কোহলির নামটাই তাতিয়ে দেয় নাভিনকে!

শুরুটা হয়েছিল রশিদ খানের হাত ধরে। এরপর থেকে আইপিএলে নিয়মিতই খেলছেন আফগান ক্রিকেটাররা। নূর আহমেদ, ফজল হক ফারুকী, রহমানুল্লাহ গুরবাজরা বেশ দাপটের সাথেই খেলছেন আইপিএলে।

তবে এবার যেন আফগান বাকি সবাইকে ছাপিয়ে গেছেন পেসার নাভিন উল হক। সেটা মাঠ আর মাঠের বাইরে দুই জায়গাতেই। নাভিনের সাথে বিরাট কোহলির দ্বন্দ্বটা পুরো আইপিএলেরই অন্যতম আলোচিত ইস্যু।

বিশ্ব ক্রিকেটের পোস্টার বয় বিরাটের সাথে নাভিনের চোখে চোখে রেখে লড়াই করাটা আফগানদের আত্মবিশ্বাসের প্রমাণ হিসেবেই দেখা যায়।

রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু আর লখনৌ সুপার জায়ান্টসের মধ্যকার ম্যাচে পুরোনো দ্বন্দ্বটাকে নতুন করে আলোচনায় এনেছিলেন বিরাট কোহলি ও লখনৌর মেন্টর গৌতম গম্ভীর। তবে গম্ভীরকে ছাপিয়ে বিরাটের বিরুদ্ধে সেদিন যেন লড়াইয়ে নেমেছিলেন নাভিন। বিরাটের সাথে কথার লড়াইয়ে জড়িয়েছিলেন চোখে চোখ রেখে।

ঘটনা সেখানেই থেমে থাকেনি। সেই ম্যাচের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নাভিন বুঝিয়ে দিয়েছেন বয়সে তরুণ হলেও ছেড়ে দেবার পাত্র নন তিনি। ইন্সটাগ্রামে পাল্টাপাল্টি স্টোরি দেয়া দিয়ে শুরু। এরপর নিজ মেন্টর গম্ভীরের সাথে ছবি শেয়ার করেও সেই ছবির ক্যাপশনে বিরাটকে এক প্রকার খোঁচা মারেন নাভিন।

এরপর ব্যাঙ্গালুরু যখনই ম্যাচ হেরেছে তখনই যেন বিরাটকে খোঁচা দেবার চেষ্টায় ছিলেন নাভিন। সরাসরি বিরাটকে কিছু না বললেও আকারে ইঙ্গিতে বিবাদটা এতদিন ধরে জিইয়ে রেখেছেন নাভিনই।

বিরাট এ নিয়ে কিছু বলার প্রয়োজন বোধ না করলেও বিরাটের সমর্থকরা তো ছেড়ে দেবার পাত্র নন। এলিমিনেটর ম্যাচে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে নাভিন যত বারই বোলিংয়ে গেছেন ‘বিরাট বিরাট’ ধ্বনিতে নাভিনকে স্লেজিং করে গেছেন দর্শকরা।

নাভিনও উত্তর দিয়েছেন সেই স্লেজিংয়ের। মুম্বাইয়ের বিরুদ্ধে দারুণ বোলিং তো করেছেনই, সাথে চার উইকেট শিকারের প্রতিটি উদযাপনই করেছেন কানে হাত দিয়ে। ভঙ্গিটা অনেকটা এমন যে বিরাটের নামে জয়ধ্বনি তিনি শুনতেই পাচ্ছেন না। এলিমিনেটরে না থেকেও তাই বারবার এসেছেন বিরাট কোহলি।

তবে ম্যাচ শেষে নাভিন জানালেন দর্শকদের এমন ‘বিরাট বিরাট’ চিৎকার বেশ উপভোগ করেছেন তিনি। নাভিন বলেন, ‘আমি উপভোগ করেছি এটি। মাঠে বিরাট বা অন্য কোনো খেলোয়াড়ের নামে দর্শকরা চিৎকার করলে আমার ভালো লাগে। এটি আমাকে আমার দলের জন্য ভালো করতে উৎসাহ দেয়।’

তবে এসব ঘটনাকে মাঠের বাইরেই রাখতে চাইলেন নাভিন। জানালেন তাঁর মাঠের পারফরম্যান্সে এসব প্রভাব ফেলতে পারে না।

নাভিন বলেন, ‘বাইরের কোনো শব্দ বা কোনো কিছুতেই আমি মনযোগ দেই না। আমি শুধুমাত্র আমার ক্রিকেটেই ফোকাস করি, নিজের প্রসেসে মনযোগ দেই। দর্শক চিৎকার করছে বা কেউ কিছু বলছে এসব আমাকে প্রভাবিত করে না।’

বিরাটের দ্বন্দ্বটা ছিল মূলত যার সাথে সেই গৌতম গম্ভীরের পাশে দাঁড়াতে গিয়েই মূলত বিরাটের সাথে বিবাদে জড়ান নাভিন। সেই বিবাদে জড়ানো নিয়ে সামান্য আক্ষেপ নেই তাঁর কন্ঠে। জানালেন তখন গম্ভীরের পাশে দাঁড়ানোয় গর্বিত তিনি।

নাভিন বলেন, ‘সবারই উচিত নিজের খেলোয়াড়দের পাশে থাকা। আমার যেকোনো পরিস্থিতিতে মাঠে আমার সতীর্থদের পাশে থাকব এবং আমি তাদের কাছেও এটিই প্রত্যাশা করি। গম্ভীর ভারতের একজন কিংবদন্তি। ভারতে তাঁর অনেক সম্মানের জায়গা রয়েছে। সে ভারতীয় ক্রিকেটকে অনেক কিছু দিয়েছে। একজন মেন্টর, কোচ ও কিংবদন্তি খেলোয়াড় হিসেবে আমি তাকে সম্মান করি এবং তাঁর কাছ থেকে অনেক কিছু শিখছি যে কিভাবে মাঠ এবং মাঠের বাইরে আমাকে চলতে হবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link