বিপিএলেও ‘টিপিকাল’ রিজওয়ান

মোহাম্মদ রিজওয়ানকে হেলিকাপ্টার দিয়ে উড়িয়ে এনেছিল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। উদ্দেশ্য ছিল পাকিস্তানের এই ওপেনার উড়ন্ত শুরু এনে দিবেন দলটাকে। হেলিকাপ্টার মাটিতে নামার সময় যেমন একটা ঝড় ওঠে, বাইশ গজে তেমনি ঝড় তুলবেন পাকিস্তানের এই ওপেনার। রিজওয়ানের ব্যাটে উড়ে যাবে প্রতিপক্ষের বোলিং আক্রমণ।

তবে বিপিএল খেলতে এসে প্রথম তিন ম্যাচ সেভাবে রানের দেখাই পাননি রিজওয়ান। একমাত্র চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে ৩৫ বল থেকে ৩৭ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। তবে তাতে নিশ্চয়ই মন ভরেনি কুমিল্লার সমর্থকদের। রিজওয়ানের কাছ থেকে আরো বড় ইনিংস দেখার অপেক্ষায় ছিলেন তাঁরা।

ঝড়ো ইনিংস না খেললেও রিজওয়ান আজ খেললেন নিজের স্বভাবজাত ইনিংস। শুরু করেছেন একেবারে ধীরস্থির ভাবে। প্রথম ওভারেই লিটন দাস আউট হয়ে গেলেও দলকে চাপে পড়তে দেননি। একপ্রান্ত থেকে আগলে রেখেছেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে। ইনিংসের শুরুতে যখন বোলাররা সুবিধা পাচ্ছিলেন সেই সময়টায় ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন।

ধীরে ধীরে কুমিল্লার ইনিংসকে গভীরে নিয়ে গিয়েছেন। রিজওয়ানের গড়ে দেয়া সেই ভিত্তিটাই পড়ে কাজে লাগিয়েছেন খুশদিল শাহ। এই ব্যাটার তুলে নিয়েছেন এবারের বিপিএলের দ্রততম অর্ধশতক। পঞ্চাশ রানের মাইলফলক স্পর্শ করতে খুশদিল খেলেছেন মাত্র ১৮ বল। এছাড়া এবারের বিপিএলে ১৯ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেছিলেন রনি তালুকদার।

ওদিকে রিজওয়ান পুরো ইনিংস জুড়েই কুমিল্লাকে আগলে রাখার কাজটা করেছেন। লিটন দাস, ইমরুল কায়েসরা দ্রুত আউট হয়ে গেলেও দলের উপর চাপ পড়তে দেননি। শেষ পর্যন্ত তিনি দেখা পেয়েছেন এই বিপিএলে নিজের প্রথম অর্ধশতকের।

ওপেন করতে নামা রিজওয়ান খেলেছেন একেবারে ইনিংসের শেষ অবধি। লম্বা এই সময়টায় কখনো সঙ্গ দিয়েছেন ইমরুল কায়েসকে, কখনো সঙ্গ দিয়েছেন খুশদিল শাহকে। ঝড়ো অর্ধশতক করে আলোটা কেড়ে নিয়েছেন খুশদিল। তবে পুরো ইনিংস জুড়ে খুশদিলদের ভরসা দিয়ে গিয়েছেন রিজওয়ান।

তিনি একপ্রানে থাকা স্বস্তিতে ব্যাটিং করতে পেরেছে অন্যরা। ফলে শুরুর দিকে বোলাররা একটু সুবিধা পেলেও ধীরে ধীরে বড় স্কোরের পথে হাঁটতে থাকে কুমিল্লা। পাওয়ার প্লেতে মাত্র ৪২ রান করলেও পরে সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে দলটা।

বিশ ওভার শেষে তাঁদের ঝুলিতে জমা হয়েছে ১৮৪ রান। আর রিজওয়ান ৪৭ বল থেকে করেছেন ৫৫ রান। ইনিংসটি সাজিয়েছেন ৩ টি ছয় আর ১ টি চার দিয়ে। ওদিকে খুশদিল ২৪ বল থেকে করেছেন ৬৪ রান। ব্যাটিং করেছেন ২৬৬.৬৬ স্ট্রাইকরেটে। ২৪ বলের এই ইনিংসে ১২ বলই বাউন্ডারি ছাড়া করেছেন এই ব্যাটার।

ওদিকে রিজওয়ান ও খুশদিল মিলে চতুর্থ উইকেট জুটিতে যোগ করেছেন ৮৪ রান। এর আগে অধিনায়ক ইমরুল কায়েসের সাথেও ৪৭ রানের জুটি গড়েছিলেন তিনি। আর জনসন চার্লসের সাথে গড়েছিলেন ৪০ রানের জুটি।

কুমিল্লার এমন ব্যাটিং ডিসপ্লের পর বেশ চাপেই থাকবে ঢাকা ডমিনেটর্স। প্রথম তিন ম্যাচেই হারা কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ঘুরে দাঁড়িয়েছে দারুণ ভাবে। বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা যে এবারো জিততেই এসেছে সেটাও বুঝিয়ে দিচ্ছে মাঠের ক্রিকেটে।

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link