ইদানিং সীমিত ওভারে তাঁর ব্যাটিং অ্যাপ্রোচ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। তবে, এটা ঠিক যে ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই ব্যাট হাতে দারুণ ছন্দে আছেন পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর আজম।
বিশেষ করে ওয়ানডেতে বাবর যেন অপ্রতিরোধ্য। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে চতুর্থ ওয়ানডেতে সেঞ্চুরি হাঁকানোর পথে দ্রুততম পাঁচ হাজার রানের রেকর্ড গড়েন এই তারকা।
টপ অর্ডার নিয়ে পাকিস্তানের দুশ্চিন্তা বেশ পুরনো। তবে বাবরের আবির্ভাবের পর থেকে কিছুটা হলেও সে দুশ্চিন্তা কমেছে পাকিস্তানের ক্রিকেটপ্রেমীদের।
একদম শুরুর দিনগুলো থেকে বিরাট কোহলির সাথে তুলনা করা হয় বাবরকে। সবাই ভেবেছিলেন প্রত্যাশার চাপে হয়তো হারিয়ে যাবেন এই তরুণ। কিন্তু ব্যাট হাতে রানের ধারাটা বজায় রেখে বাবর সবাইকে ভুল প্রমাণ করেছেন।
২০১৫ সালে ওয়ানডেতে অভিষেক হয় বাবরের। মাত্র ৯৯ ম্যাচেই ১৮ সেঞ্চুরি আর ২৬ হাফ সেঞ্চুরিতে পাঁচ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন এই তারকা।
এর আগে কোনো ক্রিকেটারই ১০০ ইনিংসের আগে ওয়ানডেতে পাঁচ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করতে পারেননি। বাবর যার রেকর্ড ভেঙেছেন সেই হাশিম আমলাকে খেলতে হয়েছে ১০১ ইনিংস।
অন্যদিকে, ক্যারিয়ারের শুরু থেকে যার সাথে তুলনা করা হয়েছে বাবরের সেই বিরাট কোহলির পাঁচ হাজার রান করতে খেলতে হয়েছে ১১৪ ইনিংস। ক্যারিয়ারের শুরুতেই বিরাটকে পেছনে ফেলে বাবর যেন বুঝিয়ে দিলেন হারিয়ে যেতে আসেননি তিনি।
এছাড়া বাকি পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের চাইতেও যোজন যোজন এগিয়ে তিনি। পাঁচ হাজার রানের মাইলফলকে পৌঁছুতে সাইদ আনোয়ার এবং মোহাম্মদ ইউসুফকে অপেক্ষা করতে হয়েছিল ১৩৮ ইনিংস পর্যন্ত।
দ্রুততম চার হাজার রানের রেকর্ডও নিজের করে নেয়ার দৌঁড়ে এগিয়ে ছিলেন বাবর। কিন্তু তাঁর ৮২ ইনিংসের বিপরীতে হাশিম আমলার লেগেছিল ৮১ ইনিংস। তবে এবারে পাঁচ হাজার রানের মাইলফলকের ক্ষেত্রে আর সুযোগটা হারাননি।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে চতুর্থ ওয়ানডেতে এটা ছিল বাবরের ক্যারিয়ারের ১৮তম সেঞ্চুরি। ক্যারিয়ারের শুরুতে ধীরগতির ব্যাটিংয়ের জন্য খানিকটা সমালোচিত হলেও সময় এগোনোর সাথে সাথে খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসছেন এই তারকা।
কিউইদের বিপক্ষে ব্যাট করেছেন প্রায় একশো ছুঁইছুঁই স্ট্রাইক রেটে। ১১৭ বলে ১০৭ রানের ইনিংসে কোনো ছক্কা না থাকলেও চার মেরেছেন দশটি। তাঁর ব্যাটে ভর করেই ১০২ রানের বড় জয় পাকিস্তান। তাঁর নেতৃত্বেই প্রথমবারের মতো আইসিসি ওয়ানডে র্যাংকিংয়ের শীর্ষে উঠেছে পাকিস্তান।
কেবলমাত্র পাঁচ হাজার নয়, আমলার দ্রুততম ছয় হাজার এবং সাত হাজার রানের রেকর্ডও তাই রয়েছে হুমকির মুখে। তাঁর ছয় হাজার এবং সাত হাজার রান করতে লেগেছিল যথাক্রমে ১২৩ এবং ১৫০ ইনিংস। বাবর যে গতিতে এগোচ্ছেন তাতে ফর্মটা ধরে রাখতে পারলে এই দুটো রেকর্ডও নিজের করে নিতে বেগ পোহাতে হবে না।
এই বছরের শেষদিকেই ভারতের মাটিতে বসবে বিশ্বকাপের আসর। অধিনায়ক হিসেবে বাবরের কাঁধে তাই পারফর্ম করার বাড়তি দায়িত্ব। বাবর নিশ্চিতভাবেই তাই চাইবেন ফর্মটা ধরে রেখে পরম আরাধ্য বিশ্বকাপ পাকিস্তানের মাটিতে ফিরিয়ে আনতে।