দুলছে এশিয়া কাপের ভাগ্য, অন্ধকারে বাংলাদেশ

সবাই যেন তীর্থের কাকের মত অপেক্ষমান। নানান রকম গুঞ্জন আর উৎকণ্ঠা লেপ্টে আছে এশিয়া কাপকে। কোথায় হবে, কখন হবে সেসবের যেন নেই কোন উত্তর। এমনকি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) প্রধান কার্যনির্বাহী কর্মকর্তা নিজামউদ্দীন চৌধুরীও জানেন না সঠিক কোন তথ্য।

তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত নির্দিষ্ট কোন নির্দেশনা পাইনি। আমরা যেটা বলতে পারি এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি) ও মেম্বার দেশগুলোর মধ্যে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রয়েছে এবং আমরা চেষ্টা করছি বিষয়টাকে যত তাড়াতাড়ি সমাধান করার জন্যে।’

এটা নিশ্চয়ই জানার বাকি নেই কারো। ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দের মাঝে যাতাকলে পিষছে এশিয়া কাপ। দিনক্ষণ ঠিক হচ্ছে না। জানা যাচ্ছে না ভেন্যু। দোটানায় এসিসির অধীনস্ত সকল ক্রিকেট বোর্ড। ভারতের অনীহা উপেক্ষা করার উপায় নেই। অন্যদিকে পাকিস্তানও নিয়ে রেখেছ হুমকি।

পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড নাখোশ বিসিবি সহ শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের উপর। এমন খবরও নিত্যদিন শোনা যাচ্ছে। যদিও এই বিষয়টি রীতিমত ভিত্তিহীন বলেই দাবি করেছেন নিজামউদ্দীন। তিনি বলেন, ‘এই ধরণের বিষয়েও আমরা অবগত না। আমাদের সবার সাথেই নিয়মিত যোগাযোগ হয়। আমাদের সবার সাথেই নানা বিষয়ে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ হয়।’

কিন্তু এই দোটানার অবসান অতিসত্তর হওয়া প্রয়োজন। সেই বিষয়টিও নিশ্চয়ই আমলে নিয়েছে বাকি ক্রিকেট বোর্ডগুলো। কেননা বিশ্বকাপের ঠিক আগ মুহূর্তে এশিয়ার এই শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইটা ভীষয়ণ প্রয়োজনীয়। বিশেষ করে শিরোপা প্রত্যাশি দলগুলোর জন্যে। প্রস্তুতির এর থেকে ভাল মঞ্চ আর হতে পারে না। সেই সুরেই তাল মিলিয়েছেন বিসিবি সিইও।

তিনি বলেন, ‘এশিয়া কাপ তো হতে হবে। এসিসির সব সদস্যের জন্যে এশিয়া কাপ গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বকাপকে লক্ষ্য করেই কিন্তু এশিয়া কাপ পরিকল্পনা করা। যে ফরম্যাটে ক্রিকেট বিশ্বকাপ হবে, এশিয়া কাপটাও সেই ফরম্যাটেই হবে। সেদিক থেকেও আমাদের জন্যে গুরুত্বপূর্ণ। শুধু আমাদের জন্যে না এশিয়া কাপ সবার জন্যেই গুরুতপূর্ণ।’

বিশ্বকাপের ঠিক আগ মুহূর্ত বহুজাতিক এই টুর্নামেন্টকে ঘিরে বাড়তি পরিকল্পনা ছিল সবার। তাছাড়া দলগুলোর এফটিপিতেও আলাদা জায়গা রয়েছে এই টুর্নামেন্টের। সেদিক বিবেচনায় দ্বিপাক্ষিক সিরিজ আয়োজন করাও কষ্টসাধ্য হয়ে যেতে পারে।

তাছাড়া এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের এই নিয়মিত আয়োজনে ব্যাঘাত ঘটলে স্বাভাবিকভাবেই নেতিবাচক প্রভাব পড়বে সর্বত্র। এর সাথে আবার পাকিস্তানের বিশ্বকাপের ভবিষ্যতও জড়িয়ে আছে। পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের উপরও বিরুপ প্রভাব ফেলতে পারে এই দোলাচল। নিরপেক্ষ ভেন্যুতে এশিয়া কাপ আয়োজন করতেও পাকিস্তানের পক্ষ থেকে হাইব্রিড মডেল প্রস্তাবনা করা হয়েছিল।

লোকমুখে বাংলাদেশকেও ভেন্যু হিসেবে ব্যবহার করতে চায় পিসিবি এমন কথা প্রচলিত ছিল। কিন্তু এই কথা কখনো শোনেননি বলে জানিয়েছেন নিজামউদ্দীন। তিনি বলেন, ‘না, এই ধরণের কোন প্রস্তাব আনুষ্ঠানিক বা অনুষ্ঠানিকভাবে করেছে কি-না আমি জানি না।’

ভারত-পাকিস্তানের এই দ্বন্দ শেষ হওয়া প্রয়োজন। দ্রুতই শেষ হওয়া প্রয়োজন। এক্ষেত্রে বাকি থাকা ক্রিকেট বোর্ডগুলো খানিকটা নিরব সময়ই পার করছে। তারা যেন অপেক্ষায় এসিসি আর ভারত-পাকিস্তানের সিদ্ধান্তের। এত আলোচনা শেষে ঠিক কবে নাগাদ এশিয়া কাপ মাঠে গড়াবে সেই উৎকণ্ঠার অবসান সহসাই ঘটছে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link