২০২১ সালের শেষ দিকে অনুষ্ঠিত হবে পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ। পছন্দের দুই পেসার তাসকিন আহমেদ ও শরিফুল ইসলামের ছোটখাটো ইনজুরি ছিল। সেজন্যই দলে ডাকা হল একজন বাড়তি পেসার। ছেলেটার নাম রেজাউর রহমান রাজা। খোজ খবর নিয়ে জানা গেল উইকেট নেয়াতে বেশ পটু তিনি।
এরপর থেকে নিয়মিতই টেস্ট দলে থেকেছেন তিনি। তবে তাসকিন, এবাদত, খালেদদের টপকে কখনো মাঠে নাম হয়নি। তবুও বাংলাদেশ দলের নেটে গত একবছর ধরেই নিয়মিত তাঁর বোলিং দেখা যায়। তাঁর গতি ও বাউন্স বাংলাদেশের ব্যাটারদের ভোগায়ও। ফলে একটা ধারণা তৈরি হয় লাল বলের ক্রিকেটে ভালো প্রসপেক্ট হতে পারেন রাজা।
ব্যাস, এটুকুই। রেজাউর রহমান রাজা লাল বলের ক্রিকেটের জন্যই বিবেচিত ছিলেন। তিনি যে সাদা বলে কার্যকরী হতে পারেন সেই বিশ্বাসটাও হয়তো তেমন কারো ছিল না। তবে সিলেটের অধিনায়ক, বাংলাদেশের অন্যতম সেরা পেসার মাশরাফি বিন মর্তুজা রত্ন চিনতে ভুল করেননি।
রাজাকে নিজের দলে নিয়েছেন। প্রথম ম্যাচে রুবেল হোসেনকে না খেলিয়ে রাজাকেই খেলিয়েছেন। রাজাও মাশরাফির বিশ্বাসের প্রতিদান দিয়েছেন। অনেকদিন পর মাঠে নেমেও আরেকবার দেখা গেল অধিনায়ক মাশরাফির ম্যাজিক। ম্যাজিক দেখালেন রাজাও।
প্রথম ম্যাচে সুযোগ পেয়েই বাজিমাত। এবারের বিপিএলে যেন নিজের নতুন একটা পরিচয় তৈরি করতে চান তিনি। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে একাই নিলেন চার উইকেট। চার ওভার বল করে খরচ করেছেন মাত্র ১৪ রান। হয়েছেন ম্যান অব দ্য ম্যাচ। আর ম্যাচ শেষে ধন্যবাদ জানাতে ভুলেননি অধিনায়ক মাশরাফিকে।
সাদা বলেও যেন তিনি যথেষ্ট কার্যকর হতে পারেন সেটাই প্রমাণ করলেন আজ। মিরপুরের উইকেটকে কাজে লাগিয়ে সহজ জয় এনে দিলেন নিজের দল সিলেট স্ট্রাইকার্সকে। তাঁর এমন বোলিংয়ে মাত্র ৮৯ রানেই থেমেছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের ইনিংস। সহজ টার্গেট সিলেট পারি দিয়েছে ৮ উইকেট হাতে রেখেই। ওপেন করতে নেমে নাজমুল হোসেন শান্ত খেলেছেন ৪৩ রানের ইনিংস।
ম্যাচ জয়ের পর রাজার প্রশংসা করেছেন অধিনায়ক মাশরাফি নিজেই। জানিয়েছেন টানা ভালো বোলিং করার পুরষ্কার হিসেবেই তাঁকে রুবেলের জায়গায় নামানো হয়েছে। রাজা ভালো বোলিং করেছেন মাঠেও। লাল বলের ক্রিকেটার তকমা পাওয়া রাজা প্রমাণ করলেন সাদা বলেও। তাও আবার একটা ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টে।
রাজা গায়ে লাল বলের ক্রিকেটার তকমা লাগলেও সাদা বলে তিনি এর আগেও নিজেকে প্রমাণ করেছেন টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে। বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টিতে খেলেছিলেন মিনিস্টার রাজশাহীর হয়ে। সেখানেও ১৬ ম্যাচে তুলে নিয়েছিলেন ১৫ উইকেট।
উইকেট নিতে পারার একটা ক্ষমতা যে রাজার আছে সেটা তিনি নিয়মিতই প্রমাণ করেছেন। জাতীয় ক্রিকেট লিগ, ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগ কিংবা বিপিএল সব জায়গাতেই পারফর্ম করে যাচ্ছেন। লাল বলে তাঁর কার্যকারিতাটা অনেকেই জানেন। এবার বোধহয় তিনি বলতে এসেছেন- রিমেম্বার দ্য নেম রাজা, নট জাস্ট অ্যা রেড বল ক্রিকেটার।