ঢাকা প্রমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের গ্রুপ পর্বে একটি হাফ সেঞ্চুরি করলেও ব্যাট হাতে ছন্দে ছিলেন না নাজমুল হোসেন শান্ত। ব্যাট হাতে টানা ব্যর্থতার পর সুপার লিগে নিজেদের প্রথম ম্যাচে রানে ফেরার আভাস দিয়ে ছিলেন তিনি। গতকাল ইনিংস বড় করতে না পারলেও আজ দলের বিপর্যয়ের মুখে ম্যাচ জয়ী ইনিংস খেলেছেন এই ব্যাটসম্যান।
গ্রুপ পর্ব পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থেকেই শেষ করে ছিল আবাহনী লিমিটেড। আবাহনীর এই জয়রথ চলছে সুপার লিগে এসেও। সুপার লিগে নিজেদের প্রথম ম্যাচে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহামেডানকে উড়িয়ে দেওয়ার পর আজ শান্তর ৪৯ বলে ৫৮ রানে ভর করে শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সকে ১ উইকেটে হারিয়েছে মুশফিকুর রহিমের দল।
তবে ১২৪ রানের সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নামা আবাহনীর শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি। নাসুম আহমেদের প্রথম শিকার হয়ে রানের খাতা খোলার আগেই ফিরে যান ছন্দে থাকা মুনিম শাহরিয়ার। এরপর ভালো শুরু করেও ইনিংস বড় করতে পারেননি লিটন দাস। এই ওপেনার ফিরে যান ১৭ বলে ২২ রান করে।
মাত্র ২৯ রানে দুই ওপেনার ফিরে যাওয়ার পর মুশফিকুর রহিম ও নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাটে ঘুঁড়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে আবাহনী। কিন্তু এই জুটিকে খুব বেশি দূর যেতে দেননি মকিদুল ইসলাম মুগ্ধ। ১৬ বলে ১২ রান করা মুশফিককে ফিরিয়ে দেওয়ার পর মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতকে এই পেসার ফিরিয়ে দেন শূন্য হাতে।
দুজনই ক্যাচ দেন উইকেটের পিছনে আকবর আলীর হাতে। ৬০ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা আবাহনীর ইনিংসে পঞ্চম আঘাত হানেন মেহেদী হাসান। এই স্পিনারের সোজা বলে লাইন মিস করে নাঈম শেখ (২) বোল্ড হয়ে গেলে ৬৪ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে আবাহনী।
এরপর একাই লড়াই চালিয়ে যান শান্ত। কিন্তু ৪৯ বলে ৫৮ রান করে শান্ত ফিরে গেলে আবার ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় আবাহনী। তবে ৩ বলে ৯ রান করে দলের জয় হাত ছাড়া হতে দেননি মেহেদী হাসান রানা। এক বল হাতে রেখেই জয় নিশ্চিত করে আবাহনী। গাজী গ্রুপের পক্ষে তিনটি উইকেট শিকার করেন মকিদুল ইসলাম মুগ্ধ।
এর আগে টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামা গাজী গ্রুপের শুরুটা ভালো হয়নি। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের প্রথম শিকার হয়ে ৩ রান করে ফিরে যান মেহেদী হাসান। ৮ রানে প্রথম উইকেট হারানোর পর দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৪৫ রান যোগ করেন সৌম্য সরকার ও জাকির হাসান।
কিন্তু উইকেটে থিতু হয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি কেউই। ২৪ বলে ৩০ রান করে সৌম্য ফিরে যাওয়ার পর ২৫ বলে ২৭ রান করে ফিরে যান জাকির। ৭১ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর দলের হাল ধরেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও ইয়াসির আলী রাব্বি। কিন্তু এই দুজনও দলকে বেশি দূর টানতে পারেননি।
১৭ বলে ১২ রান করে সাইফউদ্দিনের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ফিরে যান রাব্বি ও মেহেদী হাসান রানার প্রথম শিকার হয়ে ফিরে যান রিয়াদ। রিয়াদের ব্যাট থেকে আসে ১৭ বলে ১৬ রান। এরপর শেষের দিকে দ্রুত উইকেট হারিয়ে পাঁচ বল বাকি থাকতেই ১৩০ রানে অল আউট হয়ে যায় গাজী গ্রুপ।
মুমিনুল হকের ব্যাট থেকে আসে ১২ বলে ২৫ রান। আবাহনীর পক্ষে সবচেয়ে সফল বোলার ছিলেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। ৪ ওভারে ১৮ রান দিয়ে ৪ উইকেট শিকার করেন তিনি। এছাড়া মেহেদী হাসান রানা তিনটি ও তানজিম হাসান সাকিব দুটি উইকেট শিকার করেন।
- সংক্ষিপ্ত স্কোর
গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স: ১৩০/১০ (ওভার: ১৯.১; সৌম্য- ৩০, জাকির- ২৭, মাহমুদউল্লাহ- ১৬, মুমিনুল- ২৫) (সাইফউদ্দিন- ৪-০-১৮-৪, রানা- ৪-০-৩২-৩, তানজিম- ২.১-০-১৩-২)
আবাহনী লিমিটেড: ১৩১/৯ (ওভার: ১৯.৫; লিটন- ২২, শান্ত- ৫৮, রানা- ৯) (মকিদুল- ৪-০-৩৮-৩, মেহেদী- ৪-০-২২-২)
ফলাফল: আবাহনী লিমিটেড ১ উইকেটে জয়ী।