আদোতে ‘ডেড রাবার’ ম্যাচ, কিন্তু দুই ক্রিকেটপাগল দেশের খেলা কিভাবে নিরুত্তাপ হতে পারে – হয়ও নি; বাংলাদেশ আর ভারত ম্যাচ বরাবরের মতই উত্তেজনা ছড়িয়েছে শেষ পর্যন্ত। রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে অবশ্য তীরে তরি ভেড়াতে পেরেছে বাংলাদেশ। বোলারদের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে ভারতকে এশিয়া কাপে দ্বিতীয়বারের মত হারিয়েছে টাইগাররা।
পাঁচ পরিবর্তন নিয়ে এদিন খেলতে নেমেছিল বাংলাদেশ। তবে এত এত পরিবর্তনেও বদলায়নি বাংলাদেশের ভাগ্য, শুরুতেই দুই ওপেনার লিটন, তানজিদকে হারাতে হয় টাইগারদের। বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি টুর্নামেন্টে প্রথমবার সুযোগ পাওয়া এনামুল হক বিজয়ও। মিডল অর্ডারে নামা মিরাজ এদিন চেষ্টা করেও সফল হননি।
৫৯ রানে চার উইকেট হারিয়ে ফেলা বাংলাদেশের হাল এরপর ধরেন সাকিব আল হাসান এবং তাওহীদ হৃদয়। দুজনের শতরানের জুটিতে ম্যাচে ফেরে বাংলাদেশ। কিন্তু ব্যক্তিগত ৮০ রানে সাকিব এবং ৫৪ রানে হৃদয় আউট হলে অল্প রানে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কা জাগে।
কিন্তু লোয়ার অর্ডারের দৃঢ়তায় তেমনটা বাস্তবে ঘটেনি। নাসুম, মেহেদিদের ছোট কিন্তু কার্যকরী ইনিংসে ভর করে নির্ধারিত পঞ্চাশ ওভারে ২৬৫ রান তুলতে পারে সাকিবের দল।
রান তাড়া করতে নামা ভারতকে শুরুতেই ভয় ধরিয়ে দেয় অভিষিক্ত তানজিম হাসান সাকিবের স্পেল। রোহিতকে ফিরিয়ে শুরু, এরপর তিনি আউট করেছেন তিলক ভার্মাকেও – সেই সাথে সিম আর সুইংয়ে নাভিশ্বাস তোলেন ভারতীয় টপ অর্ডার ব্যাটারদের।
তিন ওভারের মধ্যে দুই উইকেট হারিয়ে বিপর্যস্ত ভারতকে এগিয়ে নেন ইনফর্ম শুভমান গিল এবং লোকেশ রাহুল। দুজনের ৫৭ রানের জুটি ভেঙে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরান শেখ মেহেদি, ঈশান কিষাণকেও কিছু করতে দেননি মেহেদি মিরাজ। এরপর সুরিয়াকুমার যাদব, রবীন্দ্র জাদেজাদের ফিরিয়ে ভারতকে চাপে রাখেন সাকিব, ফিজ।
এতকিছুর মাঝেও গিল ঠিকই দলকে এগিয়ে নেন জয়ের পথে, সাবলীল ব্যাটিংয়ে তুলে নিয়েছেন ক্যারিয়ারের পঞ্চম শতক। সপ্তম উইকেট জুটিতে অ্যাক্সার প্যাটেলকে নিয়ে রান আর বলের সমীকরণ মেলানোর লক্ষ্যে ছুটতে থাকেন এই তরুণ। তবে সেই পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়ান শেখ মেহেদি, ১২১ রান করা গিলকে হৃদয়ের ক্যাচ বানান এই অফ স্পিনার।
সেই সময়েই চালকের আসনে বসে যায় বাংলাদেশ। অ্যাক্সার প্যাটেল ভয় ধরিয়ে দিয়েছিলেন ঠিকই, তবে দ্য ফিজের ঝলকানিতে ম্লান হয়ে গিয়েছে টিম ইন্ডিয়া। ৪৯তম ওভারে তাঁর দুই উইকেটেই কার্যত শেষ হয়ে যায় ভারতের জয়ের আশা, বাকি আনুষ্ঠানিকতা শেষে ছয় রানে জয় পায় বাংলাদেশ।
এশিয়া কাপের এবারের আসর ভাল যায়নি বাংলাদেশের তবে ভারতের বিপক্ষে এমন জয় নিশ্চয়ই দুঃখ ভুলিয়ে দিয়েছে অনেকটা। বিশ্বকাপেও এই জয় জ্বালানি হিসেবে কাজ করবে সাকিব আল হাসানদের জন্য।