আকাশ ছোঁয়া প্রত্যাশা

নিজের জায়গায় দাঁড়িয়ে অফ স্ট্যাম্পের অনেক বাইরে পড়া বলটাকে টেনে কাউ-কর্নারের উপর দিয়ে পাঠালেন। আফিয়া প্রত্যাশার বিশাল এই ছয়ে দলীয় পঞ্চাশ রান পূর্ণ করলো বাংলাদেশ। যার ৩৯ রানই আবার এসেছে আফিয়ার ব্যাট থেকে। এরপর নিজের ব্যক্তিগত অর্ধশতকও পূরণ করেছেন ছয় মেরেই। বিশ্বকাপে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী দলকে উড়ন্ত শুরু এনে দেয়ার দায়িত্বটা যে তাঁর কাঁধেই।

আফিয়া প্রত্যাশা দেখালেন একেবারে ষোল আনা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ব্যাটিং। পেশির শক্তি আর আর মাথার পজিশন ঠিক রেখে কী করে পাওয়ার হিটিং করতে হয় তাঁরই নমুনা তাঁর ইনিংসে। সাথে পায়ের কাজও দুর্দান্ত। তাঁর ঝড়ো ইনিংসেই পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশ যুব নারী দল কোন উইকেট না হারিয়েই করেছে ৫২ রান।

এই ওপেনার শেষ পর্যন্ত থেমেছেন ৪৩ বল থেকে ৫৩ রান করে। তবে তিনি আউট হয়ে ফিরে গেলেও বাংলাদেশের রানের চাকা থেমে থাকেনি। এরপর বাংলাদেশকে বড় সংগ্রহের পথে নিয়ে গিয়েছেন দিলারা আক্তার ও স্বর্ণা আক্তার। দুজনে মিলে যেন আরও বেশি চড়াও হয়ে ওঠেন শ্রীলঙ্কার বোলারদের উপর।

দিলারা আক্তার মাত্র ২৭ বল থেকে খেলেন ৩৬ রানের ইনিংস। আর স্বর্ণা আক্তারও পেয়েছেন অর্ধশতকের দেখা। তিনি নিজের অর্ধশতক পূরণ করার জন্য খেলেছেন মাত্র ২৮ বল। ব্যাটিং করেছেন ১৭৮.৫৭ স্ট্রাইকরেটে। তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে ৪ চার আর ২ ছয়।

এই দুজনই অপরাজিত ছিলেন ইনিংসের শেষ বল অবধি। টস হেরে আগে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ ২০ ওভার শেষে করেছে ১৬৫ রান। উইকেট হারিয়েছে মাত্র দুটি। দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশকে হারাতে হলে বেশ কঠিন পরীক্ষাই দিতে হবে শ্রীলঙ্কাকে।

ওদিকে যুব নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেও জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সেই ম্যাচেও বাংলাদেশ তুলে নিয়েছিল সাত উইকেটের জয়। টপ অর্ডার ব্যাটারদের দৃঢ়তায় মিডল অর্ডারকে এখনও তেমন কোন পরীক্ষাই দিতে হচ্ছে না।

ওদিকে শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর পর আজ বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী দলের শরীরী ভাষাই যেন পাল্টে গিয়েছিল। একেবারে প্রথম বল থেকে আক্রমণ করেছে লংকান বোলারদের। আফিয়া প্রত্যাশা, দিলারা আক্তার, স্বর্ণা আক্রারদের সামনে যেন অসহায় হয়ে উঠেছিল শ্রীলঙ্কা।

ওদিকে এই ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে হারালেই নিশ্চিত বাংলাদেশের পরের রাউন্ডে খেলা। এরপর এই গ্রুপে বাংলাদেশের আরেক প্রতিপক্ষ হিসেবে আছে আমেরিকা। ফলে সেই ম্যাচে জিতলে অপরজিত গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই প্লে অফ খেলার সুযোগ দিশা বিশ্বাসদের সামনে।

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link