নেভিল কার্ডাসের ক্রিকেট বড্ড অনিশ্চিয়তায় ভরা; আপনি যখনই অনুমান করবেন কিছু একটা, তখন ক্রিকেট আপনাকে ভুল প্রমাণ করতে ব্যস্ত হয়ে পড়বে। এই যেমন, শ্রীলঙ্কা আফগানিস্তানের লড়াই; সুপার ফোর নির্ধারনী ম্যাচের রং বদলেছে বারবার।
যখনই মনে হয়েছে আফগানিস্তান জিততে পারে তখনি এগিয়ে গিয়েছে শ্রীলঙ্কা; আবার উল্টোটাও ঘটেছে। শেষমেশ অবশ্য সব হিসেব নিকেশকে উল্টে দিয়ে অবিশ্বাস্য জয় ছিনিয়ে নিলো শ্রীলঙ্কা। টসে জিতে লাহোরের ব্যাটিং বান্ধব উইকেটে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্তই নিয়েছেন শ্রীলঙ্কান অধিনায়ক দাসুন শানাকা।
দুই ওপেনার দিমুথ করুণারত্নে আর পাথুম নিশাঙ্কা শুরুটাও করেছিল দারুণভাবে; পাওয়ার প্লেতে এই দুইজনের সংগ্রহ ৬২ রান। এরপরই অবশ্য গুলবাদিন নাইব ঝড় তোলেন, পরপর তিন উইকেট তুলে নিয়ে লঙ্কানদের চাপে ফেলে দেন এই পেসার।
কিন্তু তিনে নামা কুশল মেন্ডিস প্রতিরোধ গড়ে তোলেন চারিথ আসালঙ্কাকে নিয়ে। তাঁদের ১০২ রানের জুটিতে ভর করে বড় রানের ভিত পেয়েছিল শ্রীলঙ্কা; তবে আরো একবার ধ্বসের মুখোমুখি হয় দলটির ব্যাটিং লাইনআপ। একে একে আউট হন আসালঙ্কা, ডি সিলভারা। ৯২ রানের মাথায় মেন্ডিস আউট হলে আরো বিপদ বাড়ে লঙ্কানদের।
বড় রান তোলার স্বপ্ন যখন ফিকে হয়ে যাচ্ছিলো তখনি ত্রাতা হয়ে আসেন দুনিত ওয়াল্লেগে আর মাহিশ থিকসানা। অষ্টম উইকেট জুটিতে ৬৪ রান তোলেন তাঁরা, আর তাতেই ২৯২ রানের পুঁজি পায় দাসুন শানাকার দল।
সুপার ফোরে খেলতে চাইলে বিশাল এই রান টপকে যেতে হবে মাত্র ৩৭.১ ওভারে – কঠিন এই সমীকরণ সামনে রেখেই আফগানিস্তানের ওপেনাররা নেমেছিল; এপ্রোচও ছিল তেমনই। প্রথম থেকেই রান রেটের সাথে পাল্লা দিয়ে রান তুলতে থাকে আফগানরা। দুই ওপেনাররা দ্রুত বিদায় নিলেও থামেনি দলটির রানের গতি।
দুই অভিজ্ঞ রহমত শাহ এবং হাসমতউল্লাহ শহিদীর আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে মাত্র ১৬ ওভারেই শতরানের গন্ডি পেরিয়ে যায় আফগানিস্তান। ১৯তম ওভারে অবশ্য কাসুন রাজিথা প্যাভিলিয়নে পাঠান ৪৫ রান করা রহমতকে। কিন্তু সেটাই শাপে বর হয়ে আসে রশিদ খানদের জন্য; ক্রিজে আসা মোহাম্মদ নবী রীতিমতো তান্ডব চালাতে শুরু করেন।
বাউন্ডারির ফুলঝুরি ছুটিয়ে মাত্র ২৪ বলে ফিফটি তুলে নেন এই অলরাউন্ডার। এটাই আফগানিস্তানের ওয়ানডে ইতিহাসের দ্রুততম হাফসেঞ্চুরি। একটা সময় তাঁর ব্যাটেই অবিশ্বাস্য রূপকথা লেখার স্বপ্ন দেখতে শুরু করে আফগান সমর্থেকরা। কিন্তু ৬৫ রানের মাথায় মাহিশ থিকসানা তুলে নেন নবীর উইকেট।
তাতেও অবশ্য থামেনি আফগান ঝড়, করিম জানাত টেনে নিয়েছেন দলকে। যদিও তিনি স্থায়ী হননি বেশিক্ষণ, গুরুত্বপূর্ণ সময়ে রান তুলতে পারেননি অধিনায়ক শহিদীও। চেষ্টাটা অবশ্য করেছেন নাজিবুল্লাহ এবং রশিদ, তবে হতাশা নিয়েই ফিরতে হয়েছে; ২ রানের ব্যবধানে জিতেছে লঙ্কানরা
খুব কাছে এসেও এশিয়া কাপের সুপার ফোরে খেলা হলো না আফগানিস্তানের। বারবার বড় দলগুলোর বিপক্ষে এমন পরাজয় নিশ্চিতভাবেই আফগানদের ক্রিকেট ইতিহাসে অনেকদিন স্মরণীয় থাকবে।