১৫ জানুয়ারি, বিরাটের পয়া দিন

‘কুসংস্কার’ শব্দটা নিত্যদিনের। আমি, আপনি প্রতিদিনই শুনি। বিজ্ঞানের এই অগ্রযাত্রায় কুসংস্কার খুব নেতিবাচক ধ্যানধারণা। তবুও মানুষ বেশ কিছু রীতি মেনে চলে। কেউ কেউ আবার দিনক্ষণ মেনে চলে। অলুক্ষণে কিংবা শুভদিনের গল্পও সবারই জানা। সাত নম্বরটা কারও জন্য শুভ তো ১৩ নম্বর আবার অলুক্ষণে। তবে বিরাট কোহলির একটা প্রিয় দিন রয়েছে। সেটা ১৫ জানুয়ারি।

বিরাট কোহলি, কক্ষচ্যুত হয়েছিলেন। ২০১৯ এর পর। দীর্ঘ এক অপেক্ষার প্রহর তিনি গুণেছেন নিজের আগ্রাসী সেই ফর্মটা ফিরে পাওয়ার। তিনি অবশেষে ফিরে পেয়েছেন। তিনি আবারও নিয়ম করে তিন অঙ্কের দেখা পাচ্ছেন। ওয়ানডেতে সেঞ্চুরির অর্ধসেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে। তবে একটা কাকতালীয় ঘটনা ঘটেছে তাঁর সাথে। সেটা অবশ্য তথাকথিত অফ ফর্মের আগে টানা বছর তিনেক ছিল ধারাবাহিক।

মাঝে বিরাট রান পেয়েছেন। একেবারেই যে মলিন ছিলেন তা নয়। তবুও নিন্দা থেকে সমালোচনা সব কিছুই সয়েছেন বিরাট। এরপর ২০২৩ এর ১৫ জানুয়ারিতে তিনি দেখা পেলেন নিজের ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৪৬তম সেঞ্চুরির দেখা। ২০১৭, ২০১৮ ও ২০১৯ এ তিন বছরের প্রতিবার তিনি সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন এই ১৫ জানুয়ারিতে। মাঝের তিনটি বছর তো চলেছে সেঞ্চুরি খরা।

২০১৭ সালের সেঞ্চুরিটা তিনি পেয়েছিলেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। পুনেতে হওয়া সেই ম্যাচটিতে কোহলির ব্যাট থেকে এসেছিল ১২২ রান। ১০৫ বলের সেই ইনিংসটি জয়ের ভিত গড়ে দিয়েছিল ভারতকে। ৩৫১ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নামা ভারত সেদিন ম্যাচ শেষ করেই মাঠ ছেড়েছিল। বিরাটের ব্যাটিং নৈপুন্য সেদিনের বিশাল রান তাড়ায় এগিয়ে রেখেছিল গোটা ভারত দলকে।

এরপরের সেঞ্চুরিটা তিনি অবশ্য পেয়েছিলেন ভিন্ন ফরম্যাটে। দক্ষিণ আফ্রিকার সেঞ্চুরিয়নে হওয়া টেস্ট ম্যাচের নিজেদের প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন বিরাট কোহলি। দলের বাকিদের ব্যর্থতার দিনে হেসেছিল তাঁর ব্যাট। দলের পক্ষে ১৫৩ রান। যদিও সেই ম্যাচের ফলাফলটা ভারতের পক্ষে আসেনি। দক্ষিণ আফ্রিকা জয় পেয়েছিল লুঙ্গি এনগিডির নৈপুন্যে।

এরপর আবারও সাদা বলে রঙিন এক ইনিংস ধরা দেয় বিরাটের ব্যাটে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অ্যাডেলেডের সেই ম্যাচে ভারত রান তাড়া করতে নামে। ২৯৯ রানের টার্গেটটা মামুলি বানিয়ে ফেলেন বিরাট কোহলি। শুরুটা ভাল পেয়েছিল ভারত। সেই ভাল মোমেন্টামকে পুঁজি করে কোহলির ব্যাট থেকে আসে ১০৪ রান। সেই রানই জয়ের পথটা তৈরি করে দেয় ভারতের জন্য।

এরপর সেই অলক্ষুণে সময়। দীর্ঘ তিনটি বছর নেই কোন সেঞ্চুরির দেখা। এরপর সেঞ্চুরির দেখা পাওয়া শুরু হল। শেষ চার ওয়ানডে ইনিংসের তিনটিতে তিনি সেঞ্চুরির দেখা পান। আর তৃতীয় সেঞ্চুরিটি আসে ১৫ জানুয়ারি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সেই সেঞ্চুরি ভারতের সংগ্রহ নিয়ে যায় ৩৯০ তে। বিরাটের খেলা ১৬৬ রানের ইনিংসটি দ্রুততম দেড়শ রানের ইনিংস।

এই ১৫ জানুয়ারি নিশ্চয়ই ভীষণ রকম পয়া একটি দিন বিরাট কোহলির জন্য। এমনই কোন এক ১৫ জানুয়ারিতে হয়ত বিরাট পেয়ে যাবেন শততম সেঞ্চুরির দেখা। সেই দিনটির অপেক্ষায় নিশ্চয়ই সবাই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link