বেশ জল্পনা-কল্পনার এক ওয়ানডে সিরিজ হয়েছে শেষ। নানা কাণ্ডের বাংলাদেশ-আফগানিস্তান এই সিরিজে হয়েছে বিস্তর আলোচনা। সমালোচনার আর গল্পের নতুন মোড়ের কমতিও ছিল না। তবে ওয়ানডে সিরিজের শেষ মানেই তো শুরু নতুন কিছুর। আফগানিস্তানের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে বাংলাদেশ দলের অবস্থান এখন সিলেটে।
রশিদ খানরাও পৌঁছে গেছেন চা’য়ের নগরীতে। শেষ ওয়ানডে ম্যাচটায় দাপট দেখিয়েই বাংলাদেশ জিতেছে। নিজেদের আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি খানিকটা হলেও কাটিয়ে নিতে পেরেছে বাংলাদেশ দল। অন্যদিকে প্রথমবারের মত ওয়ানডে সিরিজ জয়ে বেশ প্রফুল্লিত এক সময়ই পার করছে যেন গোটা আফগান শিবির।
তবে প্রথমবারের মত ওয়ানডে সিরিজ জিতলেও, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে কিন্তু আফগানিস্তানের পাল্লাটা ভারি। দুই দলের দেখা হয়েছে এখন অবধি ৯ বার। যার মধ্যে মাত্র ৩টি ম্যাচ জিততে পেরেছে বাংলাদেশ। বাকি ৬টি ম্যাচে রীতিমত দাপটই দেখিয়েছে আফগানিস্তান।
সাদা বলের ক্রিকেটে আফগানিস্তান বেশ শক্ত এক দলই বলা চলে। লোকমুখে এই কথার প্রচলন অবশ্য টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে আফগানদের পারফরমেন্সের কারণেই। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের র্যাংকিংয়ে অবশ্য বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের দূরত্ব নেই তেমন একটা। ৯ নম্বরে বাংলাদেশ, আর এর ঠিক পরেই অবস্থান আফগানিস্তানের।
যদিও এই আফগানিস্তান দলটার বিপক্ষেই ৩-০ ব্যবধানে টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারের বিষাদময় স্মৃতি রয়েছে সাকিবদের। সেবার ভারতের দেহরাদুনে হওয়া সিরিজটায় পাত্তাই পায়নি বাংলাদেশ দল। এমনকি নিকট অতীতের ম্যাচটিও হেরেছে বাংলাদেশ। সেটি আবার এশিয়া কাপের মঞ্চে। ২০২২ সালের এশিয়া কাপটি হয়েছিল টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এমন খাবি খাওয়ার পেছনের কারণ খুব সম্ভবত আফগান স্পিন অ্যাটাক। বিশেষ করে রশিদ খান রীতিমত বাংলাদেশি ব্যাটারদের যম। তিনি আট ম্যাচ খেলেছেন বাংলাদেশের বিপক্ষে, উইকেট বাগিয়েছেন ১৭টি। প্রায় প্রতি ম্যাচে দুই করে উইকেট নিয়েছেন তিনি।
তবে সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তার কারণ তার ইকোনমি রেট। বাংলাদেশের ব্যাটাররা রশিদ খানের ওভারগুলো বেশ দেখেশুনে খেলে থাকেন। সে সময়টায় ঝুঁকি নেওয়ার প্রবণতাও কম থাকে। মাত্র ৫.৫৩ ইকোনমি রেট তার বাংলাদেশের বিপক্ষে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে সময়টা বেশ অল্প। সেই অল্প সময়েই বাংলাদেশের বিপক্ষে মোমেন্টাম তৈরি করে ফেলেন রশিদ খান।
অন্যদিকে রশিদ খান ছাড়াও বাংলাদেশের আরেক পথের কাঁটা মুজিব-উর রহমান। শেষ এশিয়া কাপে রশিদ আর মুজিব মিলে বাংলাদেশের ৬টি উইকেট শিকার করেছিল। আর তাতে বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডার মুখ থুবড়ে পড়ে। সেখান থেকে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানেই ম্যাচ জিতেছিল আফগানিস্তান। এই দুই বোলারকে খেলাটা হবে লিটন, শান্তদের মূল চ্যালেঞ্জ।
বাংলাদেশের ব্যাটিং কলাপ্স করে যাওয়াটাই তাদের মূল দুশ্চিন্তা। সেদিক থেকে বাড়তি দায়িত্ব সাকিব, লিটন, শান্তদের। আগামী ১৪ জুলাই সন্ধ্যা ছয়টায় সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে দুই দল। দুই ম্যাচের এই টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরুর আগে একদিনের অনুশীলন করবে সাকিবের দল। সেখানেই হয়ত আফগানিস্তানকে বধ করবার ছকটা কষতে চাইবে বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্ট।