লম্বা সময় পরে মাঠে দেখা গিয়েছে জাভেদ ওমর বেলিম, আকরাম খানরা। ভাববেন না অবসর ভেঙে বুঝি এই বুড়োরা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরে এসেছেন; মূলত আমেরিকার মাটিতে আমন্ত্রণ পেয়ে খেলতে নেমেছিলেন তাঁরা।
বাংলাদেশ লেজেন্ডসের ব্যানারে লড়াইয়ে নামলেও জয়ের হাসি হাসতে পারেননি; ৫৯ রানের ব্যবধানে হেরেছে দলটি। ওখানকার স্থানীয় বাংলাদেশিদের নিয়ে গড়া নিউইয়র্ক বাংলাদেশ টাইগার্সের মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ লেজেন্ডস।
বেইসলি পন্ডস পার্ক ক্রিকেট পিচে অনুষ্ঠিত ম্যাচে টসে জিতে আগে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন নিউইয়র্ক বাংলাদেশ টাইগার্সের অধিনায়ক জারিফ আকিফ। ব্যাট হাতে দলকে এগিয়ে নেয়ার কাজটাও করেন আকিফ। মাত্র ৩৬ বলে হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি।
জারিফ আকিফের অর্ধশতকে ভর করে নির্ধারিত বিশ ওভারে আট উইকেট হারিয়ে ১৬৭ রান করে নিউইয়র্ক বাংলাদেশ টাইগার্স। বাংলাদেশ লিজেন্ডসের হয়ে চার ওভার হাত ঘুরিয়ে ২২ রানের বিনিময়ে দুই উইকেট শিকার করেছিলেন তাপস বৈশ্য।
১৬৮ রানের টার্গেটে ব্যাটিং করতে নেমে পুরনো আমলের মত রয়েসয়ে খেলতে থাকেন জাভেদ ওমররা। শেষপর্যন্ত বিশ ওভারে ১০৮ রানে থেমে যায় বাংলাদেশ লিজেন্ডস; সর্বোচ্চ ৩৭ রান আসে ওপেনার জাভেদ ওমরের ব্যাট থেকে, যদিও এই রান করতে তাঁকে মোকাবিলা করতে হয়েছে ৫৫ বল।
বোলারদের মধ্যে আকরাম ইসলাম তিন উইকেট তুলে নিয়ে হয়েছেন সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি। অর্থ কিংবা খ্যাতি; বর্তমান ক্রিকেটাররা যতটুকু পাচ্ছেন সেটার সিকিভাগও ১৯৯০ বা ২০০০ সালের দিকে ছিল না।
তবু, ব্যাট বলের প্রতি ভালবাসা থেকে খেলেছেন আকরাম খান, তাপস বৈশ্যরা। এখনো সেই ভালবাসার টানেই আমেরিকার মাটিতে একত্র হয়েছেন। তাই তো তাঁরা গেলেও জিতেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট। হ্যাঁ, তখনকার পারফরম্যান্স কিংবা আজকের ম্যাচের পারফরম্যান্স হিসেব করলে বাংলাদেশ লেজেন্ডসের হয়ে খেলা খেলোয়াড়কে ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করাই যায়।
বিশ ওভারের ম্যাচে জাভেদ ওমরের টেস্ট ইনিংস কিংবা অ্যামেচার ক্রিকেটারদের বিরুদ্ধে ১৬০ এর বেশি রান খরচ – এসব ভেবে হাসাহাসিও করা যায়। কিন্তু প্রেক্ষাপট বিবেচনায় সেটা বড্ড অযৌক্তিক। সেসময় জয়ের আশা খেলা দেখতেন এমন দর্শক বোধহয় একজনও নেই।
একটা চার, একটা উইকেট উদযাপন করতেই খেলা দেখতেন তারা; এখনো বদলায় নি সেই অবস্থা। তাই তো জাভেদ ওমরদের ব্যাটিং দেখে নতুন নতুন ক্রিকেটের প্রেমে পড়া মানুষেরা বিরক্ত হলেও পুরনো সমর্থকেরা ঠিকই নস্টালজিয়ায় ভুগেন৷
তাঁদের জন্য ক্রিকেটের ওল্ড হিরোদের মাঠে দেখতে পাওয়া নিঃসন্দেহে দারুণ কিছু। আটলান্টা ফায়ার্সের বিপক্ষেও আরেক ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ লেজেন্ডস, আমেরিকান ক্লাবটির আশেপাশে থাকা বাংলাদেশীরা আজকের মত সেদিনও হয়তো মাঠে থাকতে চাইবেন; দেশটিতে থাকা ভক্ত-সমর্থকেরাও বাংলাদেশ লিজেন্ডসকে বাইশগজে দেখার সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইবে না নিশ্চয়ই।