এশিয়া কাপে ‘প্রস্তুর যুগের’ রিয়াদ

দরজায় কড়া নাড়ছে এশিয়া কাপের নতুন আসর; বাড়ছে উচ্ছ্বাস আর উন্মাদনা। ক্রিকেট বিশ্বে পরিচিতি পাওয়ার পর থেকেই মর্যাদার এই টুর্নামেন্টে অংশ করে আসছে বাংলাদেশ। তাই তো বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের পুরনো পরিসংখ্যান ঘাঁটলে মিলবে মজার মজার তথ্য।

এই যেমন এশিয়া কাপে মুশফিকুর রহিমের রান সংগ্রাহকের তালিকায় আছে সাত নম্বরে। সর্বোচ্চ উইকেট শিকারীর তালিকায় সেরা দশে আছেন সাকিব আল হাসানও; আসন্ন টুর্নামেন্টে নিজেদের অবস্থান আরো কয়েক ধাপ এগিয়ে নেয়ার সুযোগও আছে দুজনের কাছে।

অবশ্য আপনি যদি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের নাম খুঁজে দেখেন পরিসংখ্যানের পাতায়, তবে হতাশই হবেন। কেননা লম্বা একটা সময় ধরে বাংলাদেশ দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হওয়া সত্ত্বেও এশিয়া কাপে লাল-সবুজের সেরা পারফর্মারদের একজন হতে পারেননি তিনি। কখনো ব্যাটিং গড়, কখনো বা স্ট্রাইক রেটের দিক দিয়ে তাঁকে ছাড়িয়ে গিয়েছে দেশের ক্রিকেটের শুরুর দিকের কিংবদন্তিরাও।

প্রথম ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরষ্কার জেতা বাংলাদেশী আতহার আলী খানের কথাই ধরা যাক; ১৯৯০ সালে এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অপরাজিত ৭৮ রান করে সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছিলেন। এছাড়া ১৯৯৭ সালের এশিয়া কাপে তিনি ক্যারিয়ার সেরা ৮২ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। সবমিলিয়ে এশিয়ান মঞ্চে ৩৬৮ রান করেছেন এই টপ অর্ডার ব্যাটার, যেখানে গড় প্রায় ৩৭।

আরেক কিংবদন্তি ক্রিকেটার আকরাম খানও এশিয়া কাপে নিজের সেরাটা দিতে পেরেছেন। ভারত এবং পাকিস্তানের মত দলের বিপক্ষে দুইটি অর্ধশতক আছে তাঁর। এই টুর্নামেন্টে এই ব্যাটারের মোট রান ৩৪৫, গড় ৩০ এর কাছাকাছি আর স্ট্রাইক রেট ৬৩; সেসময়ের প্রেক্ষাপটে এটা বলার মতই একটি পরিসংখ্যান।

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের পারফরম্যান্সে ফিরে আসা যাক; বড় মঞ্চে পারফর্ম করার খ্যাতি আছে যে মাহমুদউল্লাহর, তিনিই কি না মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে বিবর্ণ। ওয়ানডে ফরম্যাটে অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপের আসরে এখন পর্যন্ত মাত্র একটি ফিফটি আছে তাঁর ঝুলিতে; সর্বমোট করেছেন ৩২৮ রান যা আতহার কিংবা আকরামের চেয়েও কম। এই ডানহাতির ব্যাটিং গড় স্রেফ ২৫ আর স্ট্রাইকরেট মাত্র ৬২।

চমকে যাওয়ার মতই পরিসংখ্যান; আতহার, আকরামদের চেয়েও পিছিয়ে আছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। কিন্তু কথায় আছে ‘নাম্বারস ডোন্ট লাই’। আসলেই, এই সংখ্যাগুলো মিথ্যে নয়; টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে আয়োজিত ২০১৬ এশিয়া কাপে দারুণ করলেও ওয়ানডে এশিয়া কাপে মাহমুদউল্লাহর বলার মত পারফরম্যান্স নেই। বরং আছে ২০১২ সালে দলকে ট্রফি এনে দিতে না পারার কলঙ্ক।

আরো একটা এশিয়া কাপ, এবার অবশ্য জাতীয় দলে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের জায়গা নিশ্চিত নয়। তবুও শেষ মুহুর্তে অভিজ্ঞতা আর নামের জোরে স্কোয়াডে সুযোগ পেয়ে যাতে পারেন তিনি। সেক্ষেত্রে ৩৭ বছরের ফুরিয়ে যাওয়া সাইলেন্ট কিলার কি পারবেন তরুণ বয়সের গড়পড়তা পারফরম্যান্সকে ছাড়িয়ে আজন্ম মনে রাখার মত কিছু করতে?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link