ব্যাটে বলে দুর্দান্ত একটা দিন পার করেছেন মেহেদি হাসান মিরাজ। অলরাউন্ডিং পারফরম্যান্সে প্রায় একাই আফগান বধের গল্প লিখেছেন তিনি; স্বাভাবিকভাবেই ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরষ্কার উঠেছে তাঁর হাতে। এর মধ্য দিয়ে দীর্ঘ আট বছর পর ওয়ানডে বিশ্বকাপে সাকিব আল হাসান ছাড়া বাংলাদেশের অন্য কেউ ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হয়েছেন।
শুধু তাই নয়, আরেক বিরল রেকর্ডেও নাম উঠেছে মিরাজের। একই ম্যাচে পঞ্চাশোর্ধ রান করার পাশাপাশি তিন উইকেট শিকার করার কীর্তি গড়েছেন এই ডান-হাতি। মাত্র ষষ্ঠ বাংলাদেশী হিসেবে এই মাইলফলক ছুঁতে পেরেছেন তিনি।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে আগে বোলিং করতে নেমে তিন উইকেট শিকার করেছেন এই অলরাউন্ডার। নয় ওভার হাত ঘুরিয়ে মাত্র ২৫ রানের বিনিময়ে হাসমতউল্লাহ শহীদি, রশিদ খান এবং মুজিবুর রহমানকে সাজ ঘরে ফিরিয়েছেন তিনি; আর এদিন মেডেন ওভারও দিয়েছেন তিনটি।
পরবর্তীতে ব্যাটিংয়ের সময় তিন নম্বরে পাঠানো হয়েছিল তাঁকে। বিশ্ব মঞ্চে প্রথমবার ওপরে খেলার সুযোগ পেয়ে কাজে লাগাতে ভুল করেননি তিনি। ৭৩ বলে করেছেন ৫৭ রান, আর তাতেই আফগানদের ছুঁড়ে দেয়া ১৫৬ রানের টার্গেট ৯২ বল হাতে রেখেই তুলে নেয় টাইগাররা।
এই তরুণের আগে অবশ্য সাকিব, মাহমুদউল্লাহর মত কিংবদন্তিরা পেয়েছেন একই ম্যাচে ফিফটি করার পাশাপাশি বোলিংয়ে তিন উইকেট নেয়ার স্বাদ। এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ নয়বার পঞ্চাশোর্ধ ইনিংস খেলার পর একই ম্যাচে বল হাতে তিনজন ব্যাটারকে ফিরিয়েছেন তিনি।
সাকিব ছাড়া একাধিকবার এমন কীর্তি গড়েছেন কেবল মাহমুদউল্লাহ। তাঁর ক্যারিয়ারে এমন ঘটনা ঘটেছে দুইবার। রিয়াদ ছাড়াও দারুণ এই অলরাউন্ডিং পারফরম্যান্স দেখা গিয়েছে মোহাম্মদ রফিকের ক্যারিয়ারে। এছাড়া রাজিন সালেহ এবং মোহাম্মদ আশরাফুল দুজনেই আছেন ঐতিহাসিক এ তালিকায়।
তবে দ্বি-পাক্ষিক সিরিজ বাদ দিয়ে শুধু বিশ্বকাপ নিয়ে ভাবলে বাংলাদেশ থেকে কেবল দুজনকে পাওয়া যাবে, যারা ৫০ রানের পাশাপাশি তিন উইকেট ঝুলিতে পুরেছেন একই দিনে। সেই দুজনের একটা নাম অবশ্য সাকিব আল হাসানের; ২০১৯ সালে সাউটাম্পটনে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৫১ রান করেছিলেন টাইগার অধিনায়ক।
দ্বিতীয় ইনিংসে একাই পাঁচ উইকেট তুলে আফগানিস্তানের ব্যাটিং অর্ডারকে থামিয়ে দিয়েছিলেন এই বাঁ-হাতি অলরাউন্ডার। তাঁর দেখানো পথেই হাঁটলেন উত্তরসূরি মিরাজ।
মেহেদি মিরাজ, সাকিব আল হাসান মতই বিশ্বকাপের মত আসরে দেখালেন মুন্সিয়ানা। ডানহাতি অফ স্পিনের পাশাপাশি ব্যাটিংয়েও অবদান রেখেছেন তিনি।
সাকিব আল হাসানের মত কাউকে আরেকবার পাবে বাংলাদেশ এমন আশা করাটা অমূলক। তবে মিরাজের পারফরম্যান্সে নতুন সম্ভাবনার দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে। সাকিব না হোন, মিরাজ হয়েই তিনি বাংলাদেশের নতুন মি.অলরাউন্ডার হবেন।