হল অব থ্রিলার

অ্যান্ড্রু হলের জীবন নিয়ে অনায়াসেই দুই সিজনের একটি থ্রিলার সিরিজ হয়ে যেতে পারে। দুইবার বন্দুকের সামনে পড়েও নিজের জীবন নিয়ে পালিয়ে এসেছেন। রক্তাক্ত দেহে হাসপাতালে ভর্তি হবার তিন সপ্তাহের মধ্যেই আবার মাঠে নামার সাহস দেখিয়েছিলেন। একটা দেশের হয়ে খেলেছেন টেস্ট ক্রিকেট। এটা তো নেটফ্লিক্স কিংবা অ্যামাজনের ছোট পর্দায় দেখা থ্রিলার গল্পের মতই। হল প্রমাণ করেছেন জীবন নাটকের চেয়েও বেশি নাটকীয়।

অ্যান্ড্রু হলের জীবন নিয়ে অনায়াসেই দুই সিজনের একটি থ্রিলার সিরিজ হয়ে যেতে পারে। দুইবার বন্দুকের সামনে পড়েও নিজের জীবন নিয়ে পালিয়ে এসেছেন। রক্তাক্ত দেহে হাসপাতালে ভর্তি হবার তিন সপ্তাহের মধ্যেই আবার মাঠে নামার সাহস দেখিয়েছিলেন। একটা দেশের হয়ে খেলেছেন টেস্ট ক্রিকেট। এটা তো নেটফ্লিক্স কিংবা অ্যামাজনের ছোট পর্দায় দেখা থ্রিলার গল্পের মতই। হল প্রমাণ করেছেন জীবন নাটকের চেয়েও বেশি নাটকীয়।

আট বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ঠিক যা যা করা যায় তাঁর সবই করেছিলেন অ্যান্ড্রু হল। দক্ষিণ আফ্রিকার অলরাউন্ডার দেশটির হয়ে খেলেছেন তিন ফরম্যাটেই। ব্যাটিং, বোলিং দুই ডিপার্টমেন্টেই দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ওপেন করেছেন। আবার কখনো ব্যাট করেছেন লোয়ার অর্ডারে কিংবা পুরান বলও তুলে নিয়েছেন হাতে। দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটের এক নিবেদিত প্রাণ ছিলেন অ্যান্ড্রু হল।

১৯৯৯ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মাত্র পা দিয়েছেন হল। সে বছরই এক রাতে টাকা তুলতে গিয়েছিলেন শহরে এক এটিএম বুথে। বুথ থেকে টাকা নিয়ে বের হয়েই দেখলেন তাঁর সামনে কয়েকজন বন্দুকধারী দাঁড়িয়ে আছে। সেই বন্দুক তাক করা হলের দিকেই। গুনে গুনে হলকে উদ্যেশ্য করে ঠিক ছয়টি গুলি করা হয়েছিল।

প্রথম গুলিটি একেবারে হলের বাম হাতের ভেতর দিয়ে চলে যায়। রক্তাক্ত হাত নিয়েই পালানোর চেষ্টা করেন হল। এরপরের চারটি গুলি থেকে কোনরকম পাড় পান। তবে শেষ গুলিটি যায় একেবারে তাঁর মুখ ঘেষে। দুটি গুলি স্পর্শ করলেও ভাগ্য ভালো ছিল কোনটাই খুব বেশি ক্ষতি করতে পারেনি। রক্তাক্ত হলের থেকে টাকা ও তাঁর গাড়ি নিয়েও পালিয়েছিল আক্রমণকারীরা।

হল সেই রাতে কোনভাবে সেখান থেকে জীবন নিয়ে পালিয়ে আসতে পেরেছিলেন। ২০০৩ সালে দ্য গার্ডিয়ানকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে হল বলেছিলেন,’ আমরা বুঝতেই পারছিলাম না ঠিক কোথায় গুলিটা লেগেছে। আমার পুরো শরীরেই রক্ত লেগেছিল। আমার মুখের একটা পাশে মনে হচ্ছিল পুড়ে যাচ্ছে।‘

এই আক্রমণের পর কয়েকদিন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন হল। তবে এরপর তিন সপ্তাহের মধ্যে আবার মাঠে ফিরেছিলেন এই অলরাউন্ডার। তবে হলের গল্প এখানেই থেমে যায়নি। আরও একবার বন্দুকের সামনে পড়েন তিনি। এবার ঘটনা ঘটে ২০০২ সালে।

নিজের গাড়ি বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেন হল। সেই গাড়ি কয়েকজন কিনতে আসলে তাঁর একটা টেস্ট ড্রাইভ দিতে চায়। তাঁদের সাথে হলও গাড়িতে ওঠেন। কিছু দূর যাওয়ার পর তাঁরা বন্দুক তাক করে ধরে হলের দিকে। তারপর বেশ দূরে একটা জায়গায় গিয়ে হলকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেয় ডাকাতরা। তারপর স্থানীয়দের সহায়তায় বাসায় ফিরে এসেছিলেন হল।

এই ঘটনার পর দেশ ছেড়ে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন হল। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে বিশ্বকাপও খেলতে চাইতেন তিনি। এরমধ্যেই ২০০২ সালের মার্চ মাসে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট দলে ডাক পান হল। এরপর দেশটির হয়ে মোট ২১ টি টেস্ট খেলেছেন অ্যান্ড্রু হল।

বন্দুকের মুখ থেকে ফিরে আসা হল দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ২১ টেস্ট খেলে নিয়েছেন ৪৫ উইকেট। এছাড়া ব্যাট হাতেও ২৬.২০ গড়ে করেছেন ৭৬০ রান। ওদিকে দেশটির হয়ে ৮৮ টি ওয়ানডে ম্যাচও খেলেছেন হল। সেখানে ব্যাট হাতে ৯০৫ রানের পাশাপাশি আছে ৭৫ টি উইকেট। এছড়া দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ২ টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচও খেলেছেন তিনি।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...