বলে বলে মারতে হবে!

সাগরিকায় ক্রিকেটারদের অনুশীলনের জন্য নেটগুলো টানানো হয় একেবারে গ্যালারির দেয়াল ঘেষে। ফলে গ্রিলের এপাশে দাঁড়িয়ে খুব কাছ থেকেই অনুশীলন দেখার সুযোগ পান সাংবাদিকরা। এমনকি ক্রিকেটার ও কোচদের কথাবার্তাও স্পষ্টই শোনা যায়। সেখানেই দেখা গেল পাশাপাশি নেটে ব্যাটিং করছেন রনি তালুকদার ও শামিম হোসেন পাটোয়ারি।

তৃতীয় ওয়ানডের আগে আজ চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের ছিল ঐচ্ছিক অনুশীলন। ওয়ানডে ম্যাচের চেয়ে টি-টোয়েন্টি দলের ক্রিকেটারদের নিয়েই যেন আজ বেশি সিরিয়াস বাংলাদেশের কোচরা। চটগ্রামে দলের সাথে ইতোমধ্যেই যোগ দিয়েছেন টি-টোয়েন্টি দলের ক্রিকেটাররা।

ওয়ানডে সিরিজ ইতোমধ্যেই হারতে হয়েছে বাংলাদেশকে। তবে টি-টোয়েন্টি সিরিজ নিয়ে এখনো আশা আছে বাংলাদেশের। সেজন্যই জোর প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ দল। তাঁরই অংশ হিসেবে নেটে পরীক্ষা করা হয়েছে রনি তালুকদারকে ও শামিম পাটোয়ারিকে।

দুজনের প্রতি নির্দেশনা ছিল পাওয়ার হিটিং করার। সেভাবেই ব্যাটিং শুরু করেছেন দুজনে। শামিম প্রায় প্রতিটা বলই চালিয়ে খেলছিলেন। রনি তালুকদারও নিশ্চিত কিছু বাউন্ডারি মেরেছেন। তবে এরপর আবার দুটি বল ডিফেন্স করেছেন এই ব্যাটার।

তখনই রনির দিকে তেড়ে আসেন জেমি সিডন্স। সিডন্স রনিকে বললেন, ‘রনি তোমাকে হিট করতে হবে, বাউন্ডারির জন্য খেল।’ রনি ভাঙা ভাঙা ইংরেজিতে সিডন্সকে বোঝাতে চাইলেন তিনি তো বেশ কয়েকটি বাউন্ডারি মেরেছেন। মাত্র দুইটা বল ডট দিলেন। তখনই যেন আরো ক্ষেপে গলেন এই কোচ। বললেন, ‘ইয়্যু হ্যাভ টু হিট এভ্রি বল রনি।’

আরেক নেটে ব্যাট করতে থাকা শামিম পাটোয়ারির জন্যও ছিল একই নির্দেশনা। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এবার নিজেদের একটা ব্র্যান্ড তৈরি করতে চায় বাংলাদেশ। আর সেজন্যই রনি, শামীমদের তৈরি করছে বাংলাদেশ দল। জানা যায় এই ক্রিকেটারদের অন্তত একবছর একটা পরিকল্পনায় রাখতে চায় দল।

টপ অর্ডারে পাওয়ার হিটিংয়ের জন্যই দলে ডাকা হয়েছে রনি তালুকদারকে। আর স্লগ ওভারে বাংলাদেশ কাজে লাগাতে চায় শামিম পাটোয়ারিকে। হয়তো ইংল্যান্ড সিরিজ থেকেই সেই পরিকল্পনা মত কাজ শুরু হবে।

যদিও ওপেনিং পজিশনে এখন রনির ডাক পাওয়াটা কঠিন। কেননা একপ্রান্তে নিশ্চিতভাবেই ওপেন করবেন লিটন দাস। আরেকপ্রান্তে নাজমুল হোসেন শান্তকেই খেলানোর কথা। এছাড়া শান্তকে তিনে খেলানো হলে, ওপেন করতে পারেন তৌহিদ হৃদয়ও। ফলে টপ অর্ডারে এই মহূর্তে জায়গা দেয়া কঠিন রনি তালুকদারকে। অবশ্য নতুন হেড কোচ চাইলে নিজের মত করেও শুরু করতে পারেন। সেটা অবশ্য টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু হলেই বোঝা যাবে।

ওদিকে এই ফরম্যাটে বাংলাদেশের একজন স্লগারের অভাব আছে সবসময়ই। ফলে শামিম পাটোয়ারিকে চাইলেই মাঠে নামাতে পারে বাংলাদেশ। এর আগেও বাংলাদেশের হয়ে খেলেছেন এই ব্যাটার। তাঁর ব্যাটের সুইং মুগ্ধ করেছিল সবাইকেই।

তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজের ধারাবাহিকতাটা ধরে রাখতে পারেননি এই ব্যাটার। যদিও এই পজিশনে একজন ব্যাটারের পক্ষে প্রতিদিন রান করা কঠিন। সেজন্যই হয়তো শামিমকে আরেকবার সুযোগ দিতে চায় বাংলাদেশ দল।

সবমিলিয়ে এই দুজনের অন্তর্ভুক্তি কিংবা অনুশীলনের পক্রিয়া দেখে বোঝা যাচ্ছে বাংলাদেশ এবার তাঁদের খেলার ধরণটাই পাল্টে ফেলতে চায়। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে আগ্রাসী রূপেই এখন থেকে মাঠে নামতে চায় হাতুরুর দল।

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link