সাত বছরের অধিনায়কত্বে ৬৮ টেস্টে ৪০টি জয়। টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসের চতুর্থ সফল অধিনায়ক হয়েও কেন বিরাট কোহলি নেতৃত্ব ছেড়েছিলেন, তা নিয়ে জল্পনা কল্পনার শেষ নেই।
গুঞ্জন আছে, তৎকালীন বোর্ড অব কনট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়ার (বিসিসিআই) সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলির সাথে শীতল সম্পর্কের জেরেই নেতৃত্ব ছেড়েছিলেন বিরাট কোহলি। কিন্তু, সৌরভ গাঙ্গুলি বরাবরই বলে এসেছেন, ‘বিরাট কোহলির সেটা ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত ছিল।’
এবার ভারতীয় এক গণমাধ্যম ‘আজতাক’-এ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিরাটের নেতৃত্ব ছাড়ার প্রসঙ্গে একই সুরে কথা বলেছেন ভারতের সাবেক এ অধিনায়ক। একই সাথে কিছু নতুন তথ্যও ছিলেন প্রিন্স অব ক্যালকাটা।
তিনি বলেন, ‘বিরাট কোহলির নেতৃত্ব ছাড়ার ইস্যুতে আমরা অবগত ছিলাম না। বলতে পারেন, ঐ সময়ে বিরাটের সিদ্ধান্তে আমরা প্রস্তুত ছিলাম না। এটা নিয়ে এখন বলার কিছু নেই। বিরাট নেতৃত্ব ছেড়েছিল। আমাদের ঐ সময়ে রোহিত শর্মা ছাড়া আর কাউকে বেশি যোগ্য মনে হয়নি। তাই রোহিতকে নতুন অধিনায়কত্বের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।’
২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর সর্বপ্রথম টি-টোয়েন্টির নেতৃত্ব ছেড়েছিলেন বিরাট কোহলি। সৌরভ গাঙ্গুলির দাবি, ‘কোনো ফরম্যাট থেকেই নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়াতে বিরাটকে বাধ্য করা হয়নি। নেতৃত্ব ছাড়ার বিষয়টি তাঁর একান্ত ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তই ছিল।’
বিরাট কোহলি আর সৌরভ গাঙ্গুলির দ্বন্দের সূত্রপাত ওয়ানডের অধিনায়কত্ব থেকে বিরাটকে সরানোর মাধ্যমে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর সাদা বলের ক্রিকেটে ভিন্ন অধিনায়ক থাকা উচিৎ নয়, এই যুক্তিতে বিরাটকে সরিয়ে রোহিত শর্মার কাঁধে নেতৃত্ব তুলে দেয় বিসিসিআই।
আর এরপরই সৌরভ গাঙ্গুলিকে ইঙ্গিত করে নিজের ক্ষোভ জানান বিরাট কোহলি। তিনি দাবি করেন, তাঁকে না জানিয়েই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে বিতর্ক আর সমালোচনার মধ্যেই তখনকার সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলি স্বপক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেছিলেন, ‘নির্বাচকেরা সাদা বলের ক্রিকেটে দুজন আলাদা অধিনায়ক রাখতে চাননি বলেই এমন সিদ্ধান্ত।’
সাদা বলের ক্রিকেটে নেতৃত্ব হারালেও টেস্ট ক্রিকেটে তখন পর্যন্ত অধিনায়ক ছিলেন বিরাটই। এ নিয়ে বিসিসিআইয়ের তরফ থেকেও কোনো আপত্তি ছিল না।
কিন্ত গত বছরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ হারার পর সবাইকে চমকে দিয়ে অধিনায়কত্ব থেকে সরে দাঁড়ান বিরাট কোহলি। এরপর রোহিতকে দায়িত্ব দেয় ভারত। গাঙ্গুুলি মনে করেন, সেই সিদ্ধান্তটা ওই প্রেক্ষাপটে যৌক্তিক ছিল।
তিনি বলেন, ‘ওই সময় রোহিতই সেরা বিকল্প ছিল। পাঁচটা আইপিএল জিতেছে। এশিয়া কাপ জিতেছে। ওভালে হেরে গেলেও দলকে ফাইনালে তুলেছিল। রোহিত আর ধোনিই শুধু পাঁচটা আইপিএল জিতেছে। আর আইপিএল জয় অনেক ক্ষেত্রে বিশ্বকাপ জয়ের চেয়ে কঠিন। আমার পূর্ণ আস্থা ছিল রোহিতের প্রতি।’