারিসের ক্লাবটিতে যোগ দেওয়ার একটা হিড়িক পড়ে গেলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link