একটি করে ডট বল হলে লাগানো হবে ৫০০টি গাছ। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) নেওয়া হয়েছিল এমনই এক মহৎ উদ্যোগ, যা সাড়া ফেলে দেয় ক্রিকেট মহলের গণ্ডি পেরিয়ে প্রতিটি মানুষের মনে। তবে আদৌ কি হচ্ছে এমন কিছু? নাকি সব ফাঁকা বুলিতে মানুষের মনে জায়গা করে নেওয়ার চেষ্টা?
পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায়, বোর্ড অব কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়া (বিসিসিআই) এবং টাটা গ্রুপ মিলে ২০২৩ সালে শুরু করে এই উদ্যোগ। পরিকল্পনাটি ছিল — প্লে-অফে প্রতি ডট বল বাবদ ৫০০ টি করে গাছ লাগানো হবে।
সেবার ডট বল হয়েছিল ২৯৪টি। হিসাব করলে গাছের সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় ১,৪৭,০০০টি। কর্তৃপক্ষ থেকে জানানো হয়, ভারতের কেরালা, আসাম, কর্নাটক এবং গুজরাটে গাছ লাগানো হয়েছে। তবে শুধু বলা হয়েছে, ছিল না কোনও অফিশিয়াল ডেটা। গাছের সংখ্যাটা নেহাতই কম নয়। যদি কোথাও লাগানোই হতো, তবে তা দৃশ্যমান হওয়ার কথা। আর এখানেই মূলত সন্দেহের উৎপত্তি।
২০২৪ সালের আইপিএলের প্লে-অফে ডট বল হয়েছিল ৩২৩টি। অর্থাৎ বিপরীতে গাছ লাগানোর কথা প্রায় ১,৬১,৫০০টির মতো। তবে এখানেও ছিল না কোনও প্রমাণ। ২০২৩-২০২৪ মৌসুমে কথা ছিল, শুধুমাত্র নকআউট স্টেজে ডট বলের বিপরীতে গাছ লাগানো হবে। তবে ২০২৫ সালে এসে পুরো সিজনজুড়েই নেওয়া হয়েছে এমন সিদ্ধান্ত— যেখানে প্রতি ম্যাচে ডট বল বাবদ লাগানো হবে ১৮ টি করে গাছ।
এবারের আসরে ইতিমধ্যেই মাঠে গড়িয়েছে ৩৬টি ম্যাচ। এখনো বাকি আইপিএলের অর্ধেকেরও বেশি। আসর শেষে তাই তো গাছের সংখ্যাটা দাঁড়াবে অনেক।
এ তো গেল কাগজ-কলম আর আশ্বাসের গল্প। তবে বাস্তবতায় আসলে কতটুকু হচ্ছে? এখন পর্যন্ত আইপিএল থেকে টুইটারে এ নিয়ে করা হয়েছে মাত্র একটি পোস্ট, তাও আবার ২০২৪ সালের ১৮ই ডিসেম্বর। যেখানে দেখা যায়, বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট রজার বিনি ৪ লাখ তম গাছটি লাগাচ্ছেন। এছাড়া আর জানা যায়নি তেমন কিছুই।
এত বড় প্রজেক্ট, এত বড় মহৎ কাজ— তবে নেই কোনও বাস্তব প্রমাণ। তাই তো প্রশ্ন, সবকিছু এমন আড়ালে কেন? উত্তরটা বিসিসিআই ভালো বলতে পারবে। তবে পরিবেশের কথা ভেবে আইপিএলের এমন উদ্যোগ শুধুমাত্র প্রশংসার যোগ্য নয়, এটি মানুষ এবং প্রকৃতির জন্য সত্যিকার অর্থে অনেক বড় কিছু।