মেসিকে হারিয়ে বার্সেলোনার প্ল্যান বি

ইউরোপীয় ক্লাব মৌসুম প্রায় শেষ। সামনেই গ্রীষ্মকালীন দলবদলে ব্যস্ত হয়ে পড়বে দলগুলো। দলবদলের প্রস্তুতির পুরো সময়টাতেই লিওনেল মেসির প্রত্যাবর্তন নিয়েই ব্যস্ত ছিল বার্সেলোনা। কিন্তু সব পরিকল্পনাই ভেস্তে গেছে বার্সার। বার্সেলোনাতে আর ফেরা হয়নি মেসির। সব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ইন্টার মিয়ামিতে যোগ দিয়েছেন এই ক্ষুদে জাদুকর।

মেসিকে দলে আনতে ব্যর্থ হওয়াতে তাই এখন আগামী মৌসুমের জন্য দল গোছাতে নতুনভাবে পরিকল্পনা শুরু করেছে কাতালানরা। এই মৌসুম শেষেই ক্লাব ছাড়ছেন বার্সা অধিনায়ক সার্জিও বুস্কেটস। বার্সার মধ্যমাঠে দীর্ঘদিন ধরে আস্থা জোগানো বুস্কেটসের বিদায়ে তাই শূন্যস্থান তৈরি হচ্ছে সেই জায়গাটায়।

তাই মেসিকে দলে ফেরানোর প্রজেক্ট ব্যর্থ হবার পর বার্সেলোনার পুরো মনযোগ এখন বুস্কেটসের বদলি খুঁজে বের করা। বুস্কেটসের জায়গায় কেমন মিডফিল্ডার চান সেই চাহিদাপত্রও প্রস্তুত আছে জাভির কাছে।

এক সংবাদ সম্মেলনে জাভি বলেছিলেন, ‘এমন একজনকে আমাদের লাগবে সে অনেকটা পরিপূর্ণ এবং দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারে, এমন একজন যে মুখোমুখি পজিশন থেকে বল ছিনিয়ে নিতে পারে, যে কৌশলগত ভাবে দারুণ বুদ্ধিমান হবে এবং টেকনিক্যালি পরিষ্কার হবে।’

বেশ কিছুদিন ধরেই তাই মিডফিল্ডার খোঁজ করছেন বার্সা কোচ জাভি। মার্টিম জুবিমেন্ডি ও জশুয়া কিমিচ ভালোভাবেই ছিলেন ন্যু ক্যাম্প আসার আলোচনায়। তবে প্রাথমিকভাবে আলোচনায় থাকলেও আপাতত এই দুই মিডফিল্ডারেরই বার্সায় আসার সম্ভাবনা কম বলেই মনে হচ্ছে।

এদিকে পর্তুগীজ মিডফিল্ডার রুবেন নেভেসও আছেন বার্সেলোনার সম্ভাব্য তালিকায়। যদিও নেভেসকে খুব একটা পছন্দ নয় জাভির। চলতি মৌসুমে লা লিগা জিতলেও মাঝ মাঠে সৃজনশীলতার বেশ অভাব পরিলক্ষিত হয়েছে কাতালানদের। তাই আপাতত মাঝ মাঠেই বেশি মনযোগ দিতে চাচ্ছেন জাভি।

তরুণ পেদ্রি বেশ ভালো সম্ভাবনা দেখালেও ইনজুরির কারণে তাকে অনেকটা সময়ই পাননি জাভি। তাই মাঝ মাঠে প্লে মেকিং পজিশনে নতুন কাউকে দলে ভেরানোর বিকল্প নেই বার্সার সামনে। তবে মিড ফিল্ডার না হয়ে তেমন মাপের কোনো উইংগার হলেও হয়ত আপাতত সমস্যা সমাধান হতে পারে জাভির।

বার্সেলোনার জন্য তেমন একজন খেলোয়াড় হতে পারেন ম্যানচেস্টার সিটির ইল্কে গুন্দোয়ান। এই মৌসুম শেষেই ম্যানসিটির সাথে চুক্তি শেষ হচ্ছে এই মিডফিল্ডারের। তাই জাভি এই মিডফিল্ডারের দিকে আগ্রহী হন কিনা সেটিই দেখার বিষয়।

এছাড়াও রাইট ব্যাক পজিশনটাও আপাতত শূন্য বার্সার। সেন্টার ব্যাক পজিশনে খেলা জুলস কুন্দেকে রাইট ব্যাকে খেলিয়ে কাজ চালিয়ে নেয়া গেলেও দীর্ঘমেয়াদে তা নিয়ে ভুগতে হতে পারে জাভিকে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের মত আসরে সাফল্য পেতে প্রতিটি পজিশনেই স্পেশালিস্ট খেলোয়াড় প্রয়োজন। ফ্রান্সের বেঞ্জামিন পাভার্ড, জোয়াও কেন্সেলো, ভেন্ডারসনদের মত রাইটব্যাকরাও মৌসুম শেষে থাকতে পারেন দলবদলের বাজারে।

বেশ কয়েকটি পজিশনে নতুন খেলোয়াড় ভেড়ানোর প্রয়োজন হলেও আর্থিক টানাপোড়েনই এগোতে দিচ্ছে না বার্সাকে। এছাড়াও লা লিগার আর্থিক নীতিমালার বেড়াজালেও অনেকটা আটকা বার্সা। তবে আপাতত মিডফিল্ড ও রাইট ব্যাক পজিশনের জন্য কাউকে খুব শীঘ্রই দরকার জাভির। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে প্রায় আট বছরের ব্যর্থতা জাভির হাতেই ঘুচবে কিনা সেটি অনেকটাই নির্ভর করছে এবারের দলবদলের ওপর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link