সামিউন বশির, ‘দ্য নেক্সট অলরাউন্ডার!’

ম্যাচটা প্রায় হেরেই যেতে বসেছিল বাংলাদেশের যুবারা। ৫৯ রানে ছয় উইকেট হারায় আজিজুল হাকিম তামিমের দল। সেই ম্যাচে জেতালেন সামিউন বশির।

জয়ের জন্যে প্রয়োজন ২০ রান। হাতে মাত্র একটি উইকেট। সেই ম্যাচে জেতালেন সামিউন বশির। দায়িত্বশীলতা আর বুদ্ধিদীপ্ততার দারুণ মেলবন্ধনে বা-হাতি অলরাউন্ডার বনে গেলেন জয়ের নায়ক। ভীষণ চাপের মুখে দেখালেন পরিণত মস্তিষ্কের ঝলক।

অনূর্ধ্ব ১৯ দলের ত্রিদেশীয় সিরিজ। জিম্বাবুয়ের বুকে দক্ষিণ আফ্রিকান যুবাদের মুখোমুখি বাংলাদেশ। ম্যাচটা প্রায় হেরেই যেতে বসেছিল বাংলাদেশের যুবারা। ৫৯ রানে ছয় উইকেট হারায় আজিজুল হাকিম তামিমের দল। সেই মুহূর্তে বাইশ গজে নামেন সামিউন বশির।

দলের জয় তখনও বেশ দূরের পথ। তবে লক্ষ্যের দিকে দৃপ্তপায়ে এগিয়ে যেতে থাকেন বশির। তিনি জানতেন অপরপ্রান্তে সঙ্গ দেওয়ার মত হয়ত তেমন কাওকেই পাওয়া যাবে না। তাইতো দায়িত্ব নিজ কাঁধেই তুলে নিলেন। অবশ্য ব্যাট হাতে ম্যাচ জেতানোর আগে বল হাতেও নিজের কর্তব্য পালন করেছেন টাইগার তরুণ।

পঞ্চাশ ওভারের ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকা অনূর্ধ্ব ১৯ দল অলআউট হয়েছে মাত্র ১২৮ রানে। তাদেরকে এত স্বল্প রানে আটকে ফেলার কারিগরদের একজন সামিউন বশির নিজেই। তিনি নিয়েছেন দুইটি উইকেট। এই সিরিজের আগেই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দ্বিপাক্ষিক সিরিজে ২-১ ব্যবধানে জিতেছিল টাইগার যুবারা।

স্বাভাবিকভাবেই একটা সহজ জয় ছিল প্রত্যাশিত। জাওয়াদা আবরার সেই প্রত্যাশার বীজ বপণ করেছিলেন নিজের স্বভাবজাত আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে। কিন্তু হুট করেই সহজ জয়টা ভীষণ কঠিন মনে হতে শুরু করে। ১০৯ রানে যখন বাংলাদেশের নবম উইকেটের পতন ঘটে, তখনই হয়ত পরাজয়ের ডঙ্কা বেজে উঠেছিল।

কিন্তু সামিউন বশিরে দৃঢ়তায় পরাজয়ের ডঙ্কার সুর পালটে বিজয়ের ঐকতানে পরিণত হয়। শেষ ব্যাটার স্বাধীন ইসলামকে স্ট্রাইক প্রান্তে যেতেই দিলেন না। জয়ের আগে শেষ দশ বল নিজেই খেলেন বশির। ২৮ তম ওভারের শেষ বলে সিঙ্গেল নিয়ে স্ট্রাইক নিজের কাছেই রাখেন। তার আগে দু’টো চার হাঁকিয়ে ব্যবধান কমিয়ে নেন।

এরপর ২৯ তম ওভারে দ্বিতীয় বলে চার ও তৃতীয় বলে ছক্কা মেরে জয়ের দোরগোড়ায় পৌঁছান সামিউন বশির। পরের একরান নিতে তেমন কোন বেগ পোহাতে হয়নি। শেষ অবধি এক রোমাঞ্চকর জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে টাইগার যুবারা। বশির অপরাজিত ছিলেন ৪১ রানে।

ইনিংস বিল্ডআপ করা থেকে ফিনিশিং টাচ- সবখানেই মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন সামিউন বশির। তাছাড়া শেষের দিকের ঐ হিসেব কষা দশটি বল প্রমাণ করে ‘আ ট্রু অলরাউন্ডার ইস ইন দ্য মেকিং’।

Share via
Copy link