ম – তে মিরপুর, ম – তে মুস্তাফিজুর রহমান – পৃথিবীর যেকোনো মাঠে মুস্তাফিজ যেমন পারফর্মই করুক না কেন, মিরপুরে তিনি উড়বেন সেটা অবধারিত। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতেও তেমনটা ঘটেছে, বৃষ্টি বিঘ্নিত ম্যাচে শুরু থেকেই নিজের বোলিং ঝলক দেখিয়েছেন তিনি।
পুরো ম্যাচে সাত ওভার হাত ঘুরিয়ে ২৭ রানের বিনিময়ে তিন উইকেট শিকার করেছেন মুস্তাফিজুর রহমান। নতুন বলে সুইং আর সিমের কারিশমা দেখিয়েছেন, পুরনো বলে পার্টনারশিপ ভাঙ্গার দায়িত্বও পালন করেছেন। সবমিলিয়ে ঘরের মাঠে ভিন্টেজ ফিজের দেখা মিলেছে আরেকবার।
টসে জিতে আগে বোলিং বেছে নেয়া লিটন দাস সূচনাতেই বল তুলে দিয়েছিলেন মুস্তাফিজুর রহমানের হাতে। অধিনায়ককে এদিন হতাশ করেননি তিনি, প্রথম ওভারে দিয়েছেন এক টানা পাঁচটি ডট। তাঁর পরের ওভারে তো কোন রানই তুলতে পারেনি কিউই ওপেনাররা।
ব্যক্তিগত চতুর্থ ওভারে স্কোরবোর্ডে নাম তোলেন মুস্তাফিজুর রহমান। ফিজের বাইরের দিকে বেরিয়ে যাওয়া বলে খোঁচা দিয়ে কিপারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ফিন অ্যালেন; দারুণ ক্যাচ লুফে নেয়া নুরুল হাসান সোহানের কৃতিত্বও আছে এই উইকেটে। তবে এই বামহাতি পেসারের পরের উইকেট একেবারে সাদামাটা, সোহানের হাতে সরাসরি গ্লাভসবন্দী হয়েছিলেন চ্যাড বোয়েস।
পাওয়ারপ্লেতে পাঁচ ওভারের স্পেল শেষে মুস্তাফিজুর রহমান সবমিলিয়ে খরচ করেছিলেন মাত্র ১২ রান। নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিং লাইনআপের ওপর চাপ সৃষ্টির কাজটা করে দিয়েছেন তিনি। তবে সেটা সামলে দলকে এগিয়ে নিতে শুরু করেন উইল ইয়ং এবং হেনরি নিকোলস; দুজনের ৯৭ রানের জুটিতে ম্যাচে ফিরে এসে সফরকারীরা।
চ্যালেঞ্জিং পুজির স্বপ্ন দেখতে থাকা নিউজিল্যান্ডের শিবিরে পুনরায় আঘাত হানেন মুস্তাফিজুর রহমান। দ্বিতীয় স্পেল করতে এসে প্রথম ওভারেই লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন হেনরি নিকোলসকে। এরপর অবশ্য নাসুম আহমেদের জোড়া আঘাতে কিউইদের অর্ধেক ব্যাটসম্যানই প্যাভিলিয়নে ফিরে যান, সেই সাথে দুইশ পেরোনোর আশাও নিভে যায় দলটির।
যদিও বৃষ্টির জন্য নিউজিল্যান্ডের ইনিংস শেষ করা যায়নি, শেষ করা যায়নি ম্যাচও। ৪২ ওভারের ম্যাচে সমাপ্তি টেনে দিতে হয়েছে ৩৪তম ওভারে। তবে মুস্তাফিজুর রহমান মুগ্ধ করেছেন আবারো, আবারো সম্ভাবনার আলোক শিখা ছড়িয়েছেন। তিনি যে ফুরিয়ে যাননি সেই বার্তা তো ভারতের বিপক্ষে এশিয়া কাপেই দিয়েছিলেন, এবার বুঝিয়ে দিলেন এখনো ব্যাটারদের কাঁপন ধরাতে পারেন তিনি।
বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পেস বিভাগে কারা থাকবেন সেটা নিশ্চিত। তবে সেরা একাদশে কাদের রাখা হবে সেটা বলা যায় না। বিশেষ করে হাসান মাহমুদ, শরিফুল ইসলাম, মুস্তাফিজুর রহমানদের মাঝে বেছে নিতে হবে যেকোনো দুজনকে; তরুণ তানজিম সাকিবও আছেন সুযোগের অপেক্ষায়।
এত এত প্রতিযোগীর মাঝে নিজের কাজটা অবশ্য করে রাখলেন মুস্তাফিজুর রহমান। বিশ্ব মঞ্চে তাঁকে এমন ছন্দে পেলে লাভবান হবে পুরো বাংলাদেশ।