রবীন্দ্র জাদেজা, স্যার অব কাম ব্যাক

গত মৌসুমে ভুলে যাবার মতো এক আইপিএল কাটিয়েছেন। মৌসুমের মাঝপথেই অধিনায়কত্বের দায়িত্ব ছাড়তে হয়েছে, পরে তো ইনজুরিতেই মাঠের বাইরে কাটিয়েছেন বড় একটা সময়। এবারের মৌসুমে রবীন্দ্র জাদেজা ফিরলেও পারফরম্যান্স ঠিক জাদেজাসুলভ ছিল না। তবে সময় গড়ানোর সাথে সাথে খোলস ছেড়ে বেরিয়ে জাদেজা জানান দিলেন এখনো আগের মতোই উজ্জ্বল এই তারকা। 

গত মৌসুমে মহেন্দ্র সিং ধোনির উত্তরসূরী হিসেবে চেন্নাই সুপার কিংসের অধিনায়কের দায়িত্ব পান রবীন্দ্র জাদেজা। এক যুগের বেশি সময় ধরে চেন্নাইতে খেলার সুবাদে তিনিও তো একপ্রকার চেন্নাইয়ের ঘরের ছেলেই বনে গেছেন। কিন্তু অধিনায়কত্বের চাপেই কিনা হুট করে নিজের স্বাভাবিক খেলাটা ভুলে গেলেন জাদেজা। দশ ম্যাচে ১১৫ রানের পাশাপাশি শিকার করেন মাত্র পাঁচ উইকেট। 

পথ হারালো চেন্নাই, আট ম্যাচে হেরে মৌসুমের মাঝপথেই বাধ্য হলেন অধিনায়কত্ব ছাড়তে। এরপর তো ইনজুরির কারণে দীর্ঘদিন মাঠের বাইরেই থাকতে হয়েছে। বড় একটা সময় মাঠের বাইরে কাটালেও পারফরম্যান্সে অবশ্য মরচে পড়েনি, জাতীয় দলের জার্সিতেই বুঝিয়ে দিয়েছিলেন সেটা। 

আইপিএলের সবকিছু ঠিকঠাকই ছিল, কিন্তু ২০২৩ আইপিএল শুরুর আগে চেন্নাই টিম ম্যানেজমেন্টের সাথে জড়িয়ে পড়েন ঝামেলায়। একপর্যায়ে তো জাদেজার দল ছাড়া মনে হচ্ছিল সময়ের ব্যাপার মাত্র, শেষপর্যন্ত ধোনির মধ্যস্থতায় চেন্নাইয়ের ডেরাতেই থেকে যেন এই তারকা। লাল বলের ক্রিকেটে তাই দুর্দান্ত পারফর্ম করলেও ইনজুরি আর মাঠের বাইরের সামলে আইপিএলে কতোটা মেলে ধরতে পারবেন জাদেজা এ নিয়ে সন্দিহান লোকের অভাব ছিল না। তাছাড়া গত মৌসুমের দুঃসহ স্মৃতিও তো ফিরে ফিরে আসছিলো বারবার। 

তবে গতবারের হতাশাজনক মৌসুমটা ভুলে যেতে এবারের বেশ আগে থেকেই দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিলেন এই অলরাউন্ডার। একদম শুরুতে ক্যাম্পে যোগ দিয়েছেন। ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বোলিং নিয়ে নিবিড়ভাবে কাজ করেছেন কোচদের সাথে। বোলিংয়ের তূণে নতুন তীর যোগ না করলেও ঝালিয়ে নিয়েছেন পুরনো অস্ত্রই। এবারের মৌসুমের শুরু থেকেই তাই ভিন্ন রূপে দেখা দিয়েছেন এই অলরাউন্ডার। 

শুরু থেকেই পারফরম্যান্স মন্দ না হলেও ঠিক জাদেজা সুলভ হচ্ছিল না। কোথাও যেন খামতি রয়ে গিয়েছে মনে হচ্ছিল, মহেশ থিকসানা কিংবা মঈন আলীদের ভীড়ে মনে হচ্ছিল জাদেজার স্পিনটা বুঝি অকার্যকরই রয়ে গেলো। কিন্তু সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের বিপক্ষে পুরনো রূপে ফিরে জাদেজা জানান দিলেন নিজের শ্রেষ্ঠত্বের। 

ঘরের মাঠে এদিন চেন্নাইয়ের বিপক্ষে হায়দ্রাবাদ ভালোই এগোচ্ছিল। কিন্তু মাঝের ওভারে জাদেজা বোলিংয়ে আসতেই এলোমেলো দলটি, তাঁর দুর্দান্ত বাঁহাতি স্পিনের কোনো জবাব ছিল না মার্করামের দলের। দুই সেট ব্যাটসম্যান অভিষেক শর্মা এবং রাহুল ত্রিপাঠির পাশাপাশি সাজঘরে পাঠান অভিজ্ঞ মায়াঙ্ক আগারওয়ালকে। সবমিলিয়ে মাত্র ২২ রানে তিন উইকেট শিকার করে একা হাতেই দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন এই তারকা। 

এবারের মৌসুমে জাদেজার শুরুটা মন্দ হয়নি। মৌসুমের বাকি সময়টা ফর্মটা ধরে রাখতে পারলে গত মৌসুমের দুঃসহ স্মৃতি মুছে যেতে খুব বেশিদিন সময় লাগবে না। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link