মানচিত্রের দিকে দেখলে দূরত্বটা প্রায় ১৭ হাজার কিলোমিটারের বেশি। কিন্তু বিশ্বকাপ এলেই যেন এক বিন্দুতে মিশে যায় মানচিত্রের দুই প্রান্তের দুটি দেশ। বিশ্বকাপের সময় আর্জেন্টিনা আর মেসিকে নিয়ে বাংলাদেশের উন্মাদনা শুধু আর্জেন্টিনা নয় পুরো বিশ্বের নজর কেড়েছিল। বিশ্বকাপ চলাকালীনই এমন সমর্থনের জন্য বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছিলেন আর্জেন্টাইন কোচ লিওনেল স্ক্যালনি।
বাংলাদেশের মানুষের ফুটবল সমর্থন অনেকটাই খেলোয়াড় কেন্দ্রিক। এর আগে ডিয়েগো ম্যারাডোনা বাংলাদেশের একটি প্রজন্মকে আর্জেন্টাইন ফুটবলের প্রতি আকৃষ্ট করেছিলেন। ম্যারাডোনার পর লিওনেল মেসি সেই আকর্ষণকে অন্য পর্যায়ে নিয়ে গেছেন।
ক্ষুদে জাদুকরের বিখ্যাত ১০ নম্বর জার্সিতে ছেয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি প্রান্ত। নিজের ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় অর্জনের পর লিওনেল মেসি মনে রেখেছেন প্রায় ১৭ হাজার কিলোমিটারের দূরের দেশটির সমর্থনের কথা।
বিশ্বকাপ জয়ের এক মাসেরও বেশি সময় পেড়োলেও এরপর আর কোনো গণমাধ্যমে কথা বলেননি মেসি। ক্যারিয়ারের পূর্ণতা দেয়া সেই শিরোপা জয়ের প্রায় ৪৫ দিন পর মেসি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন আর্জেন্টাইন গণমাধ্যম ওলেকে।
সেই সাক্ষাৎকারে মেসি স্মরণ করেছেন বাংলাদেশকেও, ‘হ্যাঁ, আমি দেখেছি (বাংলাদেশের সমর্থন)। সব জায়গায় ১০ নম্বর জার্সি, বিশ্বকাপ ফাইনালের আগে সোফি মার্তিনেজ (আর্জেন্টাইন সাংবাদিক) আমাকে দেখিয়েছিল। আর্জেন্টিনার ১০ নম্বর জার্সি এভাবে পৃথিবীর নানা প্রান্তে দেখা, সত্যিই দুর্দান্ত।’
বিশ্বকাপ জয়ের পর প্রথম আনুষ্ঠানিক সাক্ষাৎকারে মেসি তাঁর সেই স্বপ্ন যাত্রার দিক গুলোর কথা বলছিলেন। আর্জেন্টিনার মানুষের জন্য সেই দিন গুলো দারুণ উপভোগ্য ছিল বলে মনে করেন মেসি। মেসি আরো বলেন, আর্জেন্টিনার মানুষ তাদের ব্যক্তিগত দুঃখ-দুর্দশা ভুলে শুধু ফুটবল নিয়েই ভেবেছে। আর্জেন্টিনার মানুষের কথা বলার সময়ই সাক্ষাৎকারে উঠে আসে বাংলাদেশের মানুষের সমর্থনের কথা।
আর্জেন্টিনা আর মেসিকে নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের আবেগ ছু্ঁয়ে গেছে আর্জেন্টাইনদেরও। বিশ্বকাপ চলার সময়েই সমগ্র বাংলাদেশ জুড়ে আর্জেন্টিনার প্রতি প্রবল সমর্থনের খবর ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলোতে।
বাংলাদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে মেসির সাথে ঘনিষ্ঠ মানুষেরাও বাংলাদেশের প্রতি তাদের কৃতজ্ঞতার কথা জানান। বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসায় আপ্লুত আর্জেন্টাইনরা বিশ্বকাপ জয় উদযাপনের সময় আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েন্স আয়ার্সে উড়ান বাংলাদেশের পতাকাও।