টেস্ট প্রাসঙ্গিকতার সাধনা

মাত্র ২১ টেস্টের ক্যারিয়ার হলেও এর মাঝেই উত্থান-পতন দেখে ফেলেছেন ভারতের ওপেনার মায়াঙ্ক আগারওয়াল। দারুণ পারফর্ম করে যেমন আলোড়ন তুলেছিলেন গোটা বিশ্বে, তেমনি বাজে ফর্মের সুবাদে জাতীয় দলের বাইরেও চলে যেতে হয়েছে। তবে ঘরোয়া ক্রিকেটে যে গতিতে রান করছেন, তাতে খুব বেশিদিন তাঁকে উপেক্ষা করা কঠিন হয়ে যাবে নির্বাচকদের জন্য। 

এবারের রঞ্জি ট্রফিতে রীতিমতো রানবন্যা বইয়ে দিয়েছেন কর্ণাটকের এই ওপেনার। নয় ম্যাচে ৮২.৫০ গড়ে টুর্নামেন্ট সর্বোচ্চ ৯৯০ রান করেছেন এই তারকা। যদিও টুর্নামেন্ট শুরুর আগে নিজের সেট করা লক্ষ্য হতে ১৭০ রান কম করেছেন। তবে তাঁর ৯৯০ রানই পেরোতে পারেননি অন্য কোনো ব্যাটসম্যান। যদিও হতাশার জায়গা আছে আরো, দলকে শিরোপা জেতাতে পারেননি। তাঁর দল সৌরাষ্ট্রের কাছে হেরে বিদায় নিয়েছে সেমিফাইনাল থেকেই।

আগারওয়ালের লক্ষ্যটা ছিল ২০১৭-১৮ মৌসুমের পারফরম্যান্সকে ছাপিয়ে যাওয়া। সেবারের রঞ্জিতে ১১২০ রান করেছিলেন এই ওপেনার। মজার ব্যাপার হলো, সেবারেও সেমিফাইনাল থেকেই বিদায় নিয়েছিল তাঁর দল কর্ণাটক।

সেই পারফরম্যান্সই তাঁকে জায়গা করে দিয়েছিল ভারত জাতীয় দলের হয়ে ইনিংস উদ্বোধন করার। সেখানেই খুব একটা মন্দ করেননি, ৪১.৩৩ গড়ে টেস্টে তাঁর রানসংখ্যা ১৪৮৮। কিন্তু শুভমান গিল, লোকেশ রাহুলদের আবির্ভাবে ক্রমেই ছিটকে গেছেন জাতীয় দলের দৌড় থেকে।

তবে ঘরোয়াতে রানবন্যা বইয়ে দিয়ে আবারো জাতীয় দলে ফেরার দাবিটা জোরালো করছেন ৩২ বছর বয়সী এই ওপেনার। আগারওয়াল অবশ্য এতদূর ভাবছেন না, নিজের দায়িত্বটা তিনি পালন করে যেতে চান নিয়মিতভাবে। এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমি খুব বেশিকিছু ভাবছি না। রেস্ট অফ দ্য ইন্ডিয়ার হয়ে খেলায় আমার কিছু দায়িত্ব আছে এবং আমি সেই দায়িত্বটা ঠিকভাবে পালন করতে চাই।’

আগারওয়াল নিশ্চিতভাবে ইরানি ট্রফিতে মধ্যপ্রদেশের বিপক্ষে জয় তুলে নিতে চাইবেন। পাশাপাশি চাইবেন দারুণ পারফর্ম করে জাতীয় দলে ফেরার দাবিটা আরো জোরালো করতে। কর্ণাটকে তাঁরই সতীর্থ লোকেশ রাহুলের জাতীয় দলে সময়টা ভালো যাচ্ছে, হয়তো তাঁর জায়গাতেই খেলতে চাইবেন জাতীয় দলে। 

তিনি বলেন, ‘গত কয়েক বছরে আমি অনেক উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে গয়েছি। তবে আমি সেসব নিয়ে কিছু ভাবছি না। তবে আমার এই যাত্রায় অনেকেই সাহায্য করেছেন, বিশেষ করে আরএক্স মুরালি স্যার এবং আমার পরিবার। তাঁরা আমাকে কঠিন সময়ে সাহায্য করেছে। আমি দারুণ পারফর্ম করে তাঁদের আত্নত্যাগের প্রতিদান দিতে চাই।’

যদিও এক যুগ আগেই ইরানি ট্রফি তাঁর পুরনো আকর্ষণ হারিয়েছে। তবে জাতীয় দলে ফেরার জন্য ইরানি ট্রফি হতে পারে আগারওয়ালের জন্য দারুণ এক মঞ্চ। তাছাড়া রজত পাতিদার এবং আদিত্য শ্রীবাস্তবের অনুপস্থিতিতে তাঁর প্রতিপক্ষ দল মধ্য প্রদেশকে খানিকটা নড়বড়েই লাগছে। ডাগ আউটে নির্বাচক শিব সুন্দর দাসের উপস্থিতিও নিশ্চিতভাবে তাতিয়ে দেবে আগারওয়ালকে পারফর্ম করে নজর কাড়ার জন্য। 

আগারওয়াল নিশ্চিতভাবেই চাইবেন রঞ্জির ফর্মটা টেনে আনতে। এবারের মৌসুমে দুটো ডাবল সেঞ্চুরিও আছে তাঁর নামের পাশে। তবে সমালোচকদের মতে, এখনো ইনিংসের শুরুর দিকে খানিকটা নড়বড়ে লাগে আগারওয়ালকে। জাতীয় দলে ফিরতে ব্যাটিংয়ের এই দিকটা নিয়ে কাজ করতে হবে এই তারকাকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link