‘সাকিব’ নামের প্রমাণ চাই

এই দায়িত্বটা তাঁর জন্য নতুন কিছু নয়। এই জুতোয় তিনি অনেকবারই আগে পা গলিয়েছেন। তবে, এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে এবার সাকিব আল হাসানের জন্য চ্যালেঞ্জটা বেশি।

প্রথমত আসরটার নাম এশিয়া কাপ, মহাদেশিয় শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই। আর বর্তমান অবস্থা যাই হোক না কেন – গেল চারটি আসরের মধ্যে তিনটিতেই কমপক্ষে ফাইনাল খেলেছে বাংলাদেশ দল। ফলে, সাকিব নিশ্চয়ই সেই সাফল্যের থেকে পিছিয়ে গিয়ে কোনো লক্ষ্য নির্ধারণ করবেন না।

দেশ ছাড়ার আগে সাকিব কোনো নির্দিষ্ট লক্ষ্যের কথা ঘটা করে জানাননি। বরং বলেছেন, লক্ষ্যটা নিজেদের মধ্যেই রাখতে চান। বলে ফেলে যদি মাঠে করে দেখাতে না পারেন, তখন লজ্জায় মাথা নিচু হওয়াটা সাকিবের পছন্দ না।

হ্যাঁ, সাকিব বড় স্বপ্ন দেখার মানুষ। সামান্য কিছুতে তাঁর মন ভরবে না। আর অধিনায়কের নাম সাকিব বলেই, এই এশিয়া কাপ নিয়ে এখনও স্বপ্ন বুনছেন কেউ কেউ। সাকিব নিজেও নিশ্চয়ই ব্যক্তিগত ও ক্রিকেটীয় বিতর্ক মুছে ফেলতে চাইবেন সাফল্য দিয়ে।

সাকিবের প্রথম সংকট হল, বাংলাদেশ দলে কোনো নির্দিষ্ট টি-টোয়েন্টি সংস্কৃতির কোনো অস্তিত্ব নেই। এই ফরম্যাটটায় ঠিক কি করলে ভাল করা যায় – তা টিম ম্যানেজমেন্টের জানা নেই।  বলতেই হয় যে, ‘দাদা, আমাদের টি-টোয়েন্টিটা ঠিক আসে না।

সাম্প্রতিক অবস্থাটা আরও করুণ। সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাজে পারফরম্যান্স দিয়ে সেই করুণ অধ্যায়ের সূচনা। অনেকেই আর এই তারুণ্য নির্ভর ফরম্যাটটাতে ‘ফিট’ হচ্ছেন না। টি-টোয়েন্টির মেজাজটা খুবই দুর্বোধ্য হয়ে উঠছে।

কখনো এখানে সিনিয়রদের বাদ দিয়ে দল করা হয়। আবার একটু এদিক সেদিক হলেই সবাইকে আবারও ফিরিয়ে আনা হয়। ফলে, কোনো উইনিং কম্বিনেশন ঠিক গড়ে উঠছে না বাংলাদেশের।

আর এই এশিয়া কাপের আগে বড় সমস্যা হয়ে হাজির হয়ে ইনজুরি। ইয়াসির আলী রাব্বি, লিটন দাস, নুরুল হাসান সোহান ও হাসান মাহমুদ – একাদশে যে চারজনের জায়গা অবধারিত থাকার কথা তাঁরা যেতেই পারেননি আরব আমিরাতে।

এত নেই নেইয়ের ভিড়েও তবুও স্বপ্ন দেখতে হয়। আর সেই স্বপ্ন দেখার একমাত্র কারণ ওই একজন – সাকিব। লঙ্কান অধিনায়ক বলেই দিলেন, সাকিব ছাড়া আর কোনো বিশ্বমানের বোলার নেই বাংলাদেশে। তিনি আদৌ খুব ভুল বলেছেন কি? আরো গোটা কয়েক সাকিব থাকলে কি আর টি-টোয়েন্টিতে এমন ভরাডুবি হয়?

তাই, এটা অন্তত বলা যায় এই মুহূর্তে সাকিবের চেয়ে ‘বেটার’ কোন অপশন এই দায়িত্বের জন্য হতেই পারে না। তাছাড়া অধিনায়ক সাকিব নিজেও দারুণ আত্মবিশ্বাসী আর অভিজ্ঞ। সাকিব এখন পর্যন্ত ২১ টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।

তাঁর মধ্যে আটটি ম্যাচ জিতেছে দল এবং অন্য ১৪ টি ম্যাচ হেরেছে। বাকি একটি ম্যাচ বাতিল হয়েছিল। অর্থাৎ টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে অধিনায়ক সাকিবের সাফল্যের হার ৩৩.৩৩ শতাংশ। অধিনায়ক হিসেবে সাকিবের টি-টোয়েন্টি জয়ের অংকটা এই এশিয়া কাপেই যদি দুই অংকে পৌঁছাতে পারে, তাহলে এই যাত্রাটা তাঁর সফলই বলা যাবে।

আবারও চৌকশ অধিনায়কের ভেলায় ভেসে পাল্টে যাক বাংলাদেশ দল, কেটে যাক টি-টোয়েন্টির আঁধার, অন্তত অধিনায়ক যে দ্য গ্রেট সাকিব আল হাসান সেটা বোঝা যাক – এই সামান্যই তো প্রত্যাশা!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link