অভিষেক ম্যাচ, আমির জ্যাঙ্গোর ওপর তাই আলাদা নজর রেখেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ঘরোয়া ক্রিকেটে তিনি নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ দিলেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সম্পূর্ণ ভিন্ন, সেজন্যই তিনি একা ম্যাচ জিতিয়ে দিবেন এমন প্রত্যাশা নিয়ে ছিল না কেউই।
কিন্তু সেটাই হয়েছে, যা কেউ দূরতম কল্পনাতেও ভাবতে পারেনি সেটাই হয়েছে। অভিষিক্ত এই ব্যাটার একক প্রচেষ্টায় লিখে দিয়েছেন ম্যাচের ভাগ্য। বলতে গেলে, তাঁর একজনের ওপর ভর করেই বাংলাদেশকে হোয়াইট ওয়াশ করেছে স্বাগতিকরা।
শেরফেন রাদারফোর্ড যখন আউট হয়েছিলেন তখন ক্যারিবিয়ানদের দলীয় সংগ্রহ একশও হয়নি। ৩২২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৮৬ রানের চার উইকেট হারিয়ে ফেলে তাঁরা। জয়ের স্বপ্ন স্বাভাবিকভাবেই ধীরে ধীরে দূরে সরে যাচ্ছিলো। ঠিক সেসময় দৃশ্যপটে হাজির তরুণ আমির।
ইনফর্ম কেসি কার্টির সঙ্গে ১৩২ রানের জুটি গড়ার মধ্য দিয়ে দলকে লড়াইয়ে ফেরানোর ইঙ্গিত দেন তিনি। তবে মূল কাজটা তিনি করেছেন ষষ্ঠ উইকেটের পতনের পর, স্বীকৃত কোন ব্যাটার যখন ছিল না তখন গুদাকেশ মতিকে নিয়েই বন্দরে নৌকা ভেড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যান তিনি।
তাঁদের অপরাজিত ৯১ রানের জুটিতেই শেষপর্যন্ত জয় পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ব্যক্তিগত ১০৪ রান করে মাঠ ছাড়েন জ্যাঙ্গো – অবিশ্বাস্য একটা জয় এনে দেয়ার পাশাপাশি ওয়ানডে অভিষেকে সেঞ্চুরি করার বিরল স্বাদ পান তিনি।
রান কিংবা সংখ্যার আলোচনা পাশে সরিয়ে রাখি; প্রশংসার জন্য এই ক্যারিবীয় তরুণের শরীরী ভাষা-ই যথেষ্ট। জাতীয় দলের হয়ে জীবনের প্রথম ম্যাচ অথচ চোখেমুখে এতটুকু চাপ নেই, দল খাদের কিনারায় তবু তিনি নির্বিকার – মনে হয় যেন তাঁর জানা ছিল এমনটাই হবে, আর তিনি নায়ক রূপে আবির্ভূত হবেন।
জীবন পেয়ে কাজে লাগানো, দায়িত্বশীল ব্যাটিং, গেমসেন্স – এই উদীয়মান তারকার মাঝে বড় কিছুর লক্ষণ ইতোমধ্যে দেখা যাচ্ছে। তবে বড় কিছু হওয়ার পথে তাঁকে নিরলস সাধনা করে যেতে হবে।