ছক্কা খরার অবসান ঘটালেন শফিক

বহুদিনের এক অপেক্ষার প্রহর শেষ হলো। পাকিস্তানের টপঅর্ডারে চলমান খরাতে এক বিন্দু পানির দেখা মিললো। দিনের পর দিন ধরে বয়ে চলা গ্লানির কিঞ্চিৎ অবসান হলো। আবদুল্লাহ শফিক উদ্ধার করলেন যেন পাকিস্তানকে, বিরুপ এক রেকর্ডের হাত থেকে।

আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ। সেই ম্যাচে ধারাবাহিকভাবে ভাল করতে থাকা আবদুল্লাহ শফিকেরই জায়গা হলো ওপেনিংয়ে। সাথে ছিলেন ইমাম-উল হক। ম্যাচের তখন পঞ্চম ওভার চলমান। তৃতীয় বলটা একটু খাটো লেন্থেই করলেন আফগান পেসার নাভিন উল হক। সেই বলটি তাই পুল শট খেলা ছাড়া উপায়ও ছিল না।

শফিক তাই করলেন। প্রায় কাঁধের উচ্চতার বলটার দিক নির্ধারণ করে দিলেন ডিপ ব্যাকওয়ার্ড স্কোয়ার লেগ। ব্যাস! তাতেই হয় অবসান। হাওয়ায় ভেসে সেই বল গিয়ে পড়ে বাউন্ডারির ওপারে। দীর্ঘ ১৩৬২ বল পর পাকিস্তানের পক্ষে ছক্কাটি এলো।

এই বছর জুড়েই প্রথম পাওয়ার-প্লে চলাকালীন পাকিস্তানের টপঅর্ডার ব্যাটাররা মারতে পারেননি কোন ছয়। সেই গ্লানি মাথায় নিয়েই বিশ্বকাপে পদার্পণ করেছিল ফখর জামানরা। তবুও যেন ছক্কার দেখাটি মিলছিলো না। বছরজুড়ে ২৩টি দল আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছে। এই ২৩ দলের মধ্যে স্রেফ পাকিস্তানেরই প্রথম দশ ওভারে ছিল না কোন ছক্কা।

আবদুল্লাহ শফিকের সেই পুল শটে যেই ছক্কা খরার অবসান ঘটে। এই বছর প্রথম পাওয়ার প্লে-তে খেলা ১১৬৯ বল পরে সেই ছক্কাটি এলো শফিকের ব্যাট থেকে। ২০২৩ সালে এখন অবধি খেলা ম্যাচের মধ্যে প্রথম পাওয়ার প্লে-তে ভারতের রোহিত শর্মা একাই ছক্কা হাকিয়েছেন ৩৫টি।

তবে এদিন শুরুর দশ ওভারে একটি ছক্কা মেরেই থেমে থাকেননি শফিক। আরও একটি ছক্কা হাকিয়েছেন তিনি। আফগান মিস্ট্রি স্পিনার মুজিব-উর রহমানকে মিড-অফ অঞ্চল দিয়ে উড়িয়ে ছক্কা হাকান শফিক। ইনিংসের অষ্টম ওভারের তৃতীয় বলে ডাউন দ্য ট্র্যাকে এসে ছয়টি রান সংগ্রহ করেন ইনফর্ম ব্যাটার শফিক।

এবারের বিশ্বকাপে তো বটেই, বিশ্বকাপের ইতিহাসের অন্যতম সর্বোচ্চ রান তাড়া করে ম্যাচ জিতেছে পাকিস্তান। সেই ম্যাচেও একই ধাঁচে ব্যাটিং করে গেছে পাকিস্তানের টপ অর্ডার। এমনকি গোটা দল এই বিষয়টি নিয়ে খুব একটা চিন্তিতও নয়। তারা নিজেদের ধরণ অনুযায়ী খেলে যেতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন সবচেয়ে বেশি।

এমনকি ওভার বাউন্ডারিতে খুব একটা আস্থা রাখেন না পাকিস্তানের টপ অর্ডার। আফগানদের বিপক্ষে ম্যাচের আগে বিশ্বকাপে খেলা ৪ ম্যাচে, পাকিস্তানের শুরুর তিন ব্যাটার সবমিলিয়ে ৫টি ছক্কা হাকিয়েছিলেন। এমন দৃশ্যের পরিবর্তন নিশ্চয়ই হওয়া জরুরী। তবে আপনার পক্ষে ফলাফল আসতে থাকলে, পরিবর্তনের বিশেষ প্রয়োজন আছে কি?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link