দুই যুগের দীর্ঘ এক ক্যারিয়ার। এ সময়কালে অগণিত বোলারকে সামলেছেন শচীন টেন্ডুলকার। কিন্তু বাইশ গজের ময়দানে সবার সামনেই যেন শচীন ছিলেন এক দুর্ভেদ্য দেয়াল।
ক্যারিয়ারে ক্রেইগ ম্যাকডরমেট, অ্যালান ডোনাল্ড, শন পোলক, ওয়াসিম আকরাম, ওয়াকার ইউনুস, শোয়েব আখতার, ব্রেট লি, জিমি অ্যান্ডারসন, গ্লেন ম্যাকগ্রা, ডেল স্টেইনদের মতো বহু বাঘা বাঘা পেসারদের আগ্রাসন সামলেছেন।
বাইশ গজের সে সব লড়াইয়ে শচীনই আধিপত্য বিস্তার করতেন বেশি। তবে কোনো কোনো সময় তো শচীনও পরাস্ত হতেন। আর সে সব মুহূর্তে বোলারদের বাঁধভাঙ্গা উদযাপনের অনেক দৃশ্যও ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই নিয়েছে। তবে সে সময় বোলারদের খ্যাপাটে উদযাপনেও শচীনের তেমন প্রতিক্রিয়া মিলত না। আউট হয়ে গেলেই প্যাভিলিয়নের পথে হাঁটা ধরতেন তিনি । এটাই ছিল শচীনের চিরায়ত ধরন।
তবে শচীন টেন্ডুলকারও তো রক্তেমাংসে গড়া মানুষ। তাঁর মাঝেও ভাল লাগা, খারাপ লাগা অনুভূতি আছে। তো, বহু বছর আগে, একবার এক ইংলিশ পেসারের বলে আউট হয়েছিলেন শচীন। সেই ইংলিশ পেসার শচীনকে আউট করার পর খুব একটা খ্যাপাটে উদযাপনও করেননি। কিন্তু যা করেছিলেন, তা সে সময়ে বেশ দৃষ্টিকটু লেগেছিল শচীনের কাছে। ইংলিশ সে পেসারের নাম ইয়ান বোথাম।
বহু বছর বাদে সেই স্মৃতিই ফিরিয়ে এনেছেন শচীন। শচীনের ভাষ্যমতে, ‘১৯৯২ সালের বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ। ইয়ান বোথামের বলে আমি উইকেটরক্ষকের কাছে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়ে যাই। বোথাম সেদিন যে উদযাপনটা করেছিল, তা আমার মোটেই পছন্দ হয়নি। এমনকি এত বছর পরেও সেই ঘটনা আমার এখনও মনে আছে।’
কী এমন করেছিল ইয়ান বোথাম? যার কারণে এত বছর পেরিয়ে যাওয়ার পরেও শচীনের স্মৃতি থেকে তা সরে যায়নি। ১৯৯২ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের দেওয়া ২৩৭ রানের লক্ষ্যে তখন ব্যাট করছিল ভারত। শচীন তখন ক্রিজে ছিলেন ৩৫ রানে। ইংলিশদের ছুঁড়ে দেওয়া লক্ষ্যের পথে ভালভাবেই এগিয়ে যাচ্ছিল ভারত।
কিন্তু হঠাৎ শচীন আউট হয়ে গেলেন। পায়ের দিকে সুইং করে আসা ইয়ান বোথামের বলটাতে ঠিক মতো ব্যাটের সংযোগই ঘটাতে পারলেন না। ফলাফল আউটসাইড এজ হয়ে সোজা উইকেটরক্ষকের কাছে ক্যাচ। উইকেটের পিছনে থাকা অ্যালেক স্টুয়ার্ট সেই ক্যাচ গ্লাভসবন্দী করতে আর ভুল করেননি।
শচীনকে আউট করার পরপরই ইয়ান বোথাম মেতে ওঠেন ভিন্নধর্মী এক উদযাপনে। একই সাথে দুই হাত ঝাঁকিয়ে কটুক্তিময় একটি ভঙ্গি করেন। যেটি শচীন মোটেই ভাল ভাবে নেননি। তাৎক্ষণিকভাবে শচীন সেদিন প্রতিক্রিয়া না জানালেও বহু বছর বাদে সেই খারাপ লাগা অনুভূতির কথা অবশেষে প্রকাশ্যে এনেছেন দ্য লিটল মাস্টার।
১৯৯২ বিশ্বকাপে ভারত রাউন্ড রবিন লিগ থেকেই বিদায় নিয়েছিল। তবে ভারতের হয়ে সেবার সর্বোচ্চ ২৮৩ রান করেছিলেন শচীন।