বিশ্বের সেরা টি-টোয়েন্টি ফ্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট হিসেবে আইপিএলের নামই বলবেন সবাই। তবে খানিকটা দেরিতে শুরু হলেও পাকিস্তান প্রিমিয়ার লিগ (পিএসএল) জনপ্রিয়তায় খুব বেশি পিছিয়ে নেই, বরং উন্নতি করছে প্রতিনিয়ত। আইপিএল এবং পিএসএলের এবারের আসরের ফাইনালে তো লক্ষ করা গেছে আশ্চর্যজনক মিল।
২০২৩ সালের আইপিএল এবং পিএসএল ফাইনাল যেন এসে মিলেছে এক বিন্দুতেই। দুই টুর্নামেন্টেই উদ্বোধনী ম্যাচে মুখোমুখি হওয়া দলগুলোই ফাইনাল খেলেছে। পিএসএলের ফাইনালে শাহীন আফ্রিদির লাহোর কালান্দার্সের বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল মোহাম্মদ রিজওয়ানের মুলতান সুলতান্স। অন্যদিকে, আইপিএলের ফাইনালে মহেন্দ্র সিং ধোনির চেন্নাই সুপার কিংসের প্রতিপক্ষ ছিল হার্দিক পান্ডিয়ার গুজরাট টাইটান্স।
কেবলমাত্র উদ্বোধনী ম্যাচ কিংবা ফাইনাল নয়, দুই টুর্নামেন্টেই কোয়ালিফায়ারেও মুখোমুখি হয়েছিল এই দুই দল। দুই টুর্নামেন্টের ফাইনালেই শেষ ওভারে ১৩ রান দরকার ছিল পরে ব্যাট করা দলের। দুই ম্যাচেই ফলাফল নিষ্পত্তির জন্য খেলা গড়িয়েছিল শেষ বল পর্যন্ত।
তবে, পিএসএলের ফাইনালে জামান খান শেষ বলে বাউন্ডারি হজম না করলেও আইপিএলের ফাইনালে ঠিকই বাউন্ডারি মেরে দলকে জিতিয়ে ফেরেন রবীন্দ্র জাদেজা।
এছাড়া দুই চ্যাম্পিয়ন চেন্নাই সুপার কিংস এবং লাহোর কালান্দার্স দুই দলই টস জিতেছিল এবং পরে জিতে নেয় ম্যাচটাই। দুই ম্যাচেই আগে ব্যাট করা দল দুইশো রানের বেশি লক্ষ্য ছুঁড়ে দিয়েছিল প্রতিপক্ষকে।
দুই ম্যাচেই চার দলের কমপক্ষে একজন করে ব্যাটসম্যান শূন্য রানে আউট হয়েছেন। চেন্নাইয়ের মহেন্দ্র সিং ধোনি, গুজরাটের রশিদ খান, লাহোরের আহসান হাফিজ এবং মুলতানের উসামা মীর প্রত্যেকে ফিরেছেন রানের খাতা খোলার আগেই।
এর বাইরেও দুই ম্যাচেই দুজন করে ব্যাটসম্যান ফিফটি করেন। গুজরাটের পক্ষে সাই সুদর্শন এবং ঋদ্ধিমান সাহা পঞ্চাশ পেরোনো ইনিংস খেলেন। অন্যদিকে, পিএসএলের ফাইনালে লাহোরের আব্দুল্লাহ শফিক এবং মুলতানের রাইলি রুশো ফিফটি করেন। একমাত্র চেন্নাই সুপার কিংসের কোনো ব্যাটসম্যান ফিফটির দেখা পাননি।
এবারের আইপিএলের ফাইনাল জিতে পঞ্চম বারের মতো শিরোপা জেতার রেকরড গড়লো চেন্নাই সুপার কিংস। বৃষ্টি বাঁধায় প্রথমদিন ভেস্তে গেলে খেলা গড়ায় রিজার্ভ ডেতে। সেখানেও বৃষ্টি বাঁধায় ডিএলএস মেথডে ১৫ ওভারে ১৭১ রানের লক্ষ্যমাত্রা পায় চেন্নাই।
ডেভন কনওয়ে এবং রুতুরাজ গায়কোয়াড়ের ঝড়ো উদ্বোধনী জুটি সত্বেও মাঝের ওভারে পথ হারায় চেন্নাই। এক পর্যায়ে শেষ দুই বলে জয়ের জন্য দশ রান প্রয়োজন ছিল দলটির। সবাই গুজরাটকে সম্ভাব্য চ্যাম্পিয়ন ভাবলেও খেলার চিত্রনাট্য বদলে দেন রবীন্দ্র জাদেজা। শেষ দুই বলে ছক্কা এবং চার হাঁকিয়ে দলকে এনে দেন মনে রাখার মতো এক জয়।
বৃষ্টিতে বারবার বাঁধাগ্রস্ত হলেও তাই আইপিএলের এবারের আসরের ফাইনাল গোটা ফ্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি ইতিহাসেরই অন্যতম সেরা ফাইনাল হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে দর্শকদের মনের মণিকোঠায়।